মেয়েদের তেঁতুল খেলে কি পিরিয়ড হয় বিস্তারিত জানুন
গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা নিষেধবাংলাদেশের নারীদের কাছে পিরিয়ডের সময় একটা ধারনা হলো যে, পিরিয়ডের সময় টক খেলে ব্লিডিং বেশী হয়। মেয়েদের তেতুল খেলে কি পিরিয়ড হয়,আসলেই কি তাই, উত্তর টা আমরা যে রকম ভাবছি আসলে সে রকমটা নয়। পিরিয়ডের সময় এমন কিছু খাবার খেলে ব্লিডিং বেশি হয়, আবার এমন কিছু খাবার আছে খেলে কিছুই হয় না। ত বন্ধুরা চুলুন জেনে নিই বিস্তারিত-
মেয়েদের মাসিক চলাকালীন সময় টক ফল খেলে যে রক্তপাত বেশী হয় এধারনা পুরোটা ভুল। তবে টক জাতীয় খাবারের সাথে আপনি যদি লবন জাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন তহলে আপনার সমস্যা হতে পারে।
ভৃমিকা
তেতুল ফল আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয় একটি ফল। বাংলাদেশের এমন কেউ নেই যে, তেতুল ফল টাকে চেনে না বা খাই নি। তবে মেয়েদের কাছে তেতুল খুবই পছন্দ। এই ফলে টক মিষ্টি স্বাদ ছারাও অনেক গুন ও আছে। এই তেতুল ফল পুষ্টিতে ভরপুর। প্রাচীনকাল থেকেই তেতুল তার ঔষুুুধি গুন কার্যকর করে আসছে।
তেতুল পাতার উপকারিতা
তেতুল ফল আমরা শুধু খাওয়াই শিখেছি কিন্তু এই তেতুল ফল থেকে কতগুলো উপকার পাওয়া যায় তা আমরা হয়তো অনেকেই জানি না। ত চুলন বন্ধুরা আজ আমরা জানব তেতুলের উপকারিতা সম্পর্কে।
- কচি তেতুলের পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি খেলে পেটের অসুখ সারে।
- কচি তেতুল পাতা বেটে পানিতে মিশিয়ে খেলে আমাশায়, পিত্তের জন্য যে জ্বর হয় সেই জ্বর ও যৌনব্যাধি সেরে যায়।
- তেতুল পাতার পুটলি বেধে চোখে ঝুলিয়ে দিতে থাকলে চোখ ওঠায় আরাম পাওয়া যায়।
- তেতুলের ১০/১২ টি বীজ পানিতে ভিজিয়ে উপরের খোসা ফেলে দিন। দুধে সাদা বীজের শাস গুলো বেটে নিন। প্রতিদিন সকালে এই শাস খেলে শরীর বলবান হবে।
- তেতুলের বীজের চুর্ণ ও হলুদ গুরো ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে পান করলে বসন্ত রোগ হয় না। অর্থাৎ এটা হাম- বসন্ত ও জলবসন্তের প্রতিষেধক।
তেতুলের উপকারিতা
- তেতুল শাস পানিতে ছেকে নিয়ে নুন মিশিয়ে পান করলে পায়খানা ক্লিয়ার হয়। অর্থাৎ পায়খানার বেগ বেড়ে যায়।
- তেঁতুল পানিতে গুলিয়ে ছেকে নিয়ে চিনি মিশিয়ে সরবত তৈরী করে খেলে গরম লাগার কষ্ট দুর হয়।
- পেটের হজমের সমস্যা দুর করেঃ তেতুল ফল টা বেশী খাওয়া টা ঠিক না তবে নিয়মিত দু- চার টুকরো করে খেলে কোন অসুবিধার কারন নেই। এতে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। কারন তেতুল ফাইবার সমৃদ্ধ ফল। আমাদের অন্তরের গতিবিধি সহজ করে। আগে থেকেই তেুতুল কোষ্ঠকাঠিন্যল ঔষুধ হিসাবে ব্যাবহত হয়ে আসছে।
- হার্টের সমস্যা দুর করেঃ তেতুল শরীরের রক্তচাপ নিয়ত্রন করে। এটি উচ্চ ফাইবার সর্মদ্ধ একটি ফল। শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল গুলো কমিয়ে দেয়। যার জন্য হার্টের সমস্যা হয় না।
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ তেতুলের রস আমাদের স্বাস্থ্যর জন্য টনিকের কাজ করে। সর্দি, কাশি, জ্বর, আমাশয়, যৌনরোগে আপনার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহয্য করে।
- ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইঃ তেতুলে রয়েছে সক্সলেট মিথেনলিক এক্সট্রাক্ট। যা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যতেষ্ট লড়াই করে এবং ক্যান্সারের কোষগুলো নির্মুল করে।
- চুলের জন্য তেতুলঃ চুলের যত্নের জন্য বিশেষ কার্যকরি। মাথার ত্বকে তেতুল রস লাগালে চুলকে মসৃন ও চুলের গোরা শক্তিশালী করে তোলে।
- চোখের ড্রপ হিসাবেঃ তেতুল চোখের ড্রপ তৈরীতে ব্যাবহার করা হয়। আগেকার দিনের মানুষ চোখের যে সমস্যা হতো তা সারাতে তেতুল ব্যাবহার করত।
- ত্বক উজ্জল এবং মসৃন করেঃ তেতুল এর সঠিক ব্যাবহার করলে ত্বক উজ্জল এবং মসৃন করে তোলে। এতে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি আছে। এইজন্য ত্বককে পুনরুজ্জীতিত করে তোলে।
- শরীরের ওজন কমায়ঃ শরীরের ওজন কমানোর জন্য তেতুল বিশেষ কার্যকরী একটি ফল।শরীরের বেশী ওজন হলে কিডনি সমস্যা, লিভারের সমস্যা এবং হৃদরোগের ঝুকি বেড়ে যায়। নিয়ম করে তেতুল খেলে কোরেস্টেরল বাড়তে থাকে। শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমতে থাকে।যার ফলে শরীরের অতিরোক্ত চর্বিগুলো কাটেতে সাহায্য করে।
মেয়েদের তেতুল খেলে কি পিরিয়ড হয়
পিরিয়ডের সময় সাধারন কোন টক ফল খেলে পেটের ব্যাথা বা রক্তপাত বাড়ে না। কিন্তু এমন কিছু টক ফল আছে যেগুলো খেলে পেটের ব্যাথা বা রক্তপাত বাড়ায়।সেই টক খাবার হচ্ছে, লবণযুক্ত টক খাবার। যেমন বিভিন্ন ধরনের আচার যেগুলোতে লবণ মিশ্রিত থাকে। পিরিয়ডের সময় লবণ দিয়ে কোন টক ফল খাবেন না। এই লবণ মিশ্রিত টক খাবার ব্লিডিং বাড়াই।
পিরিয়ডের সময় টক ফল খেতে পারবেন কিন্তু বার্তি লবণ ছারাই। টক দই ও আপনি খেতে পারবেন। তবে যে আচার লবণ দিয়ে তৈরী হয় সেটা না। তারপরেও লবণ দেয়া চির্পস, চানাচুর, খাওয়া যাবেনা। এই সময় অতিরোক্ত তেল- মশলা, ঝাল দিয়া খাবার এরিয়ে চলবেন। এবং বেশী কাপর কাচা বা দৌড়দৌড়ি করা যাবেনা।
এসময় আপনি বেশী করে পানি এবং ফলের রস, দুধ, ডিম, খেতে থাকুন।মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিহার করার চেষ্টা করবেন। তবে আনারস ফল সামান্য পরিমানে খেতে পারবেন।ত বন্ধুরা বুঝতে পারলেন পিরিয়ডের সময় তেতুল খাওয়া যাবে। কিন্তু লবন ছারাই অল্প পরিমানে। সব কিছুই অতিরোক্ত ভালো নয়। নিজেকে সেটা বুঝতে হবে।
ছেলেদের তেতুল খেলে কি হয়
তেতুল মেয়েরাই বেশী পছন্দ করে ছেলেরা না। আবার কোন কোন ছেলে প্রচুর পরিমানে তেতুল খেতে পারে।অভিজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ছেলেদের অতিরোক্ত তেতুল খাওয়া ঠিক নয়।কারন ছেলেদের অতিরোক্ত তেতুল খাওয়াই স্পার্মা সংখ্যা কমে আসে। সেক্ষেত্রে পরিমান মতো খাওয়া টাই ভালো হবে।
অতিরোক্ত তেতুল খেলে রক্ত পানি হয়ে যায় অনেকেই বলে। আসলে এটা ঠিক কথা। অতিরোক্ত কোন খাবার ও খাওয়া ভালো নয়।যে ছেলেরা তেতুল খায় তাদের যৌন ক্ষমতা বাড়ে।
তেতুল খাওয়ার নিয়ম
- তেতুল কাঁচা- পাক সবধরনের খাওয়া যায়। এই ফলটি টক মিষ্টি। এটা মেয়েদের কাছে খুব লোভনীয় একটা ফল। এমন কোন মেয়ে নাই যে পাকা তেতুল দেখলে জিভে পানি আসবে না। আনেক ছেলেরা ও তেতুল খেতে পছন্দ করে।
- তেতুলের বিভিন্ন ধরনের টক, মিষ্টি, ঝাল আচার বানিয়ে খাওয়া যায়।
- তেতুলের আচার ভাতের সাথে খাওয়া যায়।
- ব্লাডপেশারের রোগীর পেশার বেশী হলে তেতুল ভিজিয়ে ভেজানো তেতুল ভালো করে মচলিয়ে ঐ রস টা খেয়ে নিতে হবে।
- তেতুল পুচকা, চটপটির সাথে খাওয়া যায়।
- তাছারাও তেতুল তরকারির ভেতর দিয়ে রান্না করে খাওয়া যায়।
- কাচা বা পাকা তেতুল ঝাল সরিষার তেল , লবণ দিয়ে মাখিয়ে খাওয়া যায়।
প্রতিদিন তেঁতুল খেলে কি হয়
তেঁতুল সাধারনত টক জাতীয় ফল। আর অতিরোক্ত টক খাওয়া সবার জন্য ভালো না। কারো শরীরে টক শয্য হয় না। সব খাবার নিয়ম করে খেতে হবে। প্রতিদিন তেঁতুল খেলে কি হয় পড়তে থাকুন-
- শরীরে অ্যালার্জির সৃষ্টি হতে পারে।
- দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে যায়।
- নির্দিষ্ট কোন ঔষুধের ক্ষেত্রে রক্ত পাত বৃদ্ধি করে।
- পাকস্থলিতে এসিড সৃষ্টি করে । যার ফলে প্রচুর গ্যাস হয়।
- পিত্তথলিতে পাথর তৈরীতে সাহায্য করে।
- অতিরোক্ত তেঁতুল খেলে রক্তে গ্লূকোজ এর পরিমান কমে যায়।
খালি পেটে তেঁতুল খেলে কি হয়
- সকালে এক কাপ তেঁতুল জলে ভিজিয়ে এক চিমটি লবণ, চিনি মিশিয়ে সরবত করে খেলে পেট ফাপা বা বদ হজম,কমিয়ে দেয়। আর ক্যালসিয়ামের পরিমান বেড়ে যায়।
- তেতুল পাতা বেটে রস বের করে খেলে প্রসাবের জ্বালাপোরা, পাইল্ স, এবং সর্দিকাশি বেশ ভালো করে।
- প্রত্যেকদিন সকালে তেতুলের একগ্লাস সরবত খেলে দ্রুত মেদ ভুরি কমে যায়।
- খালি পেটে তেঁতুল নিয়ম করে খেলে হাইব্লাড পেশারের চাপ কমায়।
- তেঁতুলের বিচি পিষে সকালে খালি পেটে খেলে ডায়াবেটিসে ভালো কাজ দেয়।
প্রিয় বন্ধুরা আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন খালি পেটে চেতু খেলে কি হয় খালি পেটে খাওয়া স্বাস্থ্যের ক্ষতিকর বিশেষ করে যখন তেতুলের সাথে আপনি যখন লবণ মিশিয়ে খাবেন তখন এটি আপনার হার্টকে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং হার্ট অ্যাটাকে ঝুঁকি বৃদ্ধি করবে তাই কখনোই খালি মুখেই তেতুল খাবেন না এটা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর.
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন খালি পেটে তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন এবার চোদোন ছটফট দেখে নেওয়া যাক পুরাতন তেতুলের উপকারিতা গুলো. নিচে দেখে নিন পুরাতন তেতুলের উপকারিতা বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা রয়েছে.
পুরাতন তেঁতুলের উপকারিতা
অনেক সময় আমরা পুরাতন তেঁতুল বা তেঁতুলের আচার ফেলে দেয় বা নষ্ট করি। কিন্তু আমরা অনেকেই হয়তো জানি না পুরাতন তেঁতুল থেকে বেশ কিছু উপকার পাওয়া যায়। নিচে দেওয়া হলো-
- পুরাতন তেঁতুল খেলে মেদ ভুরি কমে যায়।
- রক্তে কোলেস্টরেল কমাতে সাহায্য করে।
- পুরাতন তেঁতুল খেলে মুখে রুচি আসে।
- গ্যাসের সমস্যা থাকলে ভালো হয়ে যায়।
- তেঁতুল খালি মুখেও খেতে পারবেন আবার পানিতে গুুুলিয়ে ও খেতে পারবেন।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি বন্ধুরা আমার এই পোষ্ট থেকে আপনেরা তেতুল গুনের অনেক কিছু জানতে পেরেছেন।
তেতুলে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পুষ্টি ও ভেষজ গুন। তেঁতুলের পাতা,ছাল, ফলের কাচা ও পাকা শাস, পাকা ফলের খোসা, এবং বীজ সব কিছুই উপকারি। এর কচি পাতায় রয়েছে অ্যামিনো অ্যাসিড। তেঁতুল ফল নিয়ম করে খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু যাদের কিছু নির্দিষ্ট ঔষুধ খেতে হয় তারা অল্প পরিমানে খাবেন
msta2z.comব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url