নারীদের জন্য পর্দা সহ ৪ টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা সম্পর্কে বিস্তারিত

চেহারা সতর কি না এ ব্যাপারে যদিও আলেমগনের মতবিরোধ রয়েছে কিন্তু সাবাই এ ব্যাপারে একমত যে চেহারা প্রকাশ করার কারনে ‍যদি কোন ধরনের ফিতনা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে তা প্রকাশ করা জায়েজ না । নারীদের জন্য পর্দা সহ ৪ টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা রয়েছে।এছারা ও ইসলামে পর্দার বিধান ও নারীদের কন্ঠের পর্দার কথা বলা হয়েছে । সতর ও পর্দার বিধান এক না । বরং নারিদের জন্য সতর ও পর্দার দুটি ভিন্ন ভিন্ন বিধান রয়েছে । এর আলোকে বলা যায় চেহারা সতরের অংশ নয় ।
নারীদের জন্য পর্দাসহ ৪ টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

সালাত ও ইহরামের অবস্থায় এগুলো খোলা রাখা যায় । এবং বিয়ের প্রস্তাব প্রদান করার জন্য তা দেখারঅনুমতি রয়েছে । তবে বাইরে যেতে হলে চেহারা ভালো ভাবে কাপর দ্বারা আবৃত করে নিতে হবে। নারীদের জন্য পর্দা সহ ৪ টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জানার জন্য আরর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনরোধ রইলো।

ভৃমিকা

নারীদের জন্য প্রয়োজন প্রেক্ষিতে পর্দা করে ঘর থেকে বের হওয়ার অনুমতি রয়েছে । তবে আপন গৃহে অবস্থানই তাদের জন্য উত্তম । আর সৌন্দর্য প্রর্দশনের জন্য বের হওয়া নিষিদ্ধ। নারিদের উদ্দেশ্য বলা হচ্ছে যে ,কোন কোন কারনে নারিদের পর্দা করতে হবে তা নিচে আলোচনা করা হলো ।

নারীদের জন্য পর্দাসহ ৪ টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা 

নারীদের জন্য পর্দাসহ ৪ টি গুরুত্ব পূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে । যথাঃ
  • সাজসজ্জা করে গৃহের বইরে যাওয়া নিষিদ্ধ
  • সালাত কায়েম করা
  • যাকাত আদায় করা
  • সকল বিষয়ে আল্লহ ও রসুলের অনুগত্য করা

চিকিৎসার প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছে চেহারা দেখানো যাবে কি না ?

মহিলাদের উচিত, প্রয়েজনীয় চিকিৎসার জন্য মহিলা ডাক্তার পাওয়া গেলে পুরুষ ডাক্তারের কাছে না গিয়ে মহিলা ডাক্তারের কাছে যাওয়া । যদি মহিলা ডাক্তার পাওয়া না যায় তাহলে পুরুষ ডাক্তারের চিকিৎসা গ্রহন করতে কোন অসুবিধা নেই । তার সামনে চিকিৎসার প্রয়োজন মত নিজের চেহারা এবং অন্য দেহাঙ্গ প্রকাশ করতে কোন দোষ নেই । 
মহিলারা পুরুষ ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সময় স্বামী কিংবা কোন মাহারাম পুরুষকে সাথে নিয়ে যাবে। যাতে ডাক্তারের সাথে তাদের কে একান্তে সাক্ষাৎ করতে না হয় । রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, কোন পুরুষ যেন কোন মহিলার সাথে একাকিত্বে অবস্থান না করে ।

হাতের তালু ঢেকে রাখতে হবে কি না ?

পরপুরুষের সামনে মহিলাদের চেহারার মতো হাতের তালু দুটি ও ঢেকে রাখতে হবে। এগুলো সাধারনত প্রকাশ করা জায়েজ না । তবে লেনদেন ও কাজ কারবারের জন্য প্রয়োজনে এগুলো প্রকাশ করতে কোন দোষ নেই । ‍যদি এতে কোন ধরনের ফিতনার আশঙ্কা না থাকে এবং তাতে কোন ধরনের সাজ সজ্জা না থাকে ।রসুলুল্লাহ(সাঃ) এর আমলে মহিলারা সাধারনত হাতের তালু দুটিও পরপুরুষ থেকে ঢেকে রাখতেন । 
রসুলুল্লাহ(সাঃ) বলেণ, ইহরাম অবস্থাই মহিলারা যেন মুখে নিকাব এবং হাতে দস্তানা পরিধান না করে ।তবে পর্দর জন্য হাত মোজা বা পা মোজা বাধ্যতামুলক না ।এই কথার মধ্যে আলেমদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে ।কিছু সংখ্যক ওলামায়ে কেরাম বলেছেন যে, হাত  এবং পা মহিলাদের সৌন্দযের মধ্যে অন্তভুক্ত ,সুতরাং পা এবং হাতের তালু ঢেকে রাখাই ভালো ।  

সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ভ্রু তোলা যাবে কি না ?

ভ্রুরুর চুল উপরানো , মুন্ডানো বা ছাটিয়ে বিশেষ আকৃতির ভ্রু নির্মাণ করা হারাম ।রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন যে মহিলা ভ্রু উপরিয়ে ফেলে এবং উপরাতে সহায়তা করে তাদের প্রতি লানত করেছেনে। কারন মহান আল্লাহ যাকে যেভাবে সৃষ্টি করেছেন , তাই হলো তার সৌন্দর্য । তাকে তাকে পরিবর্তন করা সৃষ্টির পরিবর্তন করা নামান্তর। আর সৃষ্টি তে পরিবর্তন করা জায়েজ নেই ।
ইবনে মাস‘উদ (রা) থেকে বর্ণিত , রাসুল (সা) বলেন , যে সব মহিলা উল্কি আকে এবং আকে দেয় , ভ্রু উৎপাটন করে ও উৎপাটন করতে দেয় এবং সৌন্দযের জন্য দাত গুলোকে সোজা ও পাতলা করে আর এভাবেই আল্লার সৃুুষ্টি কর্মকে পরিবর্তন করে তাদের প্রতি আল্লাহ লানত করেছেন ।স্বামীরা চাইলেও কপালের চুল বা ভ্রু উপরানো যাবে না । এতে আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন ঘটে । সৌন্দর্যবৃদ্ধির জন্য ভ্রু তোলা বা স্বামীর জন্য ভ্রু তোলা যাবে না । 

কৃত্রিম উপায়ে চেহারা ফর্সা করা যাবে কি না ?

স্বামীর উদ্দেশে নারীর সৌন্দর্য চর্চা করা পণ্যের কাজ। এতে পারস্পারিক ভালোবাসা ও আর্কষন বারে । তাই যে সব সৌন্দর্য উপকরন নারিদের চেহারা সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং তাদের চেহারার কোন ক্ষতি সাধন করে না এবং তাতে যদি চেহারার আসল রুপ চাপা না পরে , তা ব্যাবহার করতে কোন অসুবিধা নেই । 
অপর পক্ষে যে সব সৌন্দর্য উপকরন চেহারার ক্ষতি সাধন করে এবং চেহারার আসল রুপ চাপা পরে যায় ,তা ব্যাবহার করা উচিত নয় ।যে সব চেহারা কৃত্রিমি উপায়ে লাল ও ফর্সা করে এবং যারা এ কাজে সহায়তা করে ,রাসুলুল্লাহ( সা) তাদের প্রতি লা‘নত করেছেন 

ইসলামে পর্দার বিধান ও নারিদের কন্ঠের পর্দা

কুরআন ও সুন্নহ অনুসরন করলে জানা যায় যে, হিজাবের বিধান অনুসরন করে প্রয়োজনে বাইরে গিয়ে নারিদের কাজ করার অনুমতি ইসলামে রয়েছে । মুসলমান নারিদের উপর পর্দা ফরজ করা হয়েছে । এতে নারিদের নিরাপত্তা হয় এ বিষয়ে পবিত্র কোরআন এ বলা হয়েছে । মহিলাদের শরীর ,ত্বক ও রূপকে গোপন রাখতে পর্দা করা অবশ্যই দরকার । 
যে নারি পর্দা পালন করে সমাজে চলাফেরা করে সে নারিকে পর্দাশিল নারি বলা হয় ।বাইরে যেতে হলে অবশ্যই চেহারা ঢেকে পর্দার সাথে বের হতে হবে ।আল্লাহতা‘আলা বলেন, তোমরা কারো নিকট কিছু চাইলৈ পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রার কারন ।
নারীদের কন্ঠের পর্দা আছে । কোন বিশেষ দরকার হলে নারীরা পর্দর আড়াল থেকে পুরুষের সাথে কথা বলতে পারবেন । এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা কোরআনে হুকুম দিয়েছেন । কোরআনে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে যদি কথা বলো আর্কষণহীন কাটাকাটা ভাষায় কথা বলো । নরম বা ললিত ভাষায় কথা বলো না । 
আয়েশা (রা) এর নিকট মাসায়ালা বা হাদিসের প্রয়োজনে অন্যান্য সাহাবীগন আসলে , তিনি মুখের উপর হাত রেখে কন্ঠ বিকৃতি করে পর্দার আড়াল থেকে কথা বলতেন যেন কারো অন্তর ব্যাধি গ্রস্ত নাহয় ।এমনকি বাসায় সালাত আদায়ের সময় যদি পাশে গ্রামের পরপুরুষ থাকলে উচ্চস্বরে কোরান তেলওয়াত আথবা সালাত আদায় করা যাবে না । মহিলাদের গান-গজল শোনা এবং বলা সর্বাপেক্ষা হারাম কাজ ।

মেয়েদের জন্য সুগন্ধি ও সেন্ট ব্যাবহার করা যাবে কি না ?

সুগন্ধি ব্যাবহার করে মেয়েদের বাইরে বের হওয়া হারাম ।রাসুল (সা) নারীকে সুগন্ধি ব্যাবহার করে বাইরে বের হতে নিষেধ করেছেন । তবে স্বামীর উদ্দেশে এসব ব্যাবহার করা যাবে । বরং মুস্তাহাব। আর এক হাদিসে এসেছে মেয়েদের জন্য সুগন্ধি ও সেন্ট ব্যাবহার করা যাবে । তবে সেই সেন্ট বা পারফিউমে নাপাক পানিয় বস্তু  মিশ্রিত যেন না থাকে । 

কোন মাহরামের কাছে নারীদের পর্দা করা লাগবে না

ইসলামে নারীদের কে ‘আওরত ’বলা হয়েছে । ‘আওরত’ শব্দের অর্থ গুপ্ত বা আবৃত ।সূরাহ আন -নুরের ৩১ তম আয়াতে বার শ্রেণীর ব্যক্তিদের মাঝে পর্দা ওয়াজিব না হওয়ার বিষয়ে ঘোষনা দিয়ে আল্লাহ বলেন ,তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা,শ্বশুর, নিজেদের ছেলে , স্বামীর ছেলে, ভাই এবং ভাইয়ের ছেলে , বোনের ছেলে ,আপন নারিগণ ( পরিচিত মুসলিম নারি) 
স্বীয় মালিকানাধীন দাসি , যৌনকামনা মুক্ত অধিন পুরুষ , ব্যাতিত কারো কাছে যেন নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তবে উপরের উল্লেখিত মাহরামের কাছে নারীদের পর্দা করা লাগবে না । আল্লাহ তাআলা মুমিন নারীদের কে আদেশ করেছেন, যখন তারা কোন প্রয়োজনে ঘরের  বাইরে যাবে তখন তারা মাথার উপর থেকে উড়না /চাদর টেনে মুখমন্ডল আবৃত করে ।  

শেষ কথা

এই গুন গুলো যারা অর্জন করতে সক্ষম হবেন তাদের কে আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দিবেন এবং তাদের জন্য বিরাট প্রতিদান তৈরী করে রেখেছেন । আমাদের প্রত্যেক মুসলিম নারিদেরকে েএই গুন গুলো অর্জনের চেষ্টা করতে হবে । মহান আল্লাহ আমাদেরকে এই গুনগুলো অর্জনের তৌফিক দান করুন- আমীন।আমার এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে ‍থাকে তাহলে অন্যদের কে সেয়ার করে দেন সকলেই পড়ে উপকৃত হবে ইনশআল্লাহ ।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *