৩০ রোজার ফজিলত দলিল সহ - রোজা সম্পর্কে কুরআনের আয়াত আরবি | Msta2z

৩০ রোজার ফজিলত দলিল সহ - রোজা সম্পর্কে কুরআনের আয়াত আরবি

৩০ রোজার ফজিলত দলিল সহ-ইসলামের স্তম্ভ পাঁচটি। তার মধ্যে তৃতীয় হলো রোজা। মুসলমানের জন্য রোজা এমন একটি ইবাদাত যা অন্য সকল ইবাদাতের চেয়ে আলাদা। মুসলমানের আত্তার সুদ্ধির জন্য রমজান মাসে ৩০ টি রোজা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। প্রিয় রোজাদার বন্ধুরা এই ৩০ টি ফরজ রোজার এমন কিছু ফজিলত আছে তা আমরা এই পোষ্টে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
৩০ রোজার ফজিলত

রোজা মুমিন ব্যক্তির জন্য এমন একটি এবাদত যা তাদের জন্য ঢাল স্বরুপ। পাপ থেকে বেঁচে থাকার জন্য খুবই কার্যকরী একটি আমলের নাম হলো রোজা। রোজা মানুষকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবে। রোজার ফজিলতের কথা কোরআন ও নবী রাসুলের হাদিসের বিভিন্ন জায়গাতে বর্ণনা করা হয়েছে।রোজ সম্পর্কে ভালো করে জানার জন্য আমাদের এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।

রোজা সম্পর্কে কুরআনের আয়াত আরবি

১.আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, হে ঈমানদারগণ তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী নবীদের উম্মত গুণের উপর। আশা করা যায় তোমাদের মধ্যে তাকওয়ার গুন ও বৈশিষ্ট্য জাগ্রত হবে।(সূরা বাকারা ১৮৩)

২. রমজান মাস হল সেই মাস যাতে আল কুরআন নাজিল করা হয়েছে, যা মানুষের জন্য জীবন বিধান এবং সত্য পথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ। আর হক ও বাতিলের মাঝে পার্থক্য বিধান কারি। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে কেউ এ মাসটি পাবে সে যেন এ মাসে রোজা রাখে। (সূরা বাকারা ১৮৫)

৩. রোজার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত আছেন যে, তোমরা আত্মা প্রতারণা করেছিলে সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতএব তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করো এবং যা কিছু আল্লাহ তোমাদের জন্য দান করেছেন তা আহরণ করো। 

আর পানাহার কর যতক্ষণ না কালো রেখা থেকে ভোরের সাদা রেখা পরিষ্কার দেখা যায় রাত পর্যন্ত। আর যতক্ষণ তোমরা স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়েও না। এই হলো আল্লাহ তাআলার বেধে দেওয়া সীমানা। এমনি ভাবে আল্লাহ তায়ালা নিজের আয়াত সমূহ বর্ণানা করেন মানুষের জন্য, যাতে তারা সাবধান হতে পারে। (সূরা বাকারা ১৮৭)

৪. নিশ্চয়ই কোরআন নাজিল করেছি মহামান্বিত রাত্রিতে। মহামান্বিত রাত্রি সম্বন্ধে আপনি কি জানেন? মহামান্বিত রাত্রি হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এতে প্রত্যেক কাজের জন্য ফেরেশতাগণ ও জিব্রাইল আবর্তন হয় তাদের প্রতিপালকের নির্দেশক্রমে ।আর শান্তি বর্ষিত হতে থাকে ফজরের উদয় হওয়া পর্যন্ত। (সূরা কদর)

৩০ রোজার ফজিলত দলিল সহ

প্রিয় মুসলিম রোজাদার ভাই ও বোনেরা আপনারা যারা পবিত্র রমাজান মাসে আল্লাহর ভয়ে এবং নিজের পাপ মোচনের জন্য রোজা থাকেন সেই বোন ও ভাইয়েরা কি জানেন ৩০ রোজার কিছু গুরুত্বপূর্ন ফজিলত আছে। প্রিয় ভাই ও বোনেরা ৩০ রোজার ফজিলত দলিল সহ আলোচনা করা হলো। পড়তে থাকুন -

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসকে ৩ ভাগে ভাগ করেছেন। এর মধ্যে প্রথম ১০ দিন আল্লাহর রহমত নাযিলের। দ্বিতীয় দশ দিন গুনাহ মাফ এবং মাগফেরাতের দিন এবং তৃতীয় দশ দিন আল্লাহর আজাব থেকে নাজাতের জন্য নির্ধারিত করেছেন।

রমজানের প্রথম ১০ দিন আল্লহর রহমত নাযিলের দিন
পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ মাহে রমজানের বিশেষ বৈশিষ্ট্য বিবৃতি করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু বলেছেন, এটা এমন এক মাস যে প্রথম ১০ দিন রহমত বারিধারায় পরিপূর্ণ। এই দশ দিন আল্লাহর রহমত নাযিলের। প্রথম দশকে আল্লাহ তা'আলা তার বান্দাকে রহমতের বারিধারা বর্ষণ করে মাগফিরাত ও ক্ষমার উপযোগী করেন।

রমজানের দ্বিতীয় ১০ দিন গুনাহ মাফের দিন
মাগফিরাত ও নাজাতের মাস রমজানুল মোবারক চলছে। রমজানের দ্বিতীয় ১০ দিন হল মাগফিরাতের দিন। রমজানুল মোবারকের সিয়াম সাধনা দ্বিতীয় দশ দিন কে বলা হয় মাগফিরাতের দশক। অর্থাৎ ১১ থেকে ২০ রোজা পর্যন্ত মাগফিরাত যার অর্থ ক্ষমা। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রমজানের প্রথম ১০ দিন রহমতের, দ্বিতীয় দশ দিন মাগফিরাত লাভের, এবং তৃতীয় দশ দিন জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের। ( মিশকাত) 


এ মাসে যখন একজন রোজাদার সারা বছর নেকি ও পন্যর ঘাটিতি পূরণের জন্য আপ্রন চেষ্টা সাধনা চালিয়ে যান এবং মাগফিরাতের ১০ দিনেও অতিবাহিত করেন তখন আল্লাহ তার গুনাহ খাতা মাফ করে দেন। মাহে রমজানের প্রতি দিন রাতে অনেক মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং দোয়া কবুল হয়।

রমজানের তৃতীয় ১০ দিন আল্লহর আজাব থেকে নাজাত
রমজানের প্রথম দশক রহমতের, দ্বিতীয় দশক মাগফিরাতের, তৃতীয় দশক নাজাতের। প্রথম দশকে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাকে রহমতের বারিধারা বর্ষণ করে মাগফিরাত ও ক্ষমার উপযোগী করে তোলেন। দ্বিতীয় দশকে ক্ষমা করে। তৃতীয় দশকে বান্দার জন্য নাজাতের ফায়সালা করেন। হাদীস শরীফে দশককে জাহান্নাম থেকে মুক্তির দশা বলা হয়েছে।

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা বিগত দিনগুলো যাদের অবহেলায় কেটে গেছে এখনো সময় আছে তাদের নিজেকে শুধরে নেওয়ার। মুক্তির অবহিত সুযোগ পেয়েও যারা নিজেদের মুক্ত করে নিতে পারল না তাদের চেয়ে হতভাগা আর কেউই রইল না।রোজা সম্পর্কে যে ফজিলত গুলো হাদিসে পাওয়া গেছে তা নিচে দেওয়া হলো-
  • রোজার প্রতিদান আল্লাহ তায়ালা নিজেই দিবেন।সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৮৯৪; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৯৯৯৯; মুয়াত্তা মালেক ১/৩১০
  • আল্লাহ তাআলা রোজাদার কে কেয়ামতের দিন পানি পান করাবেন।মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ১০৩৯; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৫০৯৫
  • রোজা হল একমাত্র জান্নাত লাভের পথ।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৩৩২৪; মুসনাদে বাযযার, হা.২৮৫৪
  • রোজাদার ব্যক্তিরা জান্নাতে প্রবেশ করবেন ‘রাইয়ান‘ নামক বিশেষ একটি দরজা দিয়ে।সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৮৯৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১৫২; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২২৮১৮
  • রোজা জাহান্নাম থেকে রক্ষাকারী ঢাল স্বরূপ হয়ে দাঁড়াবে।মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৪৬৬৯; শুয়াবুল ঈমান বাইহাকী, হাদীস : ৩৫৭০
  • রোজা কিয়ামতের দিন রোজাদারদের জন্য সুপারিশ করবেন।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৬৬২৬; মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস : ২০৮০; বাইহাকী শুয়াবুল ঈমান, হাদীস : ১৯৯৪
  • রোজাদারের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।সহীহ বুখারী, হাদীস : ৩৮, ২০১৪; সহীহ মুসলিম ৭৬০(১৬৫); মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৭১৭০; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা
  • রোজা গুনাহের কাফফারা।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫২৫, ১৮৬৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৮৯২-২৬, মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৩২৮০, সুনানে তিরমিযী, হা. ২২৫৮
  • রোজাদারের মুখের গন্ধ মিশকের চেয়েও সুগন্ধিযুক্ত হবে।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৯০৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১৫১ (১৬৩); মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৭১৭৪; সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ২৫২৩; সুনানে ইবনে মাজাহ- ১৬৩৮
  • রোজাদার গণ পরকালে সিদ্দিকিন ও শহীদ গুণের দলভুক্ত থাকবে।মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ২৫, সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২২১২, সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৪২৯
  • রোজাদারের সকল নেক দোয়া আল্লাহ তায়ালা কবুল করবেন।মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৮০৪৩; সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৩৫৯৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৭৫২; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৪২৮
  • রোজা হিংসা ও অহংকার দুর করে দেয়।-মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ১০৫৭; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৩০৭০; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৬৫২৩
  • রোজা আল্লাহর নৈকট্য লাভের শ্রেষ্ট ইবাদাত।-সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ১৮৯৩; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২২১৪০; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৪২৫; সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস : ২৫৩৩

৩০ রোজার ফজিলত

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা আসলে কোন হাদিসে বা পবিত্র কোরআনে ৩০ টি রোজার ৩০ টি ফজিলত এভাবে আলাদা আলাদা করে দেয়া হয়নি। পবিত্র কুরআনে সূরা বাকারার ২৮৩ আয়াত থেকে রোজা সম্পর্কে কিছু স্পষ্ট কথা আল্লাহ তায়ালা বলেছেন। তবে এই পোষ্টের নিচে যে ভাবে ৩০ রোজার ৩০ টি ফজিলত দেয়া হয়েছে বা অন্যান্য পোষ্টে লেখা হয়েছে এভাবে কোন হাদিসে পাওয়া যায় নাই।
  • রোজা ১- মহান আল্লাহ রোজাদারকে নবজাতকের মত নিষ্পাপ করে দিবেন।
  • রোজা ২-মহান আল্লাহ রোজাদারীর মা-বাবাকে মাফ করে ‍দিবেন।
  • রোজা ৩-একজন ফেরেশতা আবার ও রোজাদারের ক্ষমার ঘোষণা দিবেন।
  • রোজা ৪-রোজাদার কে আসমানী বড় বড় কিতাবের বর্ণ সমান সওয়াব প্রদান করা হয়।
  • রোজা ৫-মক্কা নগরীর মসজিদে হারামে নামাজ আদায়ের সওয়াব দেওয়া হয়।
  • রোজা ৬-ফেরেশতাদের সাথে সপ্তম আকাশে অবস্থিত বাইতুল মোকারম তাওয়াফের সোয়াব প্রদান করা হয়।
  • রোজা ৭-ফেরাউনের বিরুদ্ধে মুসা আঃ এর পক্ষে সহযোগিতা করার সমান সওয়াব প্রদান করা হয়।
  • রোজা ৮-রোজাদারের উপর হযরত ইব্রাহিম আঃ এর মত রহমত বর্ষিত হয়।
  • রোজা ৯-নবী রাসুলদের সাথে দাঁড়িয়ে ইবাদতের সমান সওয়াব দেওয়া হয়।
  • রোজা ১০-রোজাদারকে উভয়েই জাহানের কল্যাণ দান করা হয়।
  • রোজা ১১-রোজাদারের মৃত্যু নবজাতকের ন্যায় নিষ্পাপ নিশ্চিত হয়।
  • রোজা ১২-হাশরের ময়দানে রোজাদারের চেহারা পূর্ণিমা চাঁদের মত উজ্জ্বল করা হবে।
  • রোজা ১৩-হাশরের ময়দানের সকল বিপদ থেকে নিরাপদ করা হবে।
  • রোজা ১৪-হাশরের ময়দানে হিসাব নিকাশ সহজ করা হবে।
  • রোজা ১৫-সমস্ত ফেরেশতারা রোজাদারের জন্য দোয়া করবেন।
  • রোজা ১৬-আল্লাহ পাক রোজাদারকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দিবেন।
  • রোজা ১৭-একদিনের জন্য নবীগণের সমান সওয়াব দেওয়া হবে।
  • রোজা ১৮-রোজাদার এবং তার মা বাবার প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টির সংবাদ দেওয়া হয়।
  • রোজা ১৯-পৃথিবীর সকল পাথর কঙ্কর, ঢিলা ,টংকর, রোজাদারের জন্য দোয়া করতে থাকে।
  • রোজা ২০-আল্লাহর পথে জীবন দানকারী শহীদদের সমান সোয়াব প্রদান করা হবে।
  • রোজা ২১-রোজাদারের জন্য জান্নাতে একটি উজ্জ্বল প্রসাদ নির্মাণ করা হয়।
  • রোজা ২২-হাশরের ময়দানের সকল চিন্তা থেকে মুক্ত করা হয়।
  • রোজা ২৩-জান্নাতে রোজাদারের জন্য একটি শহর নির্মাণ করা হয়।
  • রোজা ২৪-রোজাদারের যেকোনো ২৪ টি দোয়া কবুল করে নেয়া হয়।
  • রোজা ২৫-কবরের শাস্তি চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
  • রোজা ২৬-৪০ বছর ইবাদতের সমান ছোঁয়াব প্রদান করা হয়।
  • রোজা ২৭-চোখের পলকে পুলসিরাত পার করে দেওয়া হয়।
  • রোজা ২৮-জান্নাতের নেয়ামত দিগুন করা হয়।
  • রোজা ২৯-এক হাজার কবুল হজের সওয়াব দান করা হয়।
  • রোজা ৩০-পুরো রমজানের ফজিলত দ্বিগুণ করা হয়।

রোজা সম্পর্কে ছোট হাদিস

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা হাদিসে রোজা সম্পর্কে যে কথা গুলো বলেছেন তা নিচে দেওয়া হলো-
  • হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের নিকট রমজান মাস সমুপস্থিত। অত্যন্ত বরকতময় মাস আল্লাহ তাআলা এ মাসে তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দরজার সমূহ উন্মুক্ত হয়ে যায়। এ মাসে জাহান্নামের দরজা গুলো বন্ধ করে দেয়া হয় এবং এ মাসে বড় বড় ও সেরা শয়তানগুলো আটক করে রাখা হয় ।আল্লাহর জন্য এ মাসে একটি রাত আছে যা হাজার মাসের চেয়ে অনেক উত্তম। যে লোক এই রাত্রির মহা কল্যাণ লাভ থেকে বঞ্চিত থাকলো সে সত্যি বঞ্চিত ব্যক্তি। (নাসাঈ, মুসনাদে আহমদ,বায়হাকি)
  • হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রাসূলের করীম (সাঃ) ঘোষনা করেছেন, যে লোক রমজান মাসে রোজা রাখবে ঈমান ও চেতনা সহকারে তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী গোনাহ মাফ হয়ে যাবে। (বুখারী, মুসলিম, তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসাঈ ,ইবনে মাজা, মুসনাদে আহমদ)
  • হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রাসুলে করীম (সাঃ) বলেছেন, রোজা ঢাল স্বরূপ। তোমাদেরকেও কোনদিন রোজা রাখলে তার মুখ থেকে যেন খারাপ কথা বের না হয়। কেউ যদি তাকে জ্ঞালমন্দ করে যা বিবাদে রচিত করতে চাই সে যেন বলে আমি রোজাদার।( বুখারী মুসলিম)
  • হযরত আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, রোজা ও কোরআন রোজাদার বান্দার জন্য সাফায়াত করবে। রোজা বলবে হে আল্লাহ, আমি এ ব্যক্তিকে দিনে খাবার ও অন্যান্য কামনা-বাসনা থেকে ফিরিয়ে রেখেছি। আপনি আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। আর কোরআন বলবে হে আল্লাহ, আমি এ ব্যক্তিকে রাতের নিদ্রা থেকে ফিরিয়ে রেখেছি আপনি আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। আল্লাহ তাদের সুপারিশ গ্রহণ করবে। (বাইহাকি শুয়াবুল ঈমান)
  • হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা এবং তথা অনুযায়ী আমল পরিতাগ করতে পারলো না। তবে এমন ব্যক্তির পানাহার পরিত্যাগ করার আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।( বোখারী)
  • হযরত শাহল ইবনে সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত রাসুল করীম সাল্লাল্লাহু বলেছেন বেহেস্তের একটি দ্বার আছে তাকে রাইয়ান বলা হয়। এই দ্বারা দিয়ে কিয়ামতের দিন একমাত্র রোজাদার লোকেরাই বেহেস্তের প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ এই পথে প্রবেশ করবে না। সেদিন এই বলে ডাক দেয়া হবে রোজাদার কোথায় তারা যেন এই পথে প্রবেশ করে। এভাবে সকল রোজাদার ভেতরে প্রবেশ করার পর দ্বারটি বন্ধ করে দেয়া হবে। অতঃপর এ পথে আর কেউ প্রবেশ করবে না। (বুখারী মুসলিম)
  • হযরত আবু সায়ীদ খুদরি (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি রাসূলে করীম (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, যে লোক একদিন আল্লাহর পথে রোযা রাখবে আল্লাহ তার মুখমন্ডল জাহান্নাম থেকে ৭০ বছর দূরে সরিয়ে রাখবেন। (বুখারী মুসলিম, তিরমিজি, নাসায়ী, ইবনে মাজা)
  • হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলে করীম (সাঃ) বলেছেন, আদম সন্তানের প্রতিটি নেক আমলের সওয়াব ১০গুণ থেকে সাতশত গুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু আল্লাহ তাআলা বলেছেন, রোজা এই সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম কেননা তা একান্তভাবে আমার। অতএব আমি যেভাবে ইচ্ছা তার প্রতিফল দেব। রোজা পালনে আমার বান্দা আমারি থাকে। রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ একটি ইফতারের সময় এবংতার মালিক আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ লাভের সময় ।নিশ্চয়ই জেনে রেখো রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লহর নিকট সুগন্ধি হতেও অতি উত্তম। (বুখারি, মুসলিম)
  • হযরত আনাস বিন মালেক (রাঃ) বলেন, একবার রমজান মাস আসলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তাদেরকে বললেন, এই মাস তোমাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছে। এতে এমন একটি রাত্রি আছে যা এক হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। যে তার কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়েছে সে সকল প্রকার কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হয়েছে। আর তা থেকে বঞ্চিত হয় না চির বঞ্চিত ব্যক্তি ছাড়া কেউই। (ইবনে মাজাহ)
  • হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু বলেছেন, এমন অনেক রোজাদার আছে যাদের রোজা উপবাস ছাড়া আর কিছুই নয়। আবার এমন অনেক নামাজী ও আছে যাদের নামাজ রাত্রি জাগরণ ছাড়া আর কিছুই নয়। (দারেমি মিশকাত)
  • হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু বলেছেন, যখন রমজান মাস আসে তখন আসমানের দরজার সমূহ খুলে দেওয়া হয়। অপর বর্ণনায় আছে জান্নাতের দরজার সমূহ খুলে দেয়া হয়।দোযখের দরজার সমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। আর শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয় ।অপর বর্ণনায় রয়েছে রহমতের দরজার সমূহ খুলে দেয়া হয়। (বুখারী মুসলিম)

শেষ কথা

রমযান হল খালেস ইবাদতের মৌসুম। তাই এ মাসের সময়গুলো যতটা শুধু আল্লাহর সাথে কাটানো যায় ততটা ভালো। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে হাদীস অনুযায়ী আমল করার ও উক্ত ফযীলত লাভ করার তাওফীক দান করুন। আমীন। ইয়া রাববাল আলামীন। পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে পরিচিতদের মধ্যে সেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

msta2z.comব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url