সিদ্ধ আলু খেলে কি মোটা হয় - সিদ্ধ আলু খাওয়ার উপকারিতা | Msta2z

সিদ্ধ আলু খেলে কি মোটা হয় - সিদ্ধ আলু খাওয়ার উপকারিতা

আলু নিয়ে অনেকেরই মনে নানান রকমের সন্দেহ রয়েছে। কেউ মনে করেন আলু খেলে ওজন বেড়ে যায়। সিদ্ধ আলু খেলে কি মোটা হয় বা ওজন বাড়ে। আসলে কথাটা কতটা সত্য তা আমাদের জানা প্রয়োজন। সিদ্ধ আল খেলে মোটা ত হয় না বরং নানান ধরনের শরীরের উপকার হয়। কারন আলুতে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল এবং ফাইবার।
সিদ্ধ আলু খেলে কি মোটা হয় -সিদ্ধ আলু খাওয়ার উপকারিতা

আলুতে রয়েছে আরো অনেক রকমের নানা বিধি উপাদান যা শরীরে প্রবেশ করে শরীরের জমে থাকা মেদকে ঝরিয়ে ফেলে তেমনি ক্যান্সারের মতো মরনরোগ কে দুরে রাখতে বিশেষ কার্যকরী ভৃমিকা পালন করে থাকে।

ভৃমিকা

আলু হলো একটি কন্দজ সবজি। সারা বছর এই সবজি পাওয়া যায়।আল হলো কার্বোহাইড্রোট অর্থ্যাৎ শর্করার প্রধান সবজি।মাটির নিচে থাকা কন্দে খাবার জমা হওয়ার ফলে এটি স্ফীত বা মোটা হয়। আর এই স্ফীত কন্দই হলো আলু। বিশেষ করে আলু আমরা সিদ্ধ করেই তরকারি রান্না করে খাই। কিন্তু কথা হলো সিদ্ধ আলু খেলে কি আসলেই মোটা হয় তা আমরা এই পোষ্ট পড়ে আজকে জানব।

সিদ্ধ আলু খেলে কি মোটা হয়

এই কন্দজ সবজি মানে আলু খাওয়া নিয়ে অনেকেরই মনে অনেক দ্বিধা কাজ করে থাকে। মানুষ মনে করে আলু শানে ত শর্করা, খেলেই মনে হয় মোটা হয়ে যাব। এমন মনে করেন অনেকেই। অতিরোক্ত আলু খেলে আপনার ডায়াবেটিস সহ ওজন বৃদ্ধি, আরোও অনেক ধরনের রোগের ঝুকি বাড়তে পারে। তবে এক্ষেত্রে আপনি কতটুকু এবং কিভাবে আলু খাচ্ছেন তার উপর ঝুকি নির্ভর করে থাকে। 

মাঝে মাঝে আপনি তরকারির সাথে, বিভিন্ন ধরনের সবজির সাথে,সিদ্ধ করা আলু বা ভর্তা খেলে তেমন কোন সমস্যা হবে না। তবে আপনাদের আলু খাওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে যে, আলু, ভাত-রুটির মতোই শর্করা জাতীয় খাবার, তাই একসাথে ভাত-রুটি এবং আলু বেশী খাওয়া যাবে না। যেদিন আলুর তরকারি হবে সেদিন ভাত বা রুটি কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনার শরীরে শর্করার পরিমান টা ঠিক থাকবে।
  • আলুতে রয়েছে ভাতের চেয়ে কম ক্যালোরি
  • আলুতে ভিটামিন সি রয়েছে।
  • আলু ভিটামিন B6 এর একটি ভালো উৎস
  • আলুতে কিছু পরিমান পটাশিয়াম ও আয়রন রয়েছে
তাই প্রত্যেকদিনের খাদ্য তালিকা থেকে আলু বাদ না দিয়ে অল্প পরিমানে সিদ্ধ আলু বা তরকারির মধ্যে দিয়ে খেতে পারবেন। তবে অতিরোক্ত খাওয়া যাবে না।যেমন সকালে আলু, দুপুরে আলু, এবং রাতে আলু। এটা ত অতিরোক্ত হয়ে গেল তাই না। এভাবে খাওয়া যাবে না। আলু সিদ্ধ বা তরকারিতে যেভাবেই খান না কেন অতিরোক্ত খেলে ত ওজন বাড়বেই।

আলু ব্যাবহারের পদ্ধতিঃ আহারে আপনি আলুকে সেদ্ধ, ভাজা, ঝোল, এবং তরকারি রান্না করে খেতে পারবেন। তবে আলুর উপকারিতা পেতে হলে তেল, ঝাল, এবং মশলা এরিয়ে চলবেন। যারা ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন তারা যতটা সম্ভব আলু খাওয়া থেকে বিড়ত থাকবেন। তবে সপ্তাহে ২-৩ বার খেতে পারবেন। কোন সমস্যা হবে না।

আলু খাওয়ার উপকারিতা

  • আলু খেলে আমরা তাড়াতড়ি শাক্তি পেতে পারি। আলুতে থাকা ভিটামিন -সি, এবং ভিটামিন-বি, আমাদের শরীরের দুর্বলতা সারাতে সাহায্য করে। এবং শরীরের ভিতরে রোগ -প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
  • আলুতে কোন চর্বি বা ফ্যাট নেই বললেই চলে।অথচ আছে লোহা ও ক্যালসিয়ামের মতো খনিজ উপাদান।
  • এরা হার্টের অসুখ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • খোসাসামেত আলু প্রায় ৩০ মিলিগ্রাম পরিমাণ ভিটামিন সরবরাহ করতে সক্ষম এবং এটি শরীরের দৈনিক চাহিদার অর্ধেকটা মিটাই।
  • আলুতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকার জন্য এটি শরীরের উচ্চ রক্তচাপ (হাই ব্লাড প্রেসার) কমাতে দারুনভাবে সাহায্য করে।
  • আবার আলুতে এক ধরনের উৎসেচক (প্রোটিনেস ইনহিবিটর )থাকায় একটি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।
  • নিয়মিত আহারের সঙ্গে আলু খেলে প্রসাবের জ্বালা থাকবে না এবং প্রসাবের নিঃসরণ ঠিকমতো হবে।
  • সন্তান প্রসবের পর মায়ের আহারে আলু দিলে স্তনে দুধের পরিমাণ বাড়বে এবং এতে শিশুর ঠিকমতো মায়ের বুকের দুধ পাবে।
  • আপনের শরীর যদি রোগাপাতলা হয়। আপনি যদি মোটা হতে চান তাহলে প্রতিদিন আহারের সময় বেশী করে আলু খান তাহলে আপনি অল্প কয়েকদিনে মোটা হয়ে যাবেন। কারন আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে কার্বোহাইড্রেট যা আপনার ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।

আলুর পুষ্টিগুন তালিকা

আলুর পুষ্টিগুন নেহাত কম নয়। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে ১০০ গ্রাম খাদ্যপযোগী আলুতে আছে-

কার্বোহাইড্রেট-                               ২২.৬ গ্রাম

লোহা-                                          ০.৭ মিগ্রা.

প্রোটিন-                                         ১.৬ গ্রাম

পটাশিয়াম-                                   ২৪৭ মিগ্রা.

ফ্যাট-                           ০.১ গ্রাম, আঁশ- ০.৪ গ্রাম

ফসফরাস-                                    ৪০ মিগ্রা.

ভিটামিন-এ                                  ৪০ আই,ইউ

ক্যালসিয়াম-                                  ১০মিগ্রা.

নিকোটিনিক অ্যাসিড-                      ১.২ মিগ্রা.

ভিটামিন-সি                                   ১৭ মিগ্রা.

রিবোফ্ল্যাবিন- .                                    ০১মিগ্রা.

থায়ামিন-                                       ০.১ মিগ্রা.

একটি বড় মাপের সিদ্ধ আলু থেকে আমরা প্রায় ২২০ ক্যালোরী শক্তি পেতে পারি।

সিদ্ধ আলু খাওয়ার উপকারিতা

আলু নিয়ে মনে অনেক প্রশ্ন থেকে থাকে। যেমন আলু খেলে কি ওজন বাড়ে, মোটা হয়, ডায়াবেটিস বেশী হয়, গ্যাস বেশী হয় এসকল প্রশ্নের জন্য এই আরটিকেলে আমরা বিস্তারিত ভাবে উপস্থাপনা করেছি। বিশেষ করে আলু সেদ্ধ করে খেলে কি উপকার পাওয়া যায় তা আলোচনা করা হলো-
  • ভিটামিন সি এর যোগান দেয়
  • মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তুলে
  • রক্তচাপ নিয়ত্রনে রাখে
  • পটাসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে
  • ফাইবারের চাহিদা মেটায়
  • ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে
  • ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে
  • শরীরের চাহিদা মেটায়
  • বাতের ব্যাথা থেকে মুক্তি দেয়

আলু খাওয়ার অপকারিতা

আলু খাওয়ার ফলে যে রকম আমরা উপকার পাই তেমনি আলু অতিরোক্ত খাওয়ার ফলে শরিরের বিভিন্ন রকমের ক্ষতি ও হতে পারে সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিন-
  • আতিরোক্ত অলু খাওয়ার জন্য ডায়রিয়া বা পেটের সমস্যা হতে পারে।
  • একধরনের সবুজ আলু আছে। এই সবুজ আলুতে এক রকেমের বিষাক্ত সোলেনিন এর সাথে আর্সেনিক ও থাকে। যা খাওয়ার ফলে শরীরে অধিক ক্ষতি হয়।
  • গর্ভবস্থায় সেদ্ধ আলু খাওয়া ঠিক নয়। সেদ্ধ আলু খেলে প্রচুর পরিমান গ্যাস হবে এবং হজম শক্তি কমে যাবে। যার ফলে শরীর খুব খারাপ লাগবে। তবে আলুর ভাজি, তরকারি রান্না করে খেতে পারবেন পরিমান মতো।
  • অতিরোক্ত আলু খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন বেড়ে যাবে। তাই আলু পরিমান মেতো খাওয়া প্রয়োজন।
  • অধিক আলু খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করা ও ইনসুলিন বেড়ে যায়। যার ফলে ডায়াবেটিস হতে পারে। যাদের ডায়াবেটিস রোগ আছে তারা অধিক আলু খাওয়া থেকে বিড়ত থাকবেন প্লিজ।
নষ্ট বা পচা আলু খাবেন না কারন এগুলো শরীরের উপর বিষাক্ত প্রভাব ফেলতে পারে।সুস্থ্য থাকুন ভালো থাকুন। উপরের বিষয়গুলো বিবেচনা করে আমাদের আলু খাওয়া উচিত।

প্রতিদিন আলু খেলে কি হয়

সব সবজির চেয়ে আলু বেশী খাওয়া হয়। সব খাবারের সাথে আলু মানিয়ে যায়। স্বাস্থ্যর জন্য বেশ উপকারি এই আলু। আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে কার্বোহাইড্রেট। এই জন্য ডায়াবেটিসে রোগী এবং মোটা মানুষ আলু খাওয়া থেকে বিরত থাকা টাই ভালো। আলুতে শুধু কার্বোহাইড্রেটিই থাকে না। আলুতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুন। 


যেমন, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম,আয়রন এবং জিঙ্ক আছে প্রচুর পরিমানে। এছারাও রয়েছে ভিটামিন -সি ও ফাইবার যা ত্বক ও অন্ত্রের জন্য বেশ কার্যকরি। আনেকেই আছে প্রতিদিনের খাবারে আলু খেতে পছন্দ করেন। আপনি নিশ্চিন্তে প্রত্যেকদিন আহারে আলু খেতে পারবেন কিন্তু পরিমান মতো। 

আলু বেশী খেলে ভাত কম খাবেন। এতে শরীরে নানা উপকার হবে। প্রতিদিন আলু খেলে কি হয় জেনে নিন-
  • বেশীর ভাগ মানুষের ধারনা যে প্রতিদিন আলু খেলে কোরেস্টেরল বাড়তে পারে। তবে এ ধারনা ভুল।আলু ডিপ ফ্রাই করা হলে কিংবা রান্নার ভুলে এতে কোলেস্টেরেল বাড়তে পারে।
  • আলুতে রয়েছে ভিটামিন-বি৬,ভিটামিন-সি, ফাইবার, ও পটাসিয়াম যা শরীরের খারাপ কোলেস্টরল দুর করে ফেলে। যার ফলে হুদরোগ হয় না।
  • আলুর ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ও জিঙ্ক থাকায় শরীরের হাড় গঠন ও শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
  • আলুতে থাকা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, শরীরের রক্ত চাপ কমাতে বেশ সাহয্য করে। প্রতিদিন নিয়ম করে আলু খেলে শরীরের রক্ত চাপ নিয়ত্রন থাকে।
আপনি অবশ্যেই প্রতিদিন আলু খাবেন। কিন্তু বেশী পরিমানে নয়।পরিমান মতো আলু খেলে শরীরের কোন ধরনের ক্ষতি হবে না বরং স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। আলু অবশ্যই তেলে বেশী ভাজবেন না। আলুর ভাজি, ভর্ত, ঝোলের তরকারি, বেকিং, রোস্টিং করে খেতে পারবেন।

আলু খেলে কি গ্যাস হয়

দিনে একবার আলুর তরকারি বা অন্য কিছু খাওয়া যেতে পারে। তবে তিন বেলা আলু খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে। সেদ্ধ আলুর তরকারি বা ভাজা আলু খেলে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আলু অন্যান্য সবজির সাথে মিশিয়ে খেলে তেমন গ্যাসের সমস্যা হবে না। তবে শুধু আলু সিদ্ধ বা অলুর ডিপ ফ্রাই খেলে পেটে গ্যাসের সৃষ্টি হবে। 

যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে বা সব সময় পেট ফাপা থাকে তাদের কে আলুর তরকারি বা আলুর অন্যপদ খাওয়া ঠিক নয়। আলু বেশী পরিমানে খেলে অবশ্যই পেটে গ্যাস হবে।

আলু খেলে কি সুগার হয়

কারো শরীরে একবার ডায়াবেটিস ধরলে বড় সমস্যা হয়ে যায়। ডায়াবেটিস হওয়ার কারনে জীবন দুর্বসহ হয়ে উঠে। তখন খাওয়া দাওয়া সব নিয়ম অনুযায়ী হয়ে যায়। আলুতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেটের উৎস। চিকিৎসকরা বলে থাকেন যে, আলুর বদলে শাক- সবজি বেশী খান তাহলে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা ২২ শতাংশ কম থাকবে।


আলু সেদ্ধ, আলুর তরকারি, আলুর ভাজা, চিপস খাওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য আলুর তৈরী খাবার খেলে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের রক্তে শর্করার ভারসম্য বিঘ্নিত হয়। নিয়মিত অতিরোক্ত আলু খাওয়া চলতে থাকলে সুস্থ্য মানুষ ও অসুস্থ্য হয়ে যাবে। ত বন্ধুরা বুঝতেই পারছেন যে অতিরোক্ত আলু খেলে শরীরে সুগারের মাত্রা ও বাড়তে থাকে।

শেষ কথা

আলু থেকে প্রাপ্ত শক্তি গ্লাইকোজেন হিসাবে মাংসপেশি ও লিভারে সঞ্চিত থাকে। খেলোয়ার দের ক্ষেত্রে আলু একটি উত্তম খাদ্য। নিয়মিতি পরিমানমতো আলু খেলে পেসাবের জ্বালা পোরা থাকে না এবং শরীরের বিভন্ন উপকার হয়। শিশুদের জন্য আলু খুবই পছন্দনীয় খাদ্য। 

প্রিয় পাঠক আমার পোষ্ট টা পড়ে আপনেরা যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বকসে জানিয়ে দিবেন এবং পরিচিতদের মধ্যে সেয়ার করবেন। ভালো থাকুন সুস্থ্য থাকুন সবাই। এমনই আরো দুর্দান্ত পোস্ট সমূহ পেতে এই ওয়েবসাইটে সাথেই থাকুন ধন্যবাদ.

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

msta2z.comব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url