হাফ বয়েল ডিম খাওয়ার উপকারিতা - সিদ্ধ ডিম কখন খেতে হয় | Msta2z

হাফ বয়েল ডিম খাওয়ার উপকারিতা - সিদ্ধ ডিম কখন খেতে হয়

প্রিয় বন্ধুরা আজ এই পোষ্টে লিখেছি হাফ বয়েল ডিম খাওয়ার উপকারিতা এবং সিদ্ধ ডিম কখন খাবেন।কম খরচে ডিমের চেয়ে পুষ্টিকর খাবার আর জগতে মনে হয় খুজে পাওয়া যাবে না। তাই তো মানুষ নিয়মিত ডিম খায়। আর কিছু খাওয়া হোক চাই না হোক ডিম তো খেতেই হবে। তো চলুন বন্ধুরা আর দেরী না করে হাফ বয়েল ডিম খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করি।
হাফ বয়েল ডিম খাওয়ার উপকারিতা

তবে এই ছোট্ট এবং সস্তার এই ডিম কে নিয়ে মানুষের বিতর্কের শেষ নেই। একদলের মানুষ মনে করেন যে ফুল সিদ্ধ ডিমে বেশী উপকার আর এক দল মনে করেন হাফ বয়েল বা অমলেটে বেশী উপকার।

ভৃমিকা

ডিমের পুষ্টি গুন নিয়ে আলোচনা করলে একদিনে শেষ হবে না। তাই সহজ কথায় ডিমে অনেক অনেক পুষ্টি রয়েছে। কোন কোন মানুষ মনে করেন যে ডিম পেয়াজ মরিচ দিয়ে ভেজে খেলে ডিমের পুষ্টি থাকে না বা কমে যায়।আসলে কি তাই বন্ধুরা । চলুন আসল সত্য কথাটা জানা যাক, ডিম কিভাবে খেলে বেশী উপকার পাওয়া যায়।

ডিম হাফ বয়েল করতে কত সময় লাগে

কেউ ডিম হাফ বয়েল খেতে পছন্দ করেন বা কেউ ফুল সিদ্ধ খেতে পছন্দ করেন। আবার কেউ একে বারে হালকা সিদ্ধ করতে । আসলে ডিম কিভাবে বা কতক্ষনে সিদ্ধ করলে কোন মাপের সিদ্ধ হবে তা নিচে দেওয়া হলো-

ডিমের সাদা অংশ পুরোটাই সিদ্ধ
যদি ডিমের সাদা অংশ পুরোটাই সিদ্ধ করে খেতে চান তাহলে চার মিনিট সিদ্ধ করে নিবেন ।কুসুম ঘন হয়ে আসবে কিন্তু ডিম গলায় থাকবে ।এই ডিম ছাড়াতে পারবেন তবে সাবধানে ছাড়িয়ে খেতে হবে এই অবস্থায় ডিম খুবই সুস্বাদু পুষ্টিকর।

ডিমের সাদা অংশ আদা সিদ্ধ করতে চাইলে
ডিমের সাদা অংশ আদা সিদ্ধ করতে চাইলে ফুটন্ত গরম জলে দুই মিনিট সিদ্ধ করলে ডিমের সাদা অংশ আদা সিদ্ধ হবে। সেই সঙ্গে কুসুম পুরোটাই গলা থাকবে। এই ডিমের খোসা ছাড়াতে পারবেন না। অল্প ফাটিয়ে চামচ দিয়ে ভিতর থেকে কুসুম ও সাদা অংশ খেতে পারেন।

ডিম নরম করে সিদ্ধ করতে চাইলে
ডিম নরম করে সিদ্ধ করতে চাইলে পুরো ৮ মিনিট ধরে সিদ্ধ করতে হবে। কুসুম ও সিদ্ধ হয়ে যাবে। পুরোটা তবে নরম থাকবে। যদিএভাবে সিদ্ধ ডিম খেতে ভালো লাগে তাহলে এরকম সিদ্ধ ডিম খেতে পারেন।

কুসুম মাঝখানে কাচা বা গলা চাইলে
এইভাবে ডিম সিদ্ধ করতে চাইলে ছয় মিনিট ধরে সিদ্ধ করুন শুধু মাঝখানে গলা থাকবে। যাদের গলা কুসুম খেতে ভালো লাগে তারা এই অবস্থায় ডিম খেতে পারেন।

ডিম ঠিকঠাক সিদ্ধ করলে
ডিম পুরোটা সিদ্ধ করে খেতে চাইলে দশ মিনিট ধরে সিদ্ধ করুন। আর এইভাবে সিদ্ধ করলে ডিমের খোসা সহজেই ছাড়ানো যায় এবং এভাবে ডিম খাওয়াটাও মনে হয় অনেক উপকার হয়।একটা জিনিস মনে রাখবেন, কখনই ফ্রিজ থেকে ডিম বের করে সেটা ফুটন্ত পানিতে দিবে না। তাহলে ডিম ফেটে যাবে। ডিমটা আগে থেকে বের করে রাখতে হবেস্বাভাবিক তাপমাত্রায় নিয়ে আসতে।

হাফ বয়েল ডিম খাওয়ার উপকারিতা

অনেকের মনে ধারনা হয় যে হাফ বয়েল ডিম খেলেই মনে হয় শরীরে বেশী পুষ্টি লাগে। কিন্তু বিষটা এরকম না। বরং ফুল বয়েল ডিম খাওয়াটাই স্বাস্থ্যর পক্ষে বেশী উপকার। হাফ বয়েল ডিমে রয়েছে সালমোনেল্লা নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়া মানুষের শরীরে বমি বা ডায়রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।


বা শরীরে একাধিক সমস্যার কারন হতে পারে। তাই চেষ্টা করবেন ডিম ফুল ‍সিদ্ধ করে খাওয়ার। যদি ও আপনাদের শরীর হাফ বয়েল ডিম খাওয়া টা সহ্য করতে পারে বা হজমে কোন অসুবিধা না হয় তাহলে খুব ভালো উপকার করে হাফ বয়েল ডিম। নিচে হাফ বয়েল ডিমের উপকারিতা গুলো দেওয়া হলো-

প্রোটিন পরিপূর্ণ পাওয়া যায়
প্রোটিনকে আমরা বেশিরভাগ সময় জীবনের উল্লেখ্যযোগ্য উপাদান হিসেবে মেনে এসেছি। এই প্রোটিনয় আমাদের শরীরে টিস্যু মেরামত বেশি নির্মাণ এবং সামগ্রিক বিধি ও বিকাশে খুবই ভূমিকা পালন করে ।হাফ বয়েল ডিমে রয়েছে উচ্চমানের প্রোটিন যা আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় সংস্থা আমিনো ও এসিড কে ধারণ করে। জিম লাভারদের জন্য আমরা এটাই পরামর্শ যে আপনার আপনাদের ডায়েটে হাফ বয়েল ডিম যুক্ত করুন যাতে আপনাদের শরীরে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়তে পারেন।

প্রয়োজনীয় ভিটামিনের উৎস
ডিম পুরো সিদ্ধ হোক বা হাফ সিদ্ধ হোক যে কোনো প্রকারের ডিম আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ সম্পদ এর প্রয়োজন মেটাতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। হাফ বয়েল ডিম থেকে পাওয়া এই ধরনের পুষ্টিগুলো আমাদের বিভিন্ন রকমের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাছাড়া আমাদের হাড় মজবুত করতে, ত্বককে স্বাস্থ্যকর বানাতে, এবং চুলের বৃদ্ধির জন্য খুবই কাজে আসে। আপনি সহজেই এই মূল্যবান পুষ্টি গুলো আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

হজম করতে সহজ
বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, আধা সেদ্ধ ডিম খুব সহজে হজম হয়ে যায়। সিদ্ধ ডিমের নরম অংশটা পাতলা কুসুম আমাদের দেহের পছন্দের উপর সুপ্রভাত ফেলে। যে সকল মানুষের হজম সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে ডাক্তারেরা তাদের জন্য হাফ বয়েল ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন।

ওজন কমাতে সাহায্য করে
আপনি যদি মোটা হয়ে থাকেন বা মোটা হয়ে যাচ্ছেন, আপনি আপনার শরীরে ওজন কমাতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনি হাফ বয়েল ডিম খাবেন। এগুলোতে প্রোটিন বেশি এছাড়া এটি তৃপ্তি দেয়। খেলে পেট ভরে যায়। তাই বন্ধুরা আজ এই হাফ সিদ্ধ ডিম আপনার খাবারের তালিকা যোগ করুন। যদি আপনি হজম করতে পারেন। তাহলে আপনি হাফ বয়েল ডিম খেতে পারেন কোন অসুবিধা নেই।

দিনে কয়টা ডিম খাওয়া যাবে

প্রতিদিন একটা গোটা ডিম খেতে পারেন। যে কোন বয়সের মানুষ। তবে কোন ডায়াবেটিস বা প্রেসারের রোগীকে ডিম খেতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে। আর একান্ত খেতে চাইলে একটা ডিমের সাদা অংশ খেতে পারবেন কোন অসুবিধা নেই। আর একে বারেই দুর্বল রোগী হলে সকালে একটা ডিম আর সন্ধ্যায় একটা খেতে পারবে।

সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা

ডিম বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া গেলেও সিদ্ধ করে খাওয়াটাই বেশী উপকার।সিদ্ধ ডিম খাওয়ার উপকারিতা গুলো নিচে দেওয়া হলো-
  • ওজন কমাতে সাহায্য করে
  • হাড় মজবুত করে
  • চোখ, চুল ও নখের জন্য উপকারী
  • কোলিনের ভালো উৎস
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহয্য করে
  • হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে
  • গর্ভবস্থায় সিদ্ধ ডিম বিশেষ ভৃমিকা পালন করে
  • ত্বক ও মস্তিষ্ক ভালো রাখে
  • কোলেস্টরেল নিয়ত্রন রাখে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

সিদ্ধ ডিম খাওয়ার অপকারিতা

প্রতিদিন ডিম খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। একজন দুর্বল বা অসুস্থ্য মানুষ প্রতিদিন ২ টা করে ডিম কুসুম সহকারে খেতে পারবেন।এর বেশী ডিম কুসুম সহকারে খেলে হৃদরোগের হওয়ার ঝুকি থাকে। তবে দুইটার বেশী ডিম খেলে কুসুম ছারাই খাওয়ার চেষ্টা করবেন। বেশী বা অতিরোক্ত ডিম খাওয়া ঠিক নয়। 


এতে শরীরের উন্নতি হওয়ার পরিবর্তে বিভিন্ন রোগের বাসা বাধে। প্রতিটি খাবারের যেমন ভালো দিক আছে তেমনি খারাপ দিক ও আছে। ডিমের ক্ষেত্রে ও তেমনি ভালো খারাপ ‍দুটোই আছে।
  • অতিরোক্ত ডিম খাওয়ার ফলে ওজন বেড়ে যাবে
  • ডিম বেশী খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাবে
  • এছারাও ডায়াবেটিস রোগী বেশী ডিম খেলে ডায়াবেটিস রোগীর বেশ ক্ষতি হবে।
উপরের আলোচনা থেকে বুঝা যায় যে, ডিমের তেমন কোন অপকারিতা নেই। নিয়ম মেনে ডিম খেলে অপকারের চেয়ে উপকারি বেশী পাওয়া যাবে।

সিদ্ধ ডিম কখন খেতে হয়

বিভিন্ন চিকিৎসক এবং গবেষকদের মতে সকালে ডিম খাওয়া টাই বেশী ভালো। কারন সকালের খাবার টা ভারী হলেও খুব একটা সমস্যা হয় না।সকালে ডিম খেলে ডিমের সবটুকু পুস্টি শরীরের কাজে লাগে। তবে দুপুরের পরে বিশেষ করে বিকালে ডিম না খাওয়াটাই ভালো।এতে গরমে শরীর আরও গরম হয়ে যায়। আর রাতের দিকে না খেলে কোন সমস্যা নেই। আর রাতে ডিম খেতে ইচ্ছে করলে ডিমের সাদা অংশ টা খাওয়াটাই ভালো হবে।

ডিম কিভাবে খেলে বেশী উপকার পাওয়া যায়

ডিম প্রোটিনে ভরপুর। বেশির ভাগ চিকিৎসকরা খাবারের তালিকায় ডিম রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।ডাক্তারেরা বলেন বেশীর ভাগ পুষ্টিকর উপাদান প্রাকৃতিক ভাবে যেসব খাবারে সবচেয়ে বেশী পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হলো ডিম। প্রত্যেক সুস্থ্য মানুষ একটি করে ডিম খেতেই পারেন। এবং হার্টের রোগীদের ও একটি করে ডিম দিয়া যাবে। 

ডিম খাওয়া এত উপকার বলে এক সঙ্গে একাধিক ডিম খেতে যাবেন না। তাতে বরং ক্ষতি হতে পারে হতে পারে বদ হজমের সমস্যা। বিভিন্ন গবেষকেরা বলেছেন ডিম ফুল বয়াল করে মানে পুরোটা সিদ্ধ করে সকালে খেলে বেশী উপকার পাওয়া যায়।

সিদ্ধ ডিম খাওয়ার নিয়ম

সব ধরনের ডিম ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে তাপমাত্রার সংরক্ষণ করতে হয়। আর অবশ্যই মনে রাখতে হবে খোসা ছাড়ানোর সিদ্ধ ডিম কোনোভাবেই ফ্রিজের সংরক্ষণ করা যায় না। ফ্রিজে সংরক্ষণ করা ছাড়া সাধারণ তাপমাত্রায় ডিম সিদ্ধ করার পর দুই ঘন্টা পর্যন্ত ভালো থাকে অর্থাৎ তারপরে আর না খাওয়াই ভালো।

 ডিম সিদ্ধ করার পর সাধারণত দুই ঘণ্টার মধ্যে খেয়ে ফেলা উচিত। সেদ্ধ ডিম ফ্রিজে রাখলে দুর্গন্ধ হতে পারে যা হাইড্রোজেন সালফেট থেকে আসছে। ফ্রিজে ডিম রাখলে আরো শক্ত হয়ে যায়। ডিম সিদ্ধ করার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খোসা ছারিয়ে খেয়ে নেওয়া টাই ভালো।

শেষ কথা

বন্ধুরা শেষে আমি এটাই বলতে চাই যে, হাফ বয়েল বা অর্ধ সিদ্ধ ডিম পুষ্টির একটি পাওয়ার হাউস বলা যায়। এটি আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকমের স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে ।যদি আপনার শরীর বা পেট এটি হজম করতে পারে তাহলে আপনার শরীরের জন্য বেশ উপকারি। আমার পোস্ট পড়ে আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই আপনাদের পরিচিতদের মধ্যে শেয়ার করে দিবেন তারাও করে উপকৃত হবে। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

msta2z.comব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url