রাম ছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয় বিস্তারিত জানুন | Msta2z

রাম ছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয় বিস্তারিত জানুন

রাম ছাগল হলো বিদেশি জাতের ছাগল। রাম ছাগলের আরেকটি নাম আছে যমুনাপাড়ি ছাগল। এই রাম ছাগল কতদিনে বাচ্চা দেয় তা আমরা এই পোষ্ট থেকে জানব। রাম ছাগল মুলত মাংস ও দুধ উৎপাদনের জন্য পালন করা হয়। অন্যান্য ছাগলের চেয়ে রাম ছাগলের দাম টাও বেশী। ত বন্ধুরা আর দেরী না করে পড়তে থাকি রাম ছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয়।
রাম ছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয়

রাম ছাগল ভারতের উত্তর প্রদেশের যমুনা, গঙ্গা ও চম্বল নদীর মধ্যবর্তী এটোয়া জেলা এবং আগ্রা ও মথুরা জেলায় প্রচুর দেখতে পাওয়া যায়।

ভৃমিকা

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকয় ও রাম ছাগল প্রচুর আছে। রাম ছাগলের জাতটি খুব ভালো। এজাতের ছাগলের বাচ্চার বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং বাচ্চা ভালো দামে বিক্রি হয়। একজন ছাগল পালন খামারী কম খরচে এ জাতের ছাগল পালন করে খামারে উপার্জন বাড়াতে পারে। এই ছাগল আকারে বড় হওয়ার জন্য মাংস ও বেশী পাওয়া যায়।

রাম ছাগল পালন পদ্ধতি

রাম ছাগল বা উন্নত জাতের ছাগল কিভাবে পালন করতে হয় তা হয়তো আমাদের দেশের ছাগল পালনকারী অনেক মানুষই জানেন না। ছাগল পালন করা লাভজনক একটি ব্যাবসা। ছাগল পালন করে বা ছাগলের খামার দিয়ে আজ অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা হয়েছে। আজ আমরা জেনে নিব রাম ছাগল পালন পদ্ধতি।

ছাগলের ঘর
ছাগলের ঘর সবসময় পরিষ্কার , শুকনো, উষ্ণ, দুর্গন্ধমুক্ত এবং আলো বাতাস চলাচলকারী হতে হবে। স্যাত স্যাতে জায়গায় ছাগল পালন করলে বাছাগলের ঘর করলে ছাগলের বিভন্ন অসুখ হতে পারে। যেমন, নিমেনিয়া, চর্মরোগ, একথাইমা এবং ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা ইত্যাদি সংক্রামক এবং পরজীবি হতে পারে। সেই সঙ্গে ওজন কমে যাবে এবং দুধের পরিমান এবং প্রজনন ক্ষমতা সহজেই কমে যাবে।

ঘর নির্মানের জায়গা 
পূর্ব পশ্চিম লম্বালম্বি, দক্ষিণ দিকে খোলাস্থানে ঘর নির্মাণ করা উচিৎ। আর খামারের তিনদিকে ঘেরা পরিবেশ এবং উত্তর দিকে গাছ পালা লাগালে ভালো হয়। ছাগলের খামার অবশ্যেই উচু স্থানে হতে হবে। যাতে ছাগলের পেসাব পায়খানা নিষ্কাশনে সুবিধা হয়।

প্রতিটি পূর্ণবয়স্ক ছাগলের জন্য গরে ৮-১০ বর্গফুট জায়গার দরকার। প্রতিটি বাড়ন্ত বাচ্চার জন্য ৫ বর্গফুট জায়গার দরকার। ছাগলের ঘর ছন, গোলা, পাতা, খড় বা ইটের তৈরী হতে হবে। যে রকমের ঘর হোক না কেন ঘরের ভিতরে বাশের তৈরী মাচান রাখতে হবে। সেই মাচানের উপর ছাগল রাখলে ছাগলের কোন অসুখ হবে না।

পর্যাপ্ত খাবার
ছাগলকে প্রয়োজন মত পুস্টিকর খাবার সরবরাহ করতে হবে।

রাম ছাগলের খাবার কি কি

ছাগল হলো তৃনভোজী প্রাণী। রাম ছাগল বিভিন্ন ধরনের খাবার খায়। তাছারা ও রাম ছাগলেরা উচ্চ ক্যালোরী যুক্ত খাবার পছন্দ করে যাতে প্রচুর কার্বোহাড্রেড ‍থাকে। এই বর্ণনায় মানানসই অনেক গুলো বিভিন্ন খাবার রয়েছে।যা ছাগল ঠিক কি খেতে পছন্দ করে । ছাগলের খাবার গুলো নিচে দেওয়া হলো-
  • ঘাস
  • খড়
  • শাক-সবজি
  • আগাছা
  • ভাত
  • বিভিন্ন গাছের পাতা
  • দানাদার খাদ্য
  • ফল ইত্যাদি ছাগল খায়।

ছাগলের দানাদার খাবার কি কি

ছাগলের দানাদার খাদ্য গুলো নিচে দেওয়া হলো-
  • ছোলা ভাঙ্গা - বড় ছাগলের জন্য ২০ ভাগ এবং ছোট ছাগলের জন্য ১৫ ভাগ দিতে হবে।
  • গম ভাঙ্গা - বড় ছাগলের জন্য ২০ ভাগ এবং ছোট ছাগলের জন্য ৩৫ ভাগ দিতে হবে।
  • গমের ভুষি - বড় ছাগলের জন্য ২০ ভাগ এবং ছোট ছাগলের জন্য ২০ ভাগ দিতে হবে।
  • তিলের খৈল - বড় ছাগলের জন্য ৩৫ ভাগ এবং ছোট ছাগলের জন্য ২৫ ভাগ দিতে হবে।
  • খনিজ মিশ্রন - বড় ছাগলের জন্য ০৪ ভাগ এবং ছোট ছাগলের জন্য ০৪ ভাগ দিতে হবে।
  • খাদ্য লবন - বড় ছাগলের জন্য ০১ ভাগ এবং ছোট ছাগলের জন্য ০১ ভাগ দিতে হবে।

রাম ছাগল কত দিনে বাচ্চা দেয়

ছাগল বাংলাদেশের একটি অতি গুরুত্ব পূর্ণ প্রানিসম্পদ। বিশ্বে ছাগলে পালনে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। দেশে আদি কাল থেকে যে ছাগল পালন করা হচ্ছে তা ব্লাক বেঙ্গল জাতের আর ভারত থেকে আমদানি রাম ছাগল। এই দেশের আবহাওয়া রামছাগল পালনে অত্যান্ত উপযোগী। এই জাতের ছাগল পালনের মাধ্যমে গ্রামীন জনগোষ্ঠীর বেকারত্ব দুরীকরন ও দারিদ্র বিমোচন সহজেই সম্ভব। 


আমাদের দেশে অধিকাংশ বিদ্যামান আছে রামছাগল এবং ব্লাকবেঙ্গল ছাগল। রাম ছাগলের যখন ৮-৯ মাস বয়স হবে তখন বাচ্চা দেবে।

রাম ছাগল চেনার উপায়

রাম ছাগল চেনার জন্য নিচের বিশেষ নিয়ম গুলো ফলো করবেন তাহলে ভালো করে চিনতে পারবেন।
  • রাম ছাগল বা যমুনাপাড়ি ছাগলের শরীরের রং সাদা, কালো , হলুদ, বাদামী এবং বিভিন্ন রঙয়ের সংমিশ্রণে হয়ে থাকে।
  • রাম ছাগলের শরীরের গঠন সাধারনত লম্বাটে হয়। এদের পা খুব লম্বা এবং পিছনের পায়ের পেছন দিকে লম্বা লোম থাকে যা রাম ছাগলের অন্যতম বৈশিষ্ট।
  • এদের কান লম্বা প্রকৃতির ও ঝুলন্ত হয়। সাধারনত ৭-১০ ইঞ্চির অধিক ঝুলন্ত কান এদের প্রধান বৈশিষ্ট।
  • এ জাতের ছাগীর ওলান বেশ বড়, সুগঠিত ও ঝুলন্ত। ওলানের বাটগুলো মোটা ও লম্বা। মাথার শিং চ্যাপ্টা ও লম্বা হয়ে থাকে।
  • এদের শরীরের উচ্চতা ৩২-৪০ ইঞ্চি বা এর অধিক হতে পারে।
  • একটি পূর্ণবয়স্ক যমুনাপাড়ী পাঁঠার ওজন ৬০-৯০ কেজি এবং ছাগীর ওজন ৪০-৬০ কেজি পর্যন্ত হতে থাকে।
  • এই প্রজাতির প্রাপ্তবয়স্ক ছাগলের গড় ওজন ৭০-৯০ কেজি এবং ছাগীর ওজন ৫০-৬০ কেজি পর্যন্ত হয়।
  • এরা অত্যান্ত কষ্টসহিষ্ণু ও চঞ্চল প্রকৃতির হয়ে থাকে।
  • এরা সাধারণত দেরিতে প্রাপ্ত বয়োস্ক হয়ে থাকে।
  • যমুনা পাড়ি জাতের ছাগী বছরে একবার বাচ্চা দেয় এবং প্রতিবার ১-২ টি বাচ্চা প্রসব করে।
  • যমুনাপাড়ি জাতের ছাগলের দুধ প্রদান ক্ষমতা দেশি জাতের ছাগলের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে। এরা প্রতিদিন প্রায় ১.৫-২ কেজির অধিক দুধ প্রদাণ করে। এ জাতের ছাগলের দুধে প্রায় ৪ – ৫ ভাগ ফ্যাট থাকে।
  • এ জাতের মাংশ ব্লাকবেঙ্গল জাতের ছাগলের মতো সুস্বাদু নয় এবং চামড়াও উন্নত মানের নয়। তবু দুধ ও মাংশ উৎপাদনের উদ্দেশ্যে এদেশে যমুনাপাড়ি জাতের ছাগল পালন করা হয়।
  • এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্লাকবেঙ্গল ছাগলের চেয়ে কম হয়ে থাকে।

শেষ কথা

এ জাতের ছাগলের বাচ্চার বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং ভালো দামেই বিক্রয় হয়। একজন ছাগল পালন খামারি কম খরচে এই জাতের ছাগল পালন করে খামারের উপার্জন সহজে বাড়াতে পারবেন। ছাগল গাছের পাতা খায়, তাই এই প্রাণীকে দানাশস্যও কম দিতে হয়। বন্ধুরা আমার পোষ্টটি পরে আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই পরিচিতদের মধ্যে সেয়ার করবেন। তারা ও পরে অনেক কিছু জানতে পারবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

msta2z.comব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url