টমেটোতে কি এলার্জি আছে - কাঁচা টমেটোর উপকারিতা জেনে নিন | Msta2z

টমেটোতে কি এলার্জি আছে - কাঁচা টমেটোর উপকারিতা জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা। আজ এই পোস্ট পড়ে আপনারা জানতে পারবেন যে, টমেটোতে কি এলার্জি আছে। হ্যা বন্ধুরা টমেটোতে এলার্জি আছে কি নাই, তা নিয়ে এই পোষ্টে বিস্তারিত লেখা হয়েছে। আপনারা পুরো পোষ্ট টা পড়তে থাকুন তাহলে সব কিছু ভালো ভাবে জানতে পারবেন।
টমেটোতে কি এলার্জি আছে জেনে নিন

টমেটো হলো একটি শীতকালীন সবজি। বাজারে লাল রঙ্গের টমেটো সবার নজর কারে।এটি যেমন পুষ্টিকর তেমনি খেতে ও সুস্বাদু। যদি পারেন দৈনিক আহারে টমেটো রাখতে পারবেন। কিন্তু যাদের টমেটো খেয়ে অসুবিধা মনে হয় তাদের প্রতিদিন খাবারে রাখার প্রয়োজন নেই।

ভৃমিকা

পুষ্টিতে ভরপুর টমেটো। টমেটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন, এ, সি, কে, এবং পটসিয়াম।টমেটোতে আরো কিছু উপাদান আছে যেমন, ভিটামিন বি৬, ম্যাগনেসিয়াম, থ্যায়ামিন, নায়াসেন, ফসফরাস এবং কপার। তাছারাও একটি টমেটার মধ্যে থাকে ‍দুই গ্রামের মতো ফাইবার। টমেটো তে প্রচু রস (পানি) ও রয়েছে।

টমেটোতে কি এলার্জি আছে

আমি যতটুকু জানি যে টমেটােতে অনেকেরই এলার্জি আছে। তবে সকলের নেই। একেকে জনের একেকে খাবারে এলার্জি থাকতে পারে। টমেটো তে আপনার এলার্জি আছে না নাই তা জানার জন্য আপনাকে কিছুদিন নিয়মিত টমেটো খেয়ে দেখতে হবে। খাওয়ার পর যদি বুঝতে পারেন যে শরীরে এলার্জি বের হচ্ছে তাহলে আপনাকে বুঝে নিতে হবে যে, টমেটো তে আপনার এলার্জি আছে। আর যদি কোন লক্ষন দেখা বুঝা না যায় বা কোন এলার্জি বের হচ্ছে না তাহলে বুঝবেন আপনার টমেটো তে কোন এলার্জি নেই।

সকালে খালি পেটে টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

১. আপনি সাকলে ঘুম থেকে উঠে পানি না খেয়ে যদি একটা পাকা টমেটো খেতে পারেন তাহলে স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব উপকারি হবে। আপনার শরীরের ত্বক যদি শুষ্ক হয় তাহলে আপনি কয়েকদিন নিয়ম করে একটগ্লাস টমেটোর রস খেতে পারলে ত্বক মসৃন ও নরম হবে। এভাবে ছোট বাচ্চাদের ও খাওয়াতে পারবেন। টমেটো শিশুদের মানসিক এবং শারিরীক বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্ব পূর্ণ।

২.প্রতিদিন সকারে ঘুম থেকে উঠে খালে পেটে একটা পাকা টমেটো বা এক গ্লাস টমেটোর রস খেলে আপনার ওজন দ্রুত কমতে থাকবে।

৩. টমেটোর রসের সঙ্গে কারাম বীজ মিশেয়ে খেলে ব্যাথের ব্যাথা ভালো হয়।

৪. পাকা টমেটোর রসে মধু মিশিয়ে খেলে রক্তপিত্তের দোষ ভালো হয়ে যায়।

৫. ফ্যাকাসে রক্তহীন ব্যক্তির প্রতিদিন সকালে বা যে কোন সময় একটি করে টমেটো খেলে রক্ত কনিকা বাড়বে এবং চেহারার জৌলস আসবে।

৬.নিয়মিত পাকা টমেটো খেলে পেটের কোষ্টকাঠিণ্য দুর হয়ে যাবে।

৭. অর্জুন গাছের ছাল আর চিনি মিশিয়ে টমেটোর রসের সাথে ঘন থকথকে হবে। এভাবে তৈরী করে নিয়মিত খেলে বুকের ব্যাথা বা হার্টের ব্যাথায় উপকার পাওয়া যাবে।

৮. টমেটোতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন -এ, এবং ক্যালসিয়াম আছে। প্রতিদিন সকালে একটি পাকা টমেটো খেলে চুল পরা বন্ধ হয় এবং চেহারার মসৃনতা বারে।

৯. এক কাপ ভালো নারিকেল তেল এবং এককাপ টমেটোর রস ভালো করে মিশিয়ে গায়ে মাখিয়ে দশ মিনিট রাখার পর হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করলে চুলকানি ভালো হয়ে যাবে।

১০.মাথার খুসকিতে টমেটোর রস লাগালে খুসকি ভালো হয়ে যাবে।

১১. ১-২ টি পাকা টমেটো নিয়ে কুচি কুচি করে কেটে লবন, চিনি দিয়ে সুপ করে গরম গরম খেলে সর্দি- কাশি ভালো হয়।

১২. আপনার মাড়ির দাঁত থেকে যদি রক্ত পরে তাহলে ১০-১৫ দিন পাকা টমেটো খেয়ে দেখুন মাড়ির দাতের রক্ত পরা বন্ধ হয়ে যাবে।

১৩. পাকা টমেটো নিয়মিত খাওয়াই এ্যাজমা নিয়ত্রন করে।

১৪. টমেটো তে রয়েছে ক্যালসিয়াম। যদি আপনি সকালে একটি করে পাকা টমেটো খেতে পারেন তাহলে আপনার হাড়ের ক্যালসিয়াম বাড়বে এবং হাড় মজবুত হবে।

১৫. ত্বক এবং চোখের জন্য টমেটো বেশ উপকারি। টমেটোতে আছে ভিটামিন- যা ত্বক এবং চোখ কে সুস্থ্য রাখে।

১৬. ডায়াবেটিস রোগীর জন্য টমেটো বেশ উপকারি। ডায়াবেটিস রোগীর শরীরের শর্করা বজায় রাখে টমেটো। তাই ডায়াবেটিস রোগী নিয়ম করে টমেটো খাওয়ার অভ্যাস করুন।

নিয়মিত টমেটো খান শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করুন। তবে যেকোন খাবার অতিরোক্ত খাবেন না। আর নিয়মিত খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

কাঁচা টমেটোর উপকারিতা

শীতকালে বাজারে কাচা টমেটো বেশ সহজলাভ্য। শুধু কাচা টমেটোই নয় পাক টমেটোর সহজ লাভ্যতা বেড়ে যায়। তার সঙ্গে আরো অনেক শাক- সবজি র। তবে এখন বাংলাদেশ সারা বছরই টমেটো পাওয়া যায়। তবে সবসময় পাকা টমেটো পাওয়া যায় না এই জন্য কাচা টমেটো ও আমাদের কে খেতে হয়।
পাকা টমেটোর মতো কাচা টমেটোতে ও অনেক উপকার আছে।যেমন,

১. লাল টমেটোর চেয়ে কাচা টমেটো স্বাস্থ্যের জন্য বেশী উপকারি।

২. রান্নায় যদি সবুজ টমেটো দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে এর স্বাদ আরো বেরে যায়।

৩. কাচা টমেটোতে ভিটামিন - সি, ই এর পরিমান ও বেশী। এছারা পাকা ও কাচা দুই টমেটোতেই লাইকোপিন নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে প্রচুর পরিমানে।

৪. লাল টমেটোর চেয়ে সবুজ টমেটোতে ভিটামিন - সি বেশী থাকে।

৫. কাচা টমেটোয় আরো থাকে কিউমেরিক ও ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড। যা কার্সিনোজের প্রভাব থেকে শরীরকে রক্ষা করে। যার ফলে ক্যান্সার রোগ হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে।

৬. এমনকি যারা অতিরোক্ত ধুমপানকরে , তারা ধুমপান ছারতে পারছেন না তাদের জন্য, কাচা টমেটো নিয়মিত খেলে ধুমপান আসক্তি কমতে থাকবে।

টমেটো তে কি অ্যাসিড থাকে

অতিরোক্ত টমেটো খাওয়ার জন্য আপনার হজমের সমস্যা অবশ্যই হবে। অতিরোক্ত টমেটো খাওয়ার জন্য অ্যাসিড রিফ্লাক্স, হজমের সমস্যা, অ্যালার্জিসহ আরো বিভিন্নধরনের সমস্যা হতে পারে। এইজন্য টমেটো খাওয়ার আগে ভাবতে হবে আপনার শরীরের জন্য উপকার হবে না ক্ষতিকর হবে।

  • অতিরোক্ত টমেটো খাওয়ার ফলে অ্যাসিডিটি আরো ও বাড়িয়ে দিতে পারে। টমেটোর অ্যাসিডিক উপাদান পেটে অতিরোক্ত গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড নিঃসরন করে। যার জন্য শরীর খুব খারাপ হয়ে যায়। অতিরোক্ত টমেটো খাওয়া থেকে দুরে থাকবেন।
  • পেট ভরে ভাত খাওয় বা পেট ভরা ভরা মনে হওয়া। এরকম অবস্থায় টমেটো খাবেন না। এতে হজমের সমস্যা হবে।
  • অতিরোক্ত টমেটো খাওয়ার ফলে আপনার হাচি, কাশি, এজমা. গলা জ্বলা, এবং মুখ জিহ্বা ফুলে উঠার মতো সমস্যা হতে পারে।
  • অতিরোক্ত টমেটো খাওয়ার ফলে অ্যাসিডটি ত হবেই তার সঙ্গে কিডনির উপর খারাপ প্রভাব ফেলে।

টমেটোতে কি ভিটামিন আছে

টমেটো একটি ক্ষুধাবর্ধক এবং তৃপ্তিদায়ক ফল ও সবজি। এটি কাচা থাকলে সবাজি বলা হয় এবং পেকে লাল রঙের হলে ফল বলা হয়। তবে পাকা টমেটো ছোট বড় সবার পছন্দ। টমেটোতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এবং পুষ্টিগুন। টমেটোতে রয়েছে, ক্যালসিয়াম, আমিষ, লোহা, ফসফরাস, পটাশিয়াম, নিকোটিনিক অ্যাসিড, প্রেটিন, ফ্যাট, থায়ামিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন- এ, এবং ভিটামিনি সি,।

একটি বড় মাপের পাকা টমেটোথেকে আপনি ১২ ক্যালোরি শক্তি পেতে পারেন। বৈজ্ঞানিকের মতে শরীরের পুস্টির জন্য যা যা দরকার লৌহ এবং অণ্য ক্ষার টমেটোতে প্রচুর পরিমানে রয়েছে। অন্যান্য দামি ফল যেমন, আঙ্গুর, আপেল, কমলালেবু ইত্যাদি ফলের চেয়ে টমেটোতে রক্ত তৈরীর ক্ষমতা বেশী।

টমেটোর বীজ খাওয়া যাবে কি

টমেটোর বীজ খাওয়া নিরাপদ। এই বীজ খাওয়া স্বাস্থ্যর জন্য খুবই উপকারি। টমেটার বীজ খেলে আমাদের ত্বক ভালো রাখে। তাই বলা যায় টমেটোর বীজ খাওয়া নিরাপদ। বিভিন্ন গবেষনায় বলা হয়, টমেটোর বীজ অ্যাসপিরিনের বিকল্প হিসাবে চমৎকার।

টমেটো কোন মাটিতে ভালো হয়

টমেটো চাষ উপযোগী কোন মাটি ভালো তা নিচে দেওয়া হলো-
  • সব প্রকার মাটিতে টমেটো চাষ করা যায়। তবে বেলে ও কংকরময় মাটিতে টমেটো চাষ ভালো হয়।
  • দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ মাটি টেমেটো চাষের জন্য বেশী উপযোগী।
  • বেলে মাটিতে বেশী পরিমানে জৈবসার দিলে টমেটোর চাষ মোটামুটি ভালো হয়।
  • অম্লতা ৬-৭ হলে ভালো হয়। মাটির অম্লতা বেশী হলে জমিতে চুন দিতে হবে তাহলে টমেটো চাষ ভালো হবে।

শেষ কথা

টমেটো শুধু খাবার হিসাবে নয় এই সবজি টি আমাদের স্বাস্থ্যর জন্য ও বেশ উপকারি। আমরা চেষ্ট করবো নিয়মিত টমেটো খাওয়ার। কিন্তু অতিরোক্ত না নিয়মিত। প্রতিদিন খাবার তালিকায় টমেটো একটু করে রাখতে পারেন। টমেটো কাচা খাওয়া উপকার, আবার তরকারি রান্না করে খাওয়া ও উপকার।

আপনার যেরকম করে খুশি খেতে পারেন যেমন, সালাত, জুস, তরকারির সাথে, ইত্যাদি। তবে যদি আপনার স্বাস্থ্যর বা শরীরের জন্য কোন ক্ষতির প্রভাব লক্ষ করেন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

msta2z.comব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url