গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ - গর্ভবতী মায়ের খাবার | Msta2z

গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ - গর্ভবতী মায়ের খাবার

গর্ভাবস্থায় শারিরিক কোন সমস্যা না থাকলে কাজ করতে পারবে গর্ভবতী মেয়েরা। শরীর নিয়ে নরাচরা বা কাজকর্ম করলে বাচ্চা প্রসব করতে কোন সমস্যা হয় না।গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ তা আমরা এই পোষ্টে জানব। এসময় মেয়েদের শরীর এমনিতেই ভারী হয়ে যায়। তেমন কোন ভারী কাজ করতে ইচ্ছে করে না।
গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ জেনে নিন

ভারী কাজ করলে তো এমনিতেই সমস্যা হয়ে যাবে। এই জন্য এমন কিছু কিছু কাজ আছে যা গর্ভাবস্থায় মেয়েদের করা উচিত না। সাবধানে এবং সর্তক থাকাটাই ভালো হবে।

ভৃমিকা

গর্ভাস্থায় মেয়েদের জীবনের একটি বিশেষ সময়। এই সময় শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তন ঘটে তাদের জীবনে। গর্ভাবস্থায় শরীরের অনেক ওজন বেড়ে যায় এবং মেজাজ খিটখিটে থাকে। তাছারাও শরীরে বিভিন্ন সমস্যা লেগেই থাকে। বড় কোন সমস্যা না হওয়ার জন্য কোন ভারী কাজ তো করাই যাবে না। তবে ডাক্তারেরা বলে, হালকা পাতলা কাজ করতে পারে।

গর্ভবতী মায়ের খাবার

গর্ভবতী মায়ের পুষ্টির উপরে নির্ভর করে গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি বিকাশ ও ভবিষ্যৎ জীবনে ভালো থাকা। তাই সুষম সহজপাচ্য ও সঠিক পরিমাণ আহার প্রয়োজন। গর্ভ অবস্থায় সুষম আহার বলতে বুঝায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বেশি পরিমাণ শর্করা ও কম পরিমাণ চর্বি জাতীয় খাদ্যের সঙ্গে উপযুক্ত পরিমান লৌহ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, ও অন্যান্য পদার্থ যথা ,জিংক, ফলিক, এসিড, পটসিয়াম, সেলিনিয়াম, প্রভীতি।

সম্ভব হলে দিনে এক লিটার দুধ একবার, দুই টুকরা মাছ বা মাংস একটি ডিম একটি বা দুইটি ঋতুক্যালিম ফল, টাটকা শাক-সবজি এবং ভাত ও ডাল পেট ভরে খাওয়া উচিত। নিরামিষ ভোজীদের দুধের পরিমাণ বাড়াতে হবে। তা ছাড়াও অঙ্কিত ছোলা ও খাদ্য তালিকায় যোগ করা উচিত। প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ গ্লাস ফুটানো পানি ঠান্ডা করে খাওয়া প্রয়োজন।

গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ

আপনি কি জানেন গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ? গর্ভাবস্থায় বেশ কিছু কাজ রয়েছে যা করলে বাচ্চার সাথে ক্ষতি হতে পারে এমনকি বাচ্চা মৃত হয়ে জন্ম নিতে পারে তাই আমাদেরকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে এবং জানতে হবে যে গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধ আপনি যদি এ কাজগুলো না করেন তাহলে 

আশা করছি আপনার বাচ্চা সুস্থ হয়ে এই পৃথিবীতে জন্ম নিবেন প্রতিটি বাবা-মায়ের স্বপ্ন হলো নিজের সন্তানকে সুস্থ ভাবে পৃথিবীতে জন্ম দেওয়া। তবে অনেক সময় আমাদের ছোটখাটো কিছু ভুলের কারণে সন্তান প্রতিবন্ধী অথবা মৃত হয়ে পৃথিবীতে জন্ম নেয়। কোন কাজগুলো করলে সন্তান মৃত অথবা প্রতিবন্ধী হতে পারে? নিচে দেখে নিন।

যৌনমিলনঃ গর্ভের প্রথম তিনমাস এবং শেষ দেড় মাস যৌন মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে। এতে গর্ভপাত , অকাল প্রসব ও সংক্রামনের সম্ভবনা থাকে।

ধুমপান ও মদ্যপানঃ গর্ভাবস্থায় ধুমপান ও মদপান করা একেবারেই যাবে না। যার ফলে বিকলঙ্গ শিশু বা কম ওজনের শিশু জন্ম নিতে পারে।

ভ্রমনঃ ঝাকুনিযুক্ত ক্লান্তিকর ভ্রমন গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস ও শেষ দুই মাস না করাই ভালো। বাসের চেয়ে রেল ও বিমানে ঝুকি অনেক কম হয়।

দাঁত তোলাঃ গর্ভাবস্থায় দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরনের সম্ভবনা থাকে। তাই এসয় দাঁত না তোলায় ভালো।

অতিরোক্ত বিশ্রামঃ গর্ভাবস্থায় অতিরোক্ত বিশ্রাম নিয়া যাবে না। এতে বাচ্চা প্রসবের সময় সমস্যা হতে পারে।

জুতা নির্বচনঃ গর্ভবতী মেয়েদের সবসময় ফ্লাট (নিচু জুতা) জুতা পড়তে হবে। হাই হিল ত পড়াই যাবে না।

অসিদ্ধ খাবারঃ কাচা খাবার বা আধাসিদ্ধ খাবার কখনো ও খাবেন না। এতে হজমে সমস্যা হবে।

ক্ষতিকারক ঔষুধ বা অ্যান্টিবায়েটিক ঔষুধঃ কিছু ঔষুধ রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় খাওয়া ঠিক নয়। ঔষুধ খাওয়ার দরকার হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।

চা বা কফিঃ দিনে ১-২ দুই বার চা খেতে পারবেন।তবে কফি না খাওয়াই উচিত।

চেপে বসাঃ গর্ভকালীন সময়ে মেয়েদের চেপে বসা যাবেনা। এতে পেটে চাপ পরে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।

চিত হয়ে শোয়াঃ এ সময় চিত হয়ে শোয়া যাবে না। এতে বাচ্চা বুকের উপর উঠে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। এতে মারাত্বক ক্ষতি হয়।

তাছারও এমন কিছু খাবার আছে যা খাওয়ার পরে অতিরোক্ত গ্যাস সৃষ্টি করে। এমন গ্যাস জাতীয় খাবার বেশী খাওয়া যাবে না।

গর্ভাবস্থায় যে কাজ গুলো করতে হবে

কোষ্ঠ কাঠিন্যঃ গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্যর প্রবনতা থাকে। এর সমাধান কল্পে বেশি পরিমান শাকসবজি খাওয়া দরকার। তা ছারা ও শুকনো খেজুর ও বীট খাবার তালিকায় রাখা উচিত।

বিশ্রামঃ গর্ভাবস্থায় পরিমিত বিশ্রাম দরকার। দুপুরে দু ঘন্টা এবং রাতে ৮ ঘন্টা বিশ্রাম নেয়া উচিত। সবসময় বা পাশে কাত হয়ে শোয়া উচিত। এতে শিশুর বিকাশ স্বাভিক হয়।

কাজকর্মঃ স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা নেই । তবে ভারী কাজ কর্মকরা একে বারেই উচিত নয়।

গোসলঃ রোজ গোসল করে শরীর পরিষ্কার পরিচ্ছিন্ন রাখতে হবে। গোস করার সময় যেন পিছলে পরে না যায় সেদিকে সর্তক থাকতে হবে।

কাপড়ঃ গর্ভাবস্থায় ঢিলেঢালা কাপর পরা উচিত । বাংলাদেশের মতো গ্রীষ্মপ্রধান দেশে আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে সুতির কাপর চোপর পরা স্বস্থ্য সম্মত।

পুষ্টিকর খাবারঃ সব সময় মাথায় রাখতে হবে যে খাবার সঠিক টাইমে এবং পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।এতে বাচ্চার ওজন বৃদ্দিতে সহয়তা করবে এবং সুস্থ্য বাচ্চা জন্ম নিবে।

প্রিয় বন্ধুরা আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে গর্ভাবস্থায় যে কাজগুলো করলে কোন ক্ষতি নেই। উপরের এই কাজগুলো আপনারা গর্ভকালীন সময়ে নিশ্চিন্তাই করতে পারেন এবং ঘটনার সময় বেশি বেশি পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। আর নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য গোসল করতে হবে গোসল করা খুবই জরুরী এতে শরীর ময়লা আবর্জনা দূর হওয়ার পাশাপাশি শরীরের রোগবালাইও দূর হয়।

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে

সবসময় পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হয় এটি বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। গর্ভাবস্থায় এমন কিছু ফল রয়েছে যা বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরী যেমন কলা আপেল ডালিম। প্রত্যেকটা গর্ভাবতী মেয়েদের কে এ সময় স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। কিছু বার্তি পুষ্টি পুরণের জন্য ফল খাওয়া অবশ্যক। গর্ভাবস্থায় যে ফল গুলো খাওয়া যাবে তা নিচে দেওয়া হলো-
  • কলা
  • আপেল
  • কমলালেবু
  • ডালিম
  • নাশপাতি
  • আম
  • পেয়ারা
  • অ্যাভোক্যাডো

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না

আপনি কি জানেন গর্ব অবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবেনা আপনি যদি জেনে যান যে গর্ভ অবস্থায় কোন কোন ফল গুলো আপনার জন্য ক্ষতিকর তাহলে গর্ভকালীন সময়ে আপনার সন্তান পুষ্টিগুনে ভরপুর থাকবে। এমন কিছু ফল যা গর্ভকালীন সময়ে একে বারেই খাওয়া যাবে না। এ সময় এসব ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কি ফল খাওয়া যাবে না নিচে তা দেয়া হলো-
  • আনারস
  • আঙ্গুর
  • তরমুজ
  • হিমায়িত ফল
  • পেঁপে
  • তেতুল

গর্ভাবতী মায়েদের চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিচর্যা

গর্ভে সন্তান ধারনকারি মাকে গর্ভবতী বলা হয়। গর্ভাবস্থায় মায়েদের চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিচর্যায় পালনীয় বিষয় গুলো সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-
গর্ভাবস্থায় শুরুতে মাকে চিকিৎসক দিয়ে পরিক্ষা করানো ও তার পরামর্শ মতো চলা দরকার।world health organization ( WHO) অনুসারে গর্ভাবস্থায় কমপক্ষে ৪ টি ডাক্তারি ভিজিট জরুরি সেগুলো হলোঃ

০--১৬ সপ্তাহে ১ টি, ২৪--থেকে ২৮ সপ্তাহে ১টি, ৩২ সপ্তাহে ১টি, ৩৬ সপ্তাহে ১টি, এবং ৩৬ সপ্তাহের পর অর্থাৎ ৩৭ সপ্তাহ থেকে প্রসব না হওয়া পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার ডাক্তারি পরিক্ষা করানো উচিত। প্রথম পরিক্ষার সময় রক্ত এবং প্রসাব পরিক্ষা করতে হবে। এ সময় রক্তের গ্রুপ, যৌনরোগ, রক্তে শর্করার পরিমান, হিমোগ্লোবিন এর পরিমান, জন্ডিস, ইত্যাদি পরিক্ষা করাতে হবে।

লেখকের মতামত

গর্ভাবস্থায় কিছু নিয়ম মেনে চললে মা ও শিশু দুজনেই ভালো থাকবে। এসময় প্রথম তিনমাস এবং প্রসবের আগের দুই মাস খুব সর্তকতার সাতে চলাফেরা করতে হবে। শরীরের কোন রকমের সমস্যা দেখা না দিলে সাধারন ভাবে জীবন যাপন করতে পারে। কিন্তু এমন কিছু কাজ আছে যা কখনো ও করা উচিত না।

গর্ভকালীন সমিতি একটি নারীর জন্য সবচেয়ে বেশি স্পেশাল এবং সবচেয়ে বেশি আনন্দদায়ক এই সময় যদি নারীর বিভিন্ন হরমোনের পরিবর্তন হয় নারীর বিভিন্ন অসুবিধা হয় তবুও নারীরা এই সময়টিকে সবচেয়ে বেশি স্মরণীয় এবং স্মরণীয় করে রাখে। বিশেষ করে যদি প্রথম প্রথম কোন নারী মা হয় তাহলে তো কথাই আলাদা। এই পৃথিবীতে একজন সন্তানকে তার মায়ের তুলনায় 

কেঊ বেশি ভালবাসতে পারে না। কারণ একজন মা তার সন্তানকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে এবং যখন একটি সন্তান তার মায়ের শরীরে নয় মাস যাবত ধীরে ধীরে বড় হয়, তখন সেই সন্তানের প্রতি সেই মায়ের আল্লাহ তরফ থেকে ভালোবাসা জন্ম সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। এমনকি হাদিসে রয়েছে মায়ের তুলনায় একজন বাবা ও তার সন্তানকে এতটা ভালবাসতে পারে না।

এই জন্য গর্ভকালীন সময়টি সন্তানের আরো অতিরিক্ত যত্ন নিতে আপনাকে এই আর্টিকেলটি পড়তে হবে এবং জানতে হবে যে গর্ব অবস্থায় কি কি কাজ করেন আর গর্ভবতী মায়ের তালিকা গুলো কি যদি উপরের এই তালিকা অনুসারে আপনি খাবার গ্রহণ করেন তাহলে আশা করছি আপনার বাচ্চা সঠিকভাবে এই পৃথিবীর আলো দেখবে।

নিজের শরীরের ভালো মন্দ বোঝার চেষ্টা করে ৯ মাস সর্তকতার সাথে চলতে হবে। ত প্রিয় বন্ধুরা, আমার লেখা পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অন্যদের মধ্যে সেয়ার করবেন প্লিজ। কারন তারাও পড়ে হয়তো উপকৃত হবে।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

msta2z.comব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url