ব্রয়লার মুরগির ডিমের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন | Msta2z

ব্রয়লার মুরগির ডিমের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

প্রিয় বন্ধুরা, আসসালামু আলাইকুম, নিশ্চয় আপনারা আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। বন্ধুরা আমাদের দেশে যে ব্রয়লার মুরগী আছে তার ডিম তো আমরা সকলেই প্রায় খুব ভালোবেসে খাই। কারো কারো কাছে খুবই প্রিয় এই ব্রয়লার মুরগীর ডিম। কিন্তু বন্ধুরা আপনারা কি জানেন, ব্রয়লার মুরগীর ডিমের কিছু ক্ষতিকর দিক আছে। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।আসুন বন্ধুরা জেনে নিই।
ব্রয়লার মুরগীর ডিমের ক্ষতিকর দিক

যদিও ডিম খেতে অনেক সুস্বাদু এবং পুষ্টি মানের একটি খাবার। কিন্তু এর কিছু খারাপ দিক ও আছে। কারন ব্রয়ালার মুরগীকে অনেক পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো হয় তাই ব্রয়লার মুরগীর ডিমের কিছু ক্ষতি কর দিক ও রয়েছে।

ভৃৃমিকা

আসলে ব্রয়লার মুরগীর ডিমের ক্ষতিকর দিক থাকার পাশাপাশি কিছু উপকারিতাও আছে। কিন্তু যাই হোক না কেন এই ডিম খাওয়ার আগে আমাদেরকে জানতে হবে যে কি কি ক্ষতিকর ‍দিক রয়েছে। আপনি যদি ডিমের ক্ষতির বিষয় গুলো সহকারে আরো যাবতীয় বিষয় গুলো জানতে চান তাহলে পোষ্ট খানা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।

ব্রয়লার মুরগীর ডিমের উপকারিতা

আমরা যে সকল খাবার খাই সে সকল প্রত্যেকটা খাবারের উপকারিতা এবং ক্ষতিকর দিক আছে। এখানে ব্রয়লার মুরগীর ডিমের কি উপকারিতা তা নিচে দেওয়া হলো।
  • আপনাদের কে অবশ্যই ব্রয়লার মুরগীর ডিমের উপকারিতা গুলো না বোঝেন তাহলে কিন্তু ক্ষতিকর দিক গুলো পরে কোন লাভ হবে না। এই জন্য আগে আপনাকে ব্রয়লার মুরগীর ডিমের উপকারিতা গুলো ভালো করে বুঝাতে চায় তার পর ক্ষতিকর দিক আলোচনা করব।
  • ব্রয়লার মুরগীর খাবার গুলো হলো ভিটামিন, শুটকি মাছের গুরা, শামুকের গুরা, গম, ভুষি, ভুট্টা ইত্যাদি খাবার খাওয়ানো হয়। এই জন্য ব্রয়লার মুরগীর ডিমে অনেক পুষ্টি থাকে।
  • ব্রয়লার মুরগী কে অত্যাধিক মানের পুষ্টিগুন খাবার দেওয়া হয় তাই ব্রয়ালার মুরগীর ডিমে অনেক উপকারিতা থাকে।
  • ব্রয়লার মুরগীর ডিমে রয়েছে এনডিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ও খনিজের মতো অনেক গুরুত্ব পূর্ণ উপাদান।
  • এই মুরগীর ডিমের সাদা অংশে অনেক পরিমানে জৈব আমিষ থাকে।
  • ব্রয়লার মুরগীর ডিমে এমন এক পুস্টি গুন আছে যার জন্য সকল বয়সের মানুষ খেতে পারে।
  • শিশুর মেধা বিকাশে ব্রয়লার মুরগীর ডিমের বেশ কাজ করে
  • ব্রয়লার মুরগীর ডিমে রয়েছে অনেক পরিমান ভিটামিন । এই জন্য শিশুদের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
  • আপনারা ব্রয়লার মুরগীর ডিম খান বা দেশী মুরগীর ডিম খান প্রত্যেক মুরগীর ডিমে কিন্তু ভিটামিন এবং পুস্টি আছে।
  • দেশী মরগীর ডিমের চেয়ে ব্রয়লার মুরগীর ডিম তুলুনামুলক ভাবে একটু বড়। এজন্য ব্রয়লার মুরগীর ডিম থেকে বেশী পুস্টি পাওয়া যায়।

ব্রয়লার মুরগীর ডিমের ক্ষতিকর দিক

আমাদের কে অবশ্যই ব্রয়লার মুরগীর ডিম খাওয়ার আগে ডিমের ক্ষতিকর দিক গুলো ভালো করে বুঝে নিতে হবে তারপর ‍খাওয়ার পরিকল্পনা করুন। আসুন পড়তে থাকি-
  • ব্রয়লার মুরগীকে যেহেতু অধিক মাত্রায় চর্বিযুক্ত ফিডগুলো খাওয়ানো হয় তাই এই ডিম খাওয়াই শরীরের ও চর্বি জমতে থাকে।
  • ব্রয়লার মুরগীর ডিম দেশী মুরগীর ডিমের চেয়ে স্বাদ কম থাকে। এই জন্য অনেকেই ব্রয়লার মুরগীর ডিম খেতে পারে না।
  • দেশী মুরগীর ডিমে যে রকম পুস্টি গুন থাকে কিন্তু ব্রয়লার ‍মুরগীর ডিমে সেইরকম পুস্টি গুন থাকে না। আর এই কারনে অধিক পুস্টির কারনে শরীরের বিভিন্ন রকমের ক্ষতি হতে পারে।
  • ব্রয়লার ডিম যদি আপনি প্রত্যেক দিন খেতে থাকেন তাহলে আপনার শরীরে চর্বি জমতে থাকবে। এবং শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হবে।
  • কারো কারো ব্রয়লার ডিমে এলার্জি আছে। এলার্জি আলা মানুষের ব্রয়লার ডিম খেতে থাকলে এলার্জির পরিমান বাড়তে পারে।
  • ব্রয়লার মুরগীর ডিমে বিভিন্ন ধরনের জীবানু এবং ব্যাকটেরিয়া সংক্রামন ঘটে আর ডিমের মধ্যে সেটা ঢুকে গেলে আমাদের শরীরে অনেক ক্ষতি হতে পারে।
  • ব্রয়লার মুরগীর ডিম খাওয়ার ফলে আপনার শরীরের কোন ধরনের পরিবর্তন বা অসুবিধা লক্ষ করলে এই ডিম না খাওয়াই ভালো।

ফার্মের ‍মুরগীর ডিমে কি এলার্জি আছে

আমার জানা মতে মুরগীর ডিমে কোন এলার্জি নেই। তবে হ্যা হাসের ডিমে এলার্জি আছে। ব্রয়লার মুরগীর ডিম, দেশী মুরগীর ডিম, এবং সোনালী বা কক মুরগীর ডিমে কোন এলার্জি নেই। তবে আপনার মুরগীর ডিমে এলার্জি আছে কিনা তা জানার জন্য আগে আপনাকে নিয়মিত ডিম খেতে হবে। 

ডিম খেয়ে যদি বুঝতে পারেন যে আপনার কোন এলার্জি বের হচ্ছে বা কোন অসুবিধা হচ্ছে তাহলে বুঝবেন যে আপনার এলার্জি আছে। আর ডিম খাওয়ার পর এলার্জি না বের হলে বুঝবেন আপনার ডিমে কোন ধরনের এলার্জি নেই।

কোন মুরগীর ডিমের পুষ্টি বেশী

দেশী মুরগীর ডিমে পুষ্টি বেশী না ফার্মের মুরগীর ডিমে পুষ্টি বেশী এটা নিয়ে অনেকের মনে সন্দেহ জাগে। ডিম তো ডিম হয়। ডিমে প্রচুর পরিমানে প্রটিন থাকায় ডিমকে সুপার ফুড বলা হয়। এছারা ও ডিমে আরো রয়েছে ভিটামিন, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, এবং খনিজ । ডিমের সাদা অংশ এবং কুসুম সব কিছুই খাওয়া যায়।

দেশী মুরগীর ডিম
দেশী মুরগীর ডিমে আর ফার্মের মুরগীর ডিমের মাঝে তেমন কোন পুস্টির পাথ্যর্ক নেই। শহর বা গ্রামঞ্চলে দেশী মুরগী ছেরে দিয়ে পালন করা হয়। এই জন্য এদের খাবার গুলো হলো পোকা মাকর, গাছের কচিপাতা, চাল, ভাত এগুলো। এই জন্য দেশী মুরগীর ডিমে পুষ্টি হয়।

ব্রয়লার বা ফার্মের ডিম
ব্রয়লার মুরগীকে খাবারের সঙ্গে ভিটামিন মিশিয়ে দেওয়া হয়। সেই খাবারে থাকে নানান রকমের খনিজ পদার্থ। যেমন, ভুষি, গম, ভুট্টা, খৈল, লবণ, শামুকের গুরা, শুটকি মাছের গুরা ইত্যাদি। এসব পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর জন্য ব্রয়লার বা ফার্মের মুরগীর ডিমের পুষ্টি বেশী হয়। বিশেষ করে লাল ডিমের পুষ্টি বেশী। আবার দেশী মুরগীর ডিমের চেয়ে ফার্মের মুরগীর ডিম অনেকটা বড়। এই সকল কিছু বিবেচনা করা বলা যাচ্ছে যে, ফার্মের মুরগীর ডিমের পুষ্টি বেশী।

সাদা ডিম ‍ভালো নাকি লাল ডিম

ডিমের খোসা দেখে ডিমের পুষ্টির বিচার কর হয়। আসলে এটা কি ঠিক। তাহলে ডিমের খোসা কতই না গুরুত্বপূর্ণ। সাধারন মানুষেরা সাদা ডিমের চেয়ে লাল ডিমের একটু মুল্যায়ন বেশী দেয়। কারন বাজারে সাদা ডিমের চেয়ে লাল ডিমের একটু হলেও দাম বেশী। তবে সাদা ডিম এবং লাল ডিমের মধ্যে পুষ্টি বিচার তেমন কোন পার্থক্য নেই। 

লাল ডিমে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড একটু বেশী রয়েছে। মানে সামন্য কিছু পুস্টি বেশী রয়েছে। তবে এই একটু বেশী পুষ্টি না ধরলেই চলে। সেই জন্য বলা যায় যে সাদা ডিম এবং লাল ডিম দুটোই সামান পুষ্টিগুন। তবে লাল সাদা আলাদা হওয়ার কারন হচ্ছে, লাল মুরগী থেকে লাল ডিম হয় এবং সাদা মুরগী থেকে সাদা ডিম হয়।

ব্রয়লার ডিম কিভাবে খেলে বেশি ‍উপকার পাওয়া যায়

ডিমে রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুন। আমাদের সামজে কিছু সাধারন মানুষের মধ্যে ডিম খাওয়া নিয়ে নান ধরনের ভুল ধারন রয়েছে। সেসব ধারনার জন্য আমাদের শরীর প্রয়োজনীয় পষ্টি থেকে বঞ্চিত হয়। ডিম খুব পুষ্টিকর খাবার কিন্তু আপনে কিভাবে এই ডিম খাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে পুষ্টি পাবেন।

অনেক মানুষ মনে করেন যে ডিম আধা সিদ্ধ করে খেলে বেশী উপকার বা পুষ্টি পাওয়া যাবে। কিন্তু এধরনা সম্পর্ন ভুল। বরং ডিম টা পুরোপুরি সিদ্ধ করে খাওয়া টাই বেশী পুষ্টিকর। কারন আধাসেদ্ধ ডিমে থাকে সালমোনেল্লা নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। যার ফলে বমি হয় বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। তাই আপনারা আধা সেদ্ধ ডিম খাবেন না। এবং এক সঙ্গে একাধিক সিদ্ধ ডিম খাবেন না।

ফার্মের সাদা ও লাল ডিমের উপকারিতা

  • সাদা ডিম হোক বা লাল ডিম হোক যে ডিম খবেন ইচ্ছা। প্রতিদিন একটি করে ডিম খেলে শরীরের ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরন হয়। ডিম দেহের কোষ গুলোকে ভালো রাখে এবং শক্তি বাড়ায়।
  • প্রতিদিন একটি করে ডিম পোস হোক বা সিদ্ধ হোক খাইতে হবে। তাহলে চোখরে জ্যোতি ভালো থাকে। ডিমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং লুটেইন যা চোখের ছানি এবং অন্ধত্ব দুর করে।
  • ডিম খেলে স্মৃুতশক্তি বাড়ায় এবং মস্তিষ্কের কোষকে ভালো রাখে।
  • ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম এবং আয়রন যা উচ্চ প্রেটিন শরীরের পেশীকে ভালো রাখে।
  • ডিম খেলে অনেক সময় পেট ভরা থাকে। যার ফলে অন্য খাবার গ্রহনে আগ্রহ কম থাকে এবং অন্য ক্যালোরির চাহিদা পূরন হয়।
  • ডিম খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

শেষ কথা

বন্ধুরা ডিম যে রকম বা যে রঙ্গের হয় না কেন। ডিম তো খেতেই হবে। ডিম না খেলে তো ডিমের পুস্টি গুন পাওয়া যাবে না। ডিমের ক্ষতির দিক থেকে উপকারিতাই বেশী। ডিম ছোট বড় সকললেই পছন্দ করে। আমার পোষ্ট পরে আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই পরিচিতদের মধ্য সেয়ার করবেন। তাহলে তারাও পরে উপকৃত হবে। ভালো থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

msta2z.comব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url