মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান কি? জেনে নিন | Msta2z

মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান কি? জেনে নিন

মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান কি? আসসালামু আলাইকুম প্রিয় মুসলিম বোনেরা।মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান কি? এই অবস্থার বিধান সম্পর্কে হয়তো অনেক বোনেরা জানেন না। আজ আমাদের এই পোষ্টে আমাপনাদেরকে সেই বিধান সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেয়ার চেষ্টা করব।
মাসিক অবস্থায় নামাজ রোজা রাখার বিধান

মাসিক অবস্থায় রোজা রাখতে পারবেন না। এবং নামাজ ও হবে না। সাধারনত মাসিক ৩-১০ দিন থাকে। এই৩-১০ দিন মাসিক থাকা অবস্থায় নামাজ রোজা কোন কিছুই হবে না। এই অবস্থায় নামাজ রোজা না হলে পরবর্তী সময়ে ৩-১০ দিনের নামাজ রোজা করা যাবে কি যাবে না সেই বিধান সম্পর্কে ভালো করে জানার জন্য পুরো পোষ্টটি পড়তে থাকুন।

মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান কি?

মাসিকের রক্ত সাদা ব্যতীত, লাল, কালো, জর্দা, সবুজ, ও মেটে এই কয় প্রকার রঙ্গের মধ্যে যেকোনো প্রকার রঙের রক্ত আসুক প্রত্যেকটি মাসিকের রক্ত বলে গণ্য হবে। মাসিকের রক্ত বন্ধ হয়ে হায়েজ হতে পাক হওয়াকে ‘তহুর’ বা পবিত্রতা বলা হয়। এই তহুরের সর্বাপেক্ষা কম মুদ্দত ১৫ দিন। সর্বোচ্চ মদ্দতের কোন নির্দিষ্ট সীমা নেই। 

অতএব কোন নারীর কোন কারনে মাসিক বন্ধ হওয়ার পর যতদিন পুনরায় রক্তপাত না হবে ততদিনই পাক থাকবে। কোন নারীর যদি তিন দিন তিন রাত্রি রক্তপাত হয় তারপরে ১৫ দিন পাক থাকিয়া আবার তিনদিন তিনরাত্রি রক্তপাত হয় তবে এই মধ্যবর্তী ১৫ দিন পবিত্রতার সময়। আর ১৫ দিনের পূর্বা পর তিনদিন করে ছয় দিনেই হায়েজের সময়। 

মাসিকের ভিতর যদি দুই এক দিন রক্ত দেখা না যায় তবুও উক্ত হায়েজের মধ্যে গণ্য হবে। যেমন কোন স্ত্রী লোকের ছয় দিন হায়েজ হয়ে থাকে। কিন্তু দুইদিন রক্তপাতের পর দুইদিন রক্ত বন্ধ থেকে পুনরায় রক্তপাত হলে এখন এই মধ্যবর্তী রক্ত বন্ধের দুই দিন কেও হাইজের মধ্যে ধরতে হবে। মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান কি?

মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান
মহিলাদের মাসিকের সময় নামাজ পড়া ও রোজা রাখা নিষিদ্ধ। পরে রোজার কাজা করতে হয়, কিন্তু নামাজের কাযা নাই। মাসিক অবস্থায় মসজিদের গমন করা, কাবা শরীফ তাওয়াফ করা, কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করা ও স্পর্শ করা একেবারে নিষেধ। মাসিক সময়ে স্ত্রী সঙ্গম করা হারাম।চু্ম্বন দেওয়া বা কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করা জায়েজ আছে। 

উক্ত হারাম কাজকে হালাল মনে করলে ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। লোভে পড়ে বা অজ্ঞাতোবশত এরূপ করলে সর্বদা তওবা, ইস্তেগফার করতে হবে। (সূরা বাকারা : ২২২) মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান

মাসিক চালাকালিন সময়ে মহিলারা রোজা না রাখতে পারলে তারা ইফতার তৈরী, তাসবিহ তাহলিল, দোয়া দরুদ, হাদিস বই পড়া স্বাভিক ভাবে করতে পারবেন। সেহেরি এবং ইফতারে শরিক হওয়া যাবে। তবে মনে রাখতে হবে অবশ্যই নিজের শরীর পরিষ্কার পরিচ্ছিন্ন রাখতে হবে।

নেফাস অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান

সন্তান জন্মালে স্ত্রী লোকের সম্মুখ- দ্বার দিয়ে রেহেম হতে যে রক্তপাত হয়ে থাকে, তাকে নেফাস বলে। নেফাসের সর্বাপেক্ষা অধিক মুদ্দত (সময়) সন্তান প্রসবের দিন হতে ৪০ দিন পর্যন্ত। কিন্তু কোন সময়ের কোন নির্দিষ্ট সীমা নাই। সন্তানের শরীরের অর্ধেকের বেশি বের হলে যে রক্তপাত হয় তা হতে নেফাসের সময় আরম্ভ হয়। নেফাস অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান

নেফাস অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান
মাসিকের সময় যেসব কাজ স্ত্রী লোকের জন্য নিষিদ্ধ নেফাসের সময়ও সেসব কাজ নিষিদ্ধ। নেফাসের রক্ত বন্ধ হওয়া মাত্রই গোসল ফরজ হয়। সন্তান জন্মবার পর যদি রক্তপাত নাও হয় তাহলে ও গোসল ফরজ হবে। সন্তানের অর্ধেক শরীর বের হওয়ার পূর্বে রক্তপাত হলে যাকে( ইস্তেহাজা বলা হয় এমতা অবস্থায়) নামাজ ছেড়ে দিলে গুনাহগার হবে।হুস থাকতে নামাজ ছাড়বে না। 

রুকু সেজদার ক্ষমতা না থাকলে শুধু মাথার ইশারা হলেও নামাজ আদায় করতে হবে। সন্তান নষ্ট হওয়ার ভয় থাকলে নামাজ ত্যাগ করতে পারে। চল্লিশ দিন অতীত হোক আর না হোক রক্ত বন্ধ হওয়া মাত্র গোসল করে নামাজ পড়তে আরম্ভ করবে। গোসল করলে যদি স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় তবে তাইয়াম্মুম করে নামাজ পড়বে। হায়েজের নাই নেফাজের সময়ও নামাজের কাজা নাই। 

কিন্তু রোজার কাজা করতে হবে। যদি ছয় মাসের মধ্যে আগে পরে দুই সন্তান হয় তাহলে নেফাসের হিসাব প্রথম সন্তান হতে ধরা যাবে।দ্বীতীয় সন্তান হতে ধরা যাবে না। নেফাস অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান

নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয়

নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয় নফল রোজা হোক কিংবা ফরজ রোজা হক সে অবস্থায় মহিলাদের মাসিক হলে বাড়িতুস্রাব আরম্ভ হলে বা নেফাস দেখা দিলে রোজা অবশ্যই ভেঙ্গে যাবে তবে সক্ষম হলে ওই দিন রোজার সম্মানার্থে ইফতার পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকা ভালো। রমজান মাসে ফরজ রোজা কোন কারনে ভেঙ্গে গেলে তার কাজা ও কাফফারা রোজা পালন করা ফরজ। 

আর নফল রোজার সময় মাসিক হলে বা কোন কারন বশত ভেঙ্গে গেলে তা পুনরায় আদায় করা ওয়াজিব।ফরজ ও ওয়াজিব রোজা ছারা অন্যান্য যেসব রোজা হয় সে রোজা গুলোকে নফল রোজা বলা হয়। যেমন সপ্তাহের সোমবার এবং বৃহস্প্রতিবারের রোজা গুলো। নফল মানে অতিরোক্ত, কিন্তু ফরজ বা ওয়াজিব নয়। 

এই নফল রোজা দুই প্রকারের হয়ে থাকে। প্রথম প্রকার হলো নির্ধারিত বা রাসুলুল্লাহ (সা.) কর্তৃক পালনকৃত, এই প্রকার রোজা সুন্নত। দ্বিতীয় প্রকার হলো অনির্ধারিত, এগুলো মুস্তাহাব। এই উভয় প্রকার রোজাকে সাধারণভাবে নফল রোজা বলা হয়ে থাকে।নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয়

অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি?

মাসিক হলো নারীদের দেহের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সময়ে মেয়েদের এই মাসিক হয়ে থাকে। এই মাসিকের মাধ্যমে মেয়েদের শারীরিক সুস্থতা এবং সন্তান ধারণের সক্ষমতা নিশ্চিত হয়। তবে এই চক্রের সাথে যুক্ত আছে ইসলামের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিধান। অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি? সে সম্পর্কে আজ আমরা এই পোষ্টে আলোচনা করব।
  • ইসলামিক শরিয়তের বিধান অনুযায়ি মেয়েদের মাসিক সর্বোচ্চ ৩ দিন থেকে ১০ দিন পর্যন্ত থাকলে মেয়েদের নামাজ রোজা হবে না। এই মাসিক অবস্থায় মেয়েদের নামাজ রোজা করার কোন প্রয়োজন নেই। তবে হাদিস বই পড়তে পারবে, তাসবিহ তাহলিল করতে পারবে এবং দোয়া দরুদ করতে পারবে। মাসিক অবস্থায় দিন গুলোতে নারিদের বিশ্রামের প্রয়োজন। মাসিকের নির্দিষ্ট টাইম যেমন, ৩ দিন থেকে ১০ দিন এর বেশি হলে বলা হয় ইস্তিহাযা। ইস্তিহাযা অবস্থায় নামাজ পড়তে হবে। এবং রোজা ও রাখতে পারবেন।অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি
  • যে মহিলাদের মাসিক অনিয়মিত হয় তারা তাদের পূর্ববতী মাসিক যে কয়দিন হয়েছে যেমন ১০ দিন সাত দিন আট দিন যে কয়দিন আপনার অভ্যাস ছিল ওই কয়দিনে যে অতিরিক্ত দিনগুলো মাসিক হবে সেই দিনগুলোকে আপনি অসুস্থ ধরে নিবেন। প্রতিমাসে আপনি অতিরিক্ত মাসিকের দিনগুলোকে অসুস্থতা ধরে নিবেন। এই অসুস্থ্যতার দিনে আপনি নামাজ রোজা করতে পারবেন।
  • কোন কারণে মাসিকের সময় ১০ দিনের অতিরিক্ত মাসিক থাকলে সাধারণত তার মাসিক যতদিন স্থায়ী হয় ততদিন পর্যন্ত নামাজ রোজা বন্ধ রাখতে হবে। এরপর থেকে আবার সব ইবাদত পালন করতে পারবেন। আর যদি ১০ দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যায় তাহলে স্রাব আসার শেষ দিন পর্যন্ত ঋতুস্রাব গণ্য করে নামাজ রোজা ইত্যাদি বন্ধ রাখবেন। এ সময়ে নামাজের কাজা না থাকলেও পরবর্তী সময়ে রোজার কাজা আদায় করে নিতে হবে। (আদ্দুররুল মুক্তারঃ১/৩০০-৩০১) অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি

রোজা রাখা অবস্থায় মাসিক হলে রোজা হবে কি?

রোজা রাখা অবস্থায় মাসিক হলে রোজা হবে কি? এই প্রশ্নের উত্তর সকল বোনদের জানা প্রয়োজন। প্রিয় বোনেরা আপনাদের কারো রোজা থাকা অবস্থায় মাসিক হয়ে গেলে রোজা হবে না। যে দিন থেকে মাসিক আরম্ভ হবে সে দিন থেকে রোজা নামাজ কোরআন তেলয়াত করা যাবে না। মাসিক শুরা হওয়া থেকে শেষ হওয়া পর্যন্ত খাবার খাওয়া যায়েজ কিন্তু সেই খাবার গুলো অন্যদের সামনে না খাওয়া টাই উচিত। আর যে কয়দিন মাসিকের জন্য রোজা হবে না সেকয়দিনের রোজা পরে কাজা রোজা করতে হবে।রোজা রাখা অবস্থায় মাসিক হলে রোজা হবে কি?

মাসিক অবস্থায় কি কি করা যাবে না

অবশ্যই মাসিক চলাকালিন সময় মেয়েদের শরীর নাপাক থাকে। এই সময় তাদের নামাজ রোজা করতে হয় না। তবে নামাজ রোজা ছারাও আরো অনেক কাজ আছে যেগুলো মাসিক অবস্থায় করলে হারাম, নাজায়েজ এবং ক্ষতিকর। মাসিক অবস্থায় কি কি করা যাবে না তা নিচে তুলে ধরা হলো- মাসিক অবস্থায় কি কি করা যাবে না।
  • মাসিক অবস্থায় নামাজ পড়া যাবে না তবে এসময়ের নামাজ কাযা আদায় করতে হবে না।
  • মাসিক অবস্থায় রোজা রাখা যাবে না তবে মাসিক ভালো হলে পরিষ্কার পরিচ্ছিন্ন হয়ে রোজার কাযা আদায় করতে হবে।
  • মাসিক অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করা হারাম।
  • মাসিক অবস্থায় স্ত্রীর নাভী থেকে হাটু পর্যন্ত দেখা হারাম।
  • মাসিক অবস্থায় কোরআন শরীফ স্পর্শ করা যাবে না এবং কাউকে পড়ানোর উদ্দেশে মুখে তেলয়াত করা যাবে না।
  • মাসিক অবস্থায় স্ত্রীকে উত্তেজিত করা হারাম।
  • মাসিক শেষ হওয়ার পরে ফরজ গোসল না করে সহবাস করা হারাম।
  • মাসিকের নির্দিষ্ট টাইম যেমন, ৩ দিন থেকে ১০ দিন এর বেশি হলে বলা হয় ইস্তিহাযা। ইস্তিহাযা অবস্থায় নামাজ পড়তে হবে। এবং রোজা ও রাখতে পারবেন।
  • মাসিক অবস্থায় কাবাঘর তাওয়াফ করা যাবে না এবং মসজিদে যাওয়া যাবে না।
প্রিয় বোনেরা মাসিকের কিছু মাসায়ালা এখানে দেওয়া হলো। এই মাসায়ালা গুলো ছারাও আরো কিছু মাসায়ালা আছে। যা আমার এই মুহুর্তে জানা নেই। তবে যে মাসায়ালা গুলো এখানে দেওয়া হয়েছে। এগুলো আমাদের সচরাচর প্রতিটি বোনকে জানা প্রয়োজন। যে বোনদের নজরে এই মাসায়ালা গুলো পড়বে তারা পরবেন জানবেন এবং মানবেন। 

ও পরিচিতদের মধ্যে সেয়ার করে দিবেন প্লিজ। সকল বোনদের একটু হলেও উপকার হবে। এবং আপনারা ও সোয়াবের অধিকারি হবেন। ইনশাল্লাহ।
তবে কেউ যদি না জেনে বা অনিচ্ছা কৃত হয়ে যায় তাহলে কোন গুনাহ হবে না। আর যদি কেউ জানার পরেও ইচ্ছাকৃত ভাবে করে তাহলে কাফফারা দিতে হবে। কাফফারার পরিমান হবে এক দিনার বা অর্ধ দিনার।[কিতাবুল কাবার/ পৃষ্ঠা-৫৫]

মহিলাদের কাজা রোজা রাখার নিয়ম

আল্লাহ সুবাহানাতালা পবিত্র কোরআন কারীমে বলেছেন, গণনার কয়েকদিনের জন্য অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ থাকবে, অথবা সফরে থাকবে, সে অন্য সময় এসে রোজা পূরণ করে নেবে। (সুরা বাকারা আয়াত ১৮৪) মহিলাদের কাজা রোজা রাখার নিয়ম ।মহিলাদের কাজা রোজা রাখার নিয়ম।

শরিয়তে কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্তেও বিনা কারনে রোজা ভঙ্গ করলে অবশ্যই কাযা কাফফালা আদায় করা ওয়াজিব। যতটি রোজা ভঙ্গ হবে ঠিক ততটি রোজাই আদায় করতে হবে। কাযা রোজা মানে এইটি রোজার পরিবর্তে আরেকটি রোজা করা। একটি রোজার পরিবর্তে একটি রোজাই করতে হবে সেটা ছেলে হোক আর মেয়ে হোক সকলের জন্য সমান। 

সাধারনত একজন মুসলিম যেভাবে রোজা রাখে যেমন,সেহেরি গ্রহন করে, ইফতার খায় এবং সকল ধরনের পাপ কাজ থেকে দুরে থাকে ঠিক সেই ভাবেই কাযা রোজা থাকতে হবে।

কাযা রোজা কখন আদায় করতে হয়

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা রমজানের রোজা যাদের যে কোন কারনে ভঙ্গ হয় বা বাদ পরে যায় তাদের উচিত রোজা গুলো দ্রুত আদায় করা। তবে আপনারা এক রমজানের কাযা রোজাগুলো পরের রমজান পর্যন্ত আদায় করতে পারবেন। কোন কারন না থাকলে কাযা রোযা আদায় করতে বিলম্ব করা মাকরুহ। বন্ধুরা বছরের যে কোন দিন আপনারা কাযা রোজা আদায় করতে পারবেন। 

সে ক্ষেত্রে কোন কোন নিষেদ্ধ দিন আছে সেগুলো বাদ দিয়ে রোজা করতে হবে। বিশেষ করে ঈদুর ফিতর এবং ঈদুর আযহার দিন রোজা থাকা যাবে না। কোন ব্যাক্তি যদি মানত করে রোজা রাখার দিন ধার্য করে সেক্ষেত্রে সেই দিন কাযা রোজা রাখা যাবে না। কারন তার জন্য ওই দিন মানতের রোজার জন্য নির্দিষ্ট হয়ে গেছে। 

সহজ এবং বাংলা কথা রমজান মাসের কাযা রোজা রমজানে রাখা যাবে না। কারন রমজান মাসে ফরজ রোজা বাদ রেখে কাযা রোজা করার সুযোগ নেই। প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা তাহলে আপনারা বুঝতে পারলেন যে কাযা রোজা কখন আদায় করতে হয়। নির্দিষ্ট দিনগুলো ব্যাতিতি আপনি সামনে রোাজার আগ পর্যন্ত কাযা রোজা করতে পারেন কোন সমস্যা নেই।কাযা রোজা কখন আদায় করতে হয়।

মহিলাদের রোজা সম্পর্কে কিছু মাসয়ালা

আমাদের মুসলিম ধর্মে নারী - পুরুষ সকলের জন্য রোজা ফরজ। যদি শরীর সুস্থ্য থাকে এবং আপনি সফরে না থাকেন বা রোজা রাখতে কোন কষ্ট না হয় তাহলে আপনাকে অবশ্যই রোজা থাকতে হবে। কারন আল্লহর আদেশ প্রত্যেকটি মুসলিম বান্দার উপর রোজা ফরজ করেছেন। এবং এই রোজার প্রতিদান আল্লাহতায়ালা হাশরের ময়দানে নিজে দিবেন।

কিন্তু মহিলাদের রোজা সম্পর্কে কিছু মাসয়ালা আছে যা তাদের জনা অবশ্যক। নিচে মাসয়ালা গুলো বিস্তারিত দেওয়া হলো পড়তে থাকুন-
  • রোজা থাকা অবস্থায় কোন নারীর মাসিক হলে তার রোজা ভেঙ্গে যায়। এ অবস্থায় সে খাওয়া দাওয়া করতে পারবে। তবে লোক চক্ষুর আড়ালে রোজাকে সন্মান দিয়ে খাওয়াটাই উত্তম হবে।(ফাতাওয়া হক্কানিয়া : ৪/১৯০)
  • কোন নারীর যদি ফজরের আগে মাসিক শুরু হয়ে যায় তাহলে ওই নারীর দিনের বেলা খাওয়া দাওয়া করতে পারবে।(আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৪২৮)
  • অনেক মহিলা মাসিক বন্ধ রাখার জন্য বড়ি খান । এতে যদি তাদের শরীরের কোন অসুবিধা না হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই।
  • রোজা রাখা অবস্থায় নবজাতক শিশুকে বুকের দুধ পান করালে রোজা নষ্ট হয় না। রোজা অবস্থায় বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো যাবে। (ফাতাওয়া দারুল উলুম : ৬/৪০৮)
  • রমজানের রাতে গোসল ফরজ হলেও কোন কারনে গোসল করতে না পারলে রোজা রাখা যাবে কোন অসুবিধা হবে না। তবে ফরজ গোসল দ্রুত করাই উত্তম।
  • বাচ্চা জন্ম দেয়ার পর প্রসূতি অথবা রুগ্ন দুর্বল মহিলা, যে রোজা রাখতে পারে না, এমতাবস্থায় তার পক্ষে ফিদইয়া দেয়া যথেষ্ট নয়। যদি ফিদইয়া দিয়ে দেয় এবং পরে সুস্থ হয় এবং রোজা রাখার সক্ষমতা এসে যায়, তাহলে ওই রোজার কাজা করা জরুরি। (ফাতাওয়া দারুল উলুম : ৬/৪৭৮) ফয়জুল আল আমীন
  • গর্ভবর্তী বা স্তন্যদানকারিনী রোজাদার মহিলার যদি রোজা রাখার কারণে বাচ্চার বা তার প্রাণহানি মা মারাত্মক স্বাস্থ্যহানির প্রবল আশঙ্কা হয়, তবে রোজা ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ; অন্যথায় জায়েজ হবে না।
  • হায়েজ, নেফাস অবস্থায় কোরআন শরিফ স্পর্শ করা যেমন জায়েজ নয় অনুরূপভাবে কোরআনের আয়াত কোথাও লেখা থাকলে তাও স্পর্শ করা জায়েজ নয়। তবে যদি এমন কোনো কিতাব হয় যার মধ্যে কোরআনের আয়াত অপেক্ষা অন্য কোনো লেখা বেশি থাকে তাতে হাত লাগানো যাবে, তবে আয়াতের ওপর হাত লাগানো যাবে না।

রোজা অবস্থায় যা বৈধ

আমরা অনেক কিছু জানি না যে রোজা অবস্থায় কি কি বৈধ। রোজা অবস্থায় এমন কিছু কাজ করি যা আমরা জানি অবৈধ। আসলে তা না। আমাদের সঠিক তথ্যটি জানতে হবে রোজা অবস্থায় কি কি কাজ করা বৈধ। নিচে দেওয়া হলো পড়তে থাকুন-
  • রোজা অবস্থায় মেসওয়াক বা দাঁতন করা যাবে ।
  • রোজা অবস্থায় পুকুরে গোসল করা যাবে এবং ডুব দেওয়া যাবে।
  • রোজা অবস্থায় চোখে সুরমা লাগানো যাবে
  • রোজা অবস্থায় শরীরে তেল মহলম এবং ক্রিম ব্যবহার করা যাবে।
  • রোজা অবস্থায় স্বামী স্ত্রী এক বিছানায় শুয়ে থাকা যাবে এবং প্রেমালাপ করা যাবে।
  • দেহে দূষিত রক্ত বহিষ্করণ করা যাবে।
  • রক্ত দান করা যাবে।
  • দাঁত তোলা যাবে।
  • আহারের কাজ দেইনা এমন ইনজেকশন ব্যবহার করা যাবে।
  • মাথা ন্যাড়া করা যাবে।
  • হাত পায়ের নখ কাটা যাবে।
  • সুগন্ধীর শুভ্রাণ নেওয়া যাবে।
  • রোজা অবস্থায় মুখে থুতু গিলে খাওয়া যাবে এবং ফেলে দেওয়া যাবে।
  • রোজা অবস্থায় ঘুমানো যাবে দিনের বেলায়।
  • স্ত্রীলোকের দিকে তাকানোর কারণে কোনো কসরত ছাড়া বীর্যপাত হলে।
  • ঘুমের মাঝে স্বপ্নদোষ হলে।
  • রোজা অবস্থায় সফর করা যাবে।
  • রোজা অবস্থায় কুলি করা যাবে কিন্তু গরগরা সহকারে না এবং নাকে পানি নিয়া যাবে।
  • রোজা অবস্থায় তরকারি বা মিষ্টি জিনিষ চাকা যাবে। কিন্তু চাকার পরে কুলি করবেন।
  • দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা গোশত খেয়ে ফেললে (যদি পরিমাণে কম হয়), পরিমাণ বেশি হলে রোজা ভেঙে যাবে।

যেসব কারনে রোজা নষ্ট বা বাতিল হয়

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা আমরা হয়তো অনেকেই জানি না যে কি কি কারনে রোজা নষ্ট হতে পারে। আজ আমরা সঠিক ভাবে জানবো যে কি কি কারনে রোজাদারের রোজা নষ্ট হয়ে যায়।যেসব কারনে রোজা নষ্ট বা বাতিল হয়।
  • দিনের বেলা স্ত্রী সহবাস করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • বীর্যপাত হলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • পানাহার করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • ইচ্ছা কৃত মুখ ভলে বমি করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • অঙ্গান হলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • মেয়েদের হায়েজ নেফাস হলে মেয়েদের রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • নিয়ত বাতিল করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • ইসলাম ত্যাগ করলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে।
  • কোন কারনে নাক দিয়ে রক্ত মুখে চলে আসলে রোজা ভেঙ্গে যায়।
  • ওজু করার সময় মুখে পানি দিয়ে গরগরা করায় গলার ভিতরে পানি চলে গেলে রোজা নষ্ট হয়।
  • কোন নারীর যদি ইফতারের আগে মাসিক হয় তাহলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে।
  • মুরতাদ্দ হলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • শরীর থেকে দূষিত রক্ত বের হলে যদি রোজা নষ্ট হয়ে যায়।

শেষ কথা

প্রিয় মুসলিম বোনেরা আপনারা অবশ্যই বুঝতে পারলেন যে মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান কি। আসলে আমরা অনেক মুসলিম নামাজ পরি রোজা থাকি কিন্তু হাদিস কোরআনে সেই নামাজ রোজার কিছু বিধান আছে সেগুলো জানি না। আজ আমরা এই পোষ্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে নামাজ রোজা সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। 

প্রিয় বোনেরা এবং ভাইয়েরা রমজান মাস আসছে অবশ্যই আপনারা ৩০ টি ফরজ রোজা করবেন। ইনশাল্লাহ এই ৩০ ফরজ রোজার বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা আপনাদেরকে জান্নাত দান করবেন। ভালো থাকবেন। খোদা হাফেজ। রোজা সম্পর্কে ভালো ভালো পোষ্ট পেতে এই ওয়েব সাইট ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

msta2z.comব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url