সকালে খালি পেটে আপেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
নিয়মিত ফল খেলে বহুদিন বেচে থাকা যায় ও অকাল মৃত্যু ঘটে না। মুনি ঋষিরা ফল খেয়েই দীর্ঘজাীবন লাভ করতেন। তবে এলো পাথারি ভাবে ফল খেলে পরিনাম ভালো হবে না বরঞ্চ তা থেকে অন্য রোগের উৎপত্তি হতে পারে। যে কোন লোকের শরীরের প্রয়োজন মতো ফল খাওয়া দরকার। আমার এই পোষ্টটি তে সকালে খালি পেটে আপেল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হলো।
আমরা সচরাচর আপেল খেলেও কিন্তু আমরা আপেলের যে গুন আছে তা আমরা অনেকেই জানি না।আপনার সাধ্য অনুযায়ি প্রতিদিন একটা করে আপেল খেলে আপনি বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
ভৃমিকা
এই ফলটা বিদেশের মাটিতে উৎপাদিত হলেও আমাদের বাংলাদেশে সারা বছর পাওয়া যায়।বিশেষ পুষ্টিতে ভরা এই ফল যা আমাদের সাধ্যের মধ্যে থাকে।আপনার সাধ্য অনুযায়ি প্রত্যেকদিন একটা করে আপেল খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এতে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।এই ফলটির মধ্যে প্রচুর পরিমানে পানিও রয়েছে।ওজন কমাতে চাইলে প্রতিদিন একটি করে আপেল খেতে পারেন। তবে জানা যাক সকালে খালি পেটে আপেল খাওয়ার উপকারিতা।
জ্বর হলে কোন ফল খাওয়া উচিত
জীবনে জ্বর হয়নি এমন মানুষ তো খুবই কম আছেন। জ্বরের সময় ফলের রস বিশেষ করে ডালিম বা কমলালেবুর রস খাওয়া ভালো। এসব রস শরীর ঠান্ডা করে এবং খেতে ও সুস্বাদু। যখন জ্বরে গা পুরে যায়এবং জিহ্বা শুকিয়ে যায় তখন প্রচুর পরিমানে রস খাওয়ানো উচিত। পিত্তজ্বর ও ইনফ্লুয়েন্জা হলে সাধারনত খুব তেষ্টা বেড়ে যায়। তখন কিছু খেতে ইচ্ছে করে না - মুখ তেতো লাগে। সেই সময় পানি খাওয়ার বদলে কমলালেবুর রস খাওয়াতে পারলে শরীর তাড়াতাড়ি চাঙ্গা হয়ে উঠবে।
জ্বরে আপেল খাওয়াবেন
জ্বরের সময় আপেল খাওয়ালে তাপ ( টেম্পারেচার) কমে যাবে। তেড়ে জ্বর আসছে বলে মনে হলে রোগীর যদি তখন খাওয়ার মতো অবস্থা থাকে তাহলে একটা বা দুটো আপেল খেলে বেশী জ্বর এড়ানো যাবে।তবে লক্ষ রাখতে হবে এতে যেন রোগীর কোষ্ঠকাঠিন্য না হয়। জ্বরের সময় যদি খুব তেষ্টা পায় ও গলা শুকিয়ে যায় তাহলে তাজা আপেলের রস (সাত/আট চা-চামুচ) পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ালে উপকার হবে। আপেলের টুকরো সারারাত পানিতে ভিজেয়ে রাখলে পরের দিন তার রস বের করে নিয়ে সমপরিমান পানির সঙ্গে মিশিয়ে রোগীকে খাওয়ালে রোগীর প্রচন্ড তেষ্টার ভাব কমবে।
জ্বরে পাতিলেবু খাওয়াবেন
গরম লেগে বা পেট গরম হয়ে জ্বর হলে এবং জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে পায়খানা ও বমি হলে পাতিলেবু খুব কাজ করে। খুব তেষ্টা পাওয়ার জন্য যে কষ্ট হয় সেটারও উপশম হয়। একটা গোটা বা আধাখানা পাতিলেবুর রস টিপে বের করে গ্লাসে চিনির সঙ্গে মিশিয়ে প্রয়োজন মতো পানি দিয়ে রোগীকে পান করতে দিন। এতে অস্বস্তি কমবে এবং পায়খানা ও বমি বন্ধ হয়ে যাবে।
কাগজি লেবুও জ্বরে খুব নির্ভর যোগ্য। নিয়মিত খেলে ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে। এক্ষেত্রে সম্পর্ন পাকা হলুদ রঙ্গের কাগজি লেবুর কথা বলা হচ্ছে কাঁচা সবুজ রঙ্গের নয়। সদ্য গাছ থেকে পরা সবুজ রঙ্গের লেবু খেলে উল্টো ফল হবে অর্থাৎ জ্বর হতে পারে।
বছরে যে কোন সময়ে জ্বরের জন্য লেবুর পানীয় বা লেমোনেড
পাঁচ ছয়টা পাতিলেবুর খোসা ছারিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে নিন। এবারে রস বের করে নিয়ে একটা চিনামাটির পাত্রে রাখুন। তিনশো গ্রাম( প্রায় দু কাপ মতো ) ফুটন্ত পানি রসে ঢালুন। ঠান্ডা হলে প্রয়োজন মতো চিনি মিশিয়ে রোগীকে বারে বারে একটু একটু করে খেতে দিবেন। এই পানীয় টি জ্বরের পক্ষে উপকারি। এবং খেতে ও সুস্বাদু। সব রকম জ্বর এবং অন্যাণ্য উপসর্গ যেমন বমি ভাব, তেষ্টা , অস্বস্তি সবই কমবে।
সকালে খালি পেটে আপেল খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে আপেল খেলে বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই ফলটি তে রয়েছে প্রটিন, আয়রন,ক্যালসিয়াম, পটসিয়াম,ফাইবার জাতীয় পুষ্টি উপাদান।তাছারা আপনার সাধ্য অনুযায়ি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটি করে আপেল খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।এবং নিয়মিত ভাবে আপেল খেলে
শরীরের ওজন ও কমে যায়।
- পেটের কোষ্টকাঠিন্য ও বদহজম থেকে রক্ষা পাওয়া যায়
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে
- হার্টকে সুস্থ্য রাখে
- হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে
- রক্ত শুন্যতা দুর করে
- শরীরের ক্লান্তি দুর করে
- শরীরে ক্যালসিয়াম বাড়াতে সাহায্য করেে
- এছারাও হারের গিটের ব্যাথা কমায়
তাছারাও আপেল খাওয়ার পর যদি ডায়রিয়া, শরীরের ছোট ছোট ফুসকুরি দেখা দেয় তাহলে আপেল খাওয়ার পরিমান কমিয়ে দিতে হবে। অতিরোক্ত যে কোন খাবারই শরীরের জন্য ভালো না। নিয়ম মতো খেতে হবে। আপনার শরীরের চাহিদা অনুযায়ী।
ম্যালেরিয়া জ্বরে লেবু খাওয়ার উপকারিতা
ম্যালেরিয়া জ্বরে সাধারনত তিনটি ধাপ দেখা যায়। প্রথমে জ্বর আসে খুব শীত করে। গরম চাদর জরাতে হয়। দ্বিতীয় অবস্থায় গা পুরে যাওয়ার মতো তাপমাত্রা উঠে যায়। তৃতিয় অবস্থায় রোগী ঘামতে থাকে এবং ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে তাপ কমে। সাধারনত কুইনাইনের চিকিৎসা সকলের জানা আছে। কিন্তু ফল ও খুব রোগ সােরাতি পারে।
একটি পাতিলেবু আধাখানা করে কেটে তার উপরে গুরো করা ফিটকারি বা চুন ছিটিয়ে আগুনে গরম করুন। তার পর রস টা চুসে খান। সঙ্গে একটু গরম পানি খেতে হবে। এবং গায়ে গরম জামা দিয়ে রাখতে হবে। জ্বর আসবার তিন ঘন্টা আগে এই লেবুর চিকিৎসা চালিয়ে যাবেন। ম্যালেরিয়ার জ্বর আসবার একটা নির্দিষ্ট সময় আছে - সেই সময় অনুসারে এই লেবুর চিকিৎসা করবেন। এতে বমি হওয়া জ্বর আসা আস্তে আস্তে বন্ধ হবে।
ম্যালেরিয়াতে পেঁপে, দুধ. গোলমরিচ এর চিকিৎসা
ম্যালেরিয়া হলে অনেক সময় মুখে স্বাদ থাকে না মুখ তেতো হয়ে যায় এবং রোগী প্রায় না খেয়েই থাকে। পাকস্থলিতে টাক্রিক অ্যাসিড জমে বমি হয়। সে রকম অবস্থায় পাকা পেপে যতটা খেতে পারবে ততটা খাওয়াবেন। এর সঙ্গে যদি দুধ ও খেতে পারে তাহলে আরো ভালো হয়। তিন চার দিন ধরে পর পর রোগীকে এভাবে রোগীকে পাকা পেঁপে ও দুধ খাওয়ালে ম্যালেরিয়া সেরে যেতে পারে ।
গুরো কালো গোলমরিচ, লবণ, ও শুকনো খোলায় সেকে নেওয়া ফিটকারি প্রতিটি একগ্রাম ( এক চিমটি) করে নিয়ে একটা লেবু কেটে আধখানা করে তার উপর ছরিয়ে দেন। এই টুকরো রোগীকে আধা ঘন্টা চুষতে দিন। ম্যালেরিয়া শ্রেণীর সব জ্বরই এতে কমে।
গেটে বাতের ঘরোয়া চিকিৎসা
কিছু লোকের ধারনা আছে যে টক ফল বাতের পক্ষে খুব ক্ষতিকরাক। কিন্তু জেনে রাখা ভালো যে টক রস গাঁটে গাঁটে ব্যাথার বাতে খুবই উপকারি। যে কোন টক ফল দিয়ে গেটে বাতের ব্যাথার ঘরোয়া চিকিৎসা করা যায়। তবে পাতি লেবুর চিকিৎসায় বেশী উপকার পাওয়া যাবে। পাতি লেবু তো সহজেই পাওয়া যায়। প্রথম দিন যতটা পরিমান পারেন পানি খান।
দ্বীতীয় দিনে একটি পাতিলেবুর রসে সমপরিমান পানি মিশিয়ে সেই পানিটা খাবেন। দিনে চার বার এই ভাবে পাতিলেবুর রস খান। তৃতীয় দিনেন পাঁচবার এবং চতুর্থ দিনে ছয়বার এরকম ভাবে বারো দিন পর্যন্ত যিনি যতটা সহ্য করতে পারবেন খাবেন। প্রতিদিনই একটি করে লেবুর সংখ্যা বাড়াবেন। ১৩ দিন থেকে একটা একটা করে লেবুর সংখ্যা কমিয়ে এনে দিনে তিনটে পর্যন্ত পাতিলেবু খাওয়ার অভ্যাস রাখুন।
মনে রাখবেন পাতিলেবুর রসে চিনি মেশানো চলবে না। এতে যাদের মেদ বেশী তাদের মেদও কমবে। সঙ্গে হালকা খাবারএবং অন্যান্য ফলের মধ্যে আঙ্গুর, কমলালেবু ও আনারস খাবেন। প্রতিদিন তিনটি পাতিলেবুর রসের সঙ্গে কিছু ফল খাওয়ার অভ্যাস করুন। এবং ফলের পরিমান ক্রমশই বাড়াতে থাকবেন। দুধের সঙ্গে কিসমিস মিশিয়ে খেলে ও বাতের অসুখ কমে।
বাতের অসুখে ভুল ঔষুধ খেলে অনেক সময় বিষক্রিয়া পর্যন্ত হয়ে যায়। এবং জ্বর হতে থাকে। এইরকম ক্ষেত্রে এই চিকিৎসা টা চেষ্টা করে দেখবেন এবং ১৫ দিনের মধ্যেই আরোগ্য লাভ করবেন।
পেট পরিষ্কারে পাতিলেবু খাওয়ার পদ্ধতি
দুটি হলুদ রঙের অর্থাৎ পাকা পাতিলেবু চার টুকরো করে কাটুন। প্রায় এক লিটার মতো টাটকা গরুর দুধ চারটে কাপে ভাগ করে রাখবেন। সকাল বেলার মধ্যেই কিছু সময় অন্তর এক কাপ করে দুধ খেতে হবে। প্রতি কাপ দুধে এক টুকরো করে কাটা লেবুর টুকরো গিলে নিবেন এবং ছানা কেটে যাওয়ার আগে তা পান করে নিবেন। এর ফলে প্রতিদিন পেট পরিষ্কার হয়ে যাবে। ১৫ দিন এই দুধ ও পাতিলেবুর চিকিৎসা পদ্ধতি চালিয়ে যান।
টিবি রোগ হলে করনীয়
টিবি হলো ক্ষয় রোগ। শরীরের নানান অংশেই টিবির আক্রমন হয়। চিকিৎসায় দামি দমি খাবার যেমন মাছ মাংস দুধ ঘি ডাক্তারেরা ঔষুধের সঙ্গে খেতে বলেন। কিন্তু যাদের অতটা খরচ করবার ক্ষমতা নেই বা যারা নিরামিষাশী তাদের জন্যে বিশেষ করে বলা যায় ফল খেয়ে ও এই রোগে আরোগ্য লাভ করা যেতে পারে। সঙ্গে অবশ্য দুধ খেতে হবে। টিবি রোগে আতা ফল খুব উপকারি। অবশ্য হাকিমি বা কবিরাজি নানাবিধ ভষ্ম ও লবণ সহযোগে খেলে আরও বেশী ভাল ফলা ফল পাওয়া যাবে।
লেখকের মন্তব্য
বিশেষ করে আমাদের কে সকাল বেলা অথবা দুপুরে খাবারের আগে আপেল খেলে শরীরের জন্য ভালো উপকার হয়। যা শরীর ভালো রাখাতে, পুষ্টি সরবরাহে ,ত্বক ভালো রাখতে আপেল বিশেষ ভৃমিকা পালন করে।রাতে শোয়ার আগে বা বিকেল বেলা আপেল খেলে হজম করতে ব্যাঘাত ঘটায়। যার ফলে পেটে প্রচুর পরিমানে গ্যাসের সৃষ্টি হয়।
ফলের পুষ্টিগুণ আমরা অনেকেই বুঝি না যার ফলে কোন ফল দিয়ে কোন অসুখ সারে তা আমরা বুঝতে পারি না। আমার এই পোষ্টটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে আপনাদের পরিচিতদের মধ্যে সেয়ার করে দেন । কারন তারাও পড়ে উপকৃত হবে।
msta2z.comব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url