অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি বিস্তারিত জানুন | Msta2z

অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি বিস্তারিত জানুন

অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি- একমাসে যদি ২-৩ বার মাসিক হয় তাহলে তাকে অনিয়িমিত মাসিক বলা হয়। সাধারনত অনিয়মিত মাসিক দুই ভাবে হয়ে থাকে যেমন, মাসে ঘন ঘন মাসিক হওয়া অথবা দেরিতে মাসিক হওয়া। অনেক বোনদের এই সমস্যা আছে। এই অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা যাদের আছে তাদের রোজার সময় একটা বিশেষ চিন্তার কারন হয়ে যায়।
অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি

সেই সব বোনদের উপলক্ষে বলা হচ্ছে যে, মাসিক সাধারনত ৩ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত থাকে। এর অতিরোক্ত দিন গুলোতে মাসিক হলে বা ১০-১৫ দিন পরপর মাসিক হলে তখন অনিয়মিত মাসিক হয়ে যায়। সাধারনত ২-৮ দিন পর পর মাসিক হয়।যদিও ২১ থেকে ৩৫ দিন পর্যন্ত স্বাভিক ভাবে তারতম্য হতে পারে। 

সাধারনত মাসিক হলে ৩-১০ দিন পর্যন্ত থাকে।এবং এক মাসিকে মোট ৫-৮০ মিলি পর্যন্ত রক্ত যেতে পারে। এই তিনটার যে কোন একটি অনিয়মিত মাসিক। অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি হবে না সে সম্পর্কে জানার জন্য আমাদের এই পোষ্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।

অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি

অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি? মাহে রমজানের মধ্যে রোজা অবস্থায় কোন মহিলাদের অনিয়মিত মাসিক দেখা দিলে সে মহিলাদের রোজা রাখতে হবে কিনা কিংবা নামাজ পড়া যাবে কিনা এই মাসালাটা না জানার কারণে অধিকাংশ মা-বোনদের পাপের কাজের মধ্যে লিপ্ত থেকে আল্লাহর ফরজ বিধানকে লংঘন করে জাহান্নামের মধ্যে চলে যাবে। প্রিয় দিনি মা ও বোনেরা আজকের এই মাসালা খুবই গুরুত্বপূর্ণ মাসালা। আপনারা পড়তে থাকুন তাহলে সঠিক হাদিস জেনে যাবেন।

প্রিয় দ্বীনি বোনেরা কখন নামাজ পড়া যাবে এবং কখন রোজা রাখা যাবে এবং কখন নামাজ পড়া যাবে না এবং কখন রোজা রাখা যাবে না সে সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানবো এই পোস্টে। প্রিয় দ্বীনি মা ও বোনেরা আল্লাহর রব্বুল আলামিন আপনাদেরকে একটি বিধান দিয়েছেন। প্রত্যেক মাসে নিম্নে তিন দিন তিনরাত্রে উপরে দশ দিন দশ রাত্রী তারা হায়েজ বা মাসিক পিরিয়ড অবস্থায় থাকে। 

ওই সময় মা-বোনেরা নামাজও পড়তে পারবেন না রোজাও রাখতে পারবেন না। তখন নামাজ তাদের জন্য মাফ রোজা করতে হবে না এবং রোজা গুলো মাহে রমজানের পরে কাজা রোজা করতে হবে। দশ দিন দশ রাত্রের পরে যদি ১১ দিনের বেলায় যদি ব্লাড বা রক্ত দেখা দেয় তাহলে ওই ১১ দিনের বেলা থেকে নামাজও পড়তে হবে এবং রোজা রাখতে হবে। 


এটা হয় এস্তেহাজ রোগের কারণে। সাধারণত হায়েজের নিম্নের সময়সীমা তিনদিন তিনরাত্রি এবং উপরের সময়সীমা ১০ দিন ১০ রাত্রি। দশ দিন দশ রাত্রের যদি একদিন কিংবা ১ ঘন্টা অতিক্রম হয় তারপরে আপনারা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে নামাজও পড়তে পারবেন এবং রোজা ও রাখতে পারবেন। এটা রোগের কারণে এরকম হয়ে থাকে। 

এ অবস্থায় আপনাদেরকে রক্ত নিয়ে কিংবা স্রাব নিয়ে নামাজ রোজা পড়তে হবে । এতে কোন গুনা হবে না। তাহলে প্রিয় বোনেরা আপনারা জানতে পারলেণ যে অনিয়মিত মাসিক হলে নির্দিষ্ট দিনের পর থেকে নামাজ ও হবে এবং রোজা ও হবে।

মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান

মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান? মহিলাদের মাসিকের সময় নামাজ পড়া ও রোজা রাখা নিষিদ্ধ। পরে রোজার কাজা করতে হয়, কিন্তু নামাজের কাযা নাই। মাসিক অবস্থায় মসজিদের গমন করা, কাবা শরীফ তাওয়াফ করা, কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করা ও স্পর্শ করা একেবারে নিষেধ। মাসিক সময়ে স্ত্রী সঙ্গম করা হারাম।চু্ম্বন দেওয়া বা কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করা জায়েজ আছে।

উক্ত হারাম কাজকে হালাল মনে করলে ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। লোভে পড়ে বা অজ্ঞাতোবশত এরূপ করলে সর্বদা তওবা, ইস্তেগফার করতে হবে। (সূরা বাকারা : ২২২) মাসিক অবস্থায় মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান

মাসিক চালাকালিন সময়ে মহিলারা রোজা না রাখতে পারলে তারা ইফতার তৈরী, তাসবিহ তাহলিল, দোয়া দরুদ, হাদিস বই পড়া স্বাভিক ভাবে করতে পারবেন। সেহেরি এবং ইফতারে শরিক হওয়া যাবে। তবে মনে রাখতে হবে অবশ্যই নিজের শরীর পরিষ্কার পরিচ্ছিন্ন রাখতে হবে।

পিরিয়ডের কত দিন পর রোজা রাখা যাবে

পিরিয়ডের কত দিন পর রোজা রাখা যাবে? পিরিয়ড হলে পেটব্যথা সহ বিভিন্ন রকমের শারীরিক সমস্যা হয়ে থাকে। আর রোজা রাখতে হলে না খেয়ে থাকতে হয়। তাই শারীরিক সমস্যা হতে পারে তাই পিরিয়ড সম্পূর্ণ ভাল না হলে রোজা না রাখাই ভালো। বিশেষ করে পিরিয়ড অবস্থায় মেয়েদের জন্য রোজা নামাজ হারাম। কারন এটা আল্লাহ তায়ালার বিধান। 

এই সময় মেয়েদের কে আল্লহ তায়ালা মাফ করে দিবেন। কিন্তু রমজান মাস পার হলে অবশ্যই কাযা রোজা করতে হবে।পিরিয়ড যদি আপনার ৩-৭ দিন পর্যন্ত থাকে তাহলে অবশ্যই রক্তের শেষ ফোটার পর আপনাকে ফরজ গোসল করে পাক পবিত্র হয়ে রোজা রাখতে হবে। পিরিয়ডের কত দিন পর রোজা রাখা যাবে।

নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয়

নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয়? নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয় নফল রোজা হোক কিংবা ফরজ রোজা হক সে অবস্থায় মহিলাদের মাসিক হলে বাড়িতুস্রাব আরম্ভ হলে বা নেফাস দেখা দিলে রোজা অবশ্যই ভেঙ্গে যাবে তবে সক্ষম হলে ওই দিন রোজার সম্মানার্থে ইফতার পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকা ভালো। রমজান মাসে ফরজ রোজা কোন কারনে ভেঙ্গে গেলে তার কাজা ও কাফফারা রোজা পালন করা ফরজ।

আর নফল রোজার সময় মাসিক হলে বা কোন কারন বশত ভেঙ্গে গেলে তা পুনরায় আদায় করা ওয়াজিব।ফরজ ও ওয়াজিব রোজা ছারা অন্যান্য যেসব রোজা হয় সে রোজা গুলোকে নফল রোজা বলা হয়। যেমন সপ্তাহের সোমবার এবং বৃহস্প্রতিবারের রোজা গুলো। নফল মানে অতিরোক্ত, কিন্তু ফরজ বা ওয়াজিব নয়।

এই নফল রোজা দুই প্রকারের হয়ে থাকে। প্রথম প্রকার হলো নির্ধারিত বা রাসুলুল্লাহ (সা.) কর্তৃক পালনকৃত, এই প্রকার রোজা সুন্নত। দ্বিতীয় প্রকার হলো অনির্ধারিত, এগুলো মুস্তাহাব। এই উভয় প্রকার রোজাকে সাধারণভাবে নফল রোজা বলা হয়ে থাকে।নফল রোজা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয়

রোজা রাখা অবস্থায় মাসিক হলে রোজা হবে কি?

রোজা রাখা অবস্থায় মাসিক হলে রোজা হবে কি? এই প্রশ্নের উত্তর সকল বোনদের জানা প্রয়োজন। প্রিয় বোনেরা আপনাদের কারো রোজা থাকা অবস্থায় মাসিক হয়ে গেলে রোজা হবে না। যে দিন থেকে মাসিক আরম্ভ হবে সে দিন থেকে রোজা নামাজ কোরআন তেলয়াত করা যাবে না। 

মাসিক শুরা হওয়া থেকে শেষ হওয়া পর্যন্ত খাবার খাওয়া যায়েজ কিন্তু সেই খাবার গুলো অন্যদের সামনে না খাওয়া টাই উচিত। আর যে কয়দিন মাসিকের জন্য রোজা হবে না সেকয়দিনের রোজা পরে কাজা রোজা করতে হবে।রোজা রাখা অবস্থায় মাসিক হলে রোজা হবে কি?

রমজান মাসের ফজিলত

রমজান মাস বরকত ময় মাস। এই মাসে মুসলিম ভাই ও বোনেরা রোজা রাখেন। কারন আল্লহ তায়ালা মুসলিমদের উপর রোজা ফরজ করেছেন। এই মাসে মুসলিম ভাই ও বোনেরা রোজা রেখে তাদের জীবনের পাহার পরিমান গুনাহগুলো আল্লহতায়ালার কাছে মাফ নেন। তাই রমজান মাসের কিছু ফজিলত আছে সেগুলো নিচে দেওয়া হলো-

রমজান মাসের অনেক ফজিলত ও মর্যাদা রয়েছে যা অন্য মাসের মালিকানাধীন নয়। রমজান মাসকে আল্লাহ মনোনীত করেছিলেন রোজা পালনের আদেশ দেওয়ার জন্য, যেমনটি পূর্ববর্তী নবীদের উম্মতকে আদেশ করা হয়েছিল, যাতে মুসলমানের কাছে পূর্ববর্তী উম্মতের গুণাবলী রয়েছে যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল এবং নিবেদিত হয়েছিল।
  • রোজার প্রতিদান আল্লাহ তায়ালা নিজেই দিবেন।সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৮৯৪; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৯৯৯৯; মুয়াত্তা মালেক ১/৩১০
  • আল্লাহ তাআলা রোজাদার কে কেয়ামতের দিন পানি পান করাবেন।মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ১০৩৯; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৫০৯৫
  • রোজা হল একমাত্র জান্নাত লাভের পথ।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৩৩২৪; মুসনাদে বাযযার, হা.২৮৫৪
  • রোজাদার ব্যক্তিরা জান্নাতে প্রবেশ করবেন ‘রাইয়ান‘ নামক বিশেষ একটি দরজা দিয়ে।সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৮৯৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১৫২; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২২৮১৮
  • রোজা জাহান্নাম থেকে রক্ষাকারী ঢাল স্বরূপ হয়ে দাঁড়াবে।মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৪৬৬৯; শুয়াবুল ঈমান বাইহাকী, হাদীস : ৩৫৭০
  • রোজা কিয়ামতের দিন রোজাদারদের জন্য সুপারিশ করবেন।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৬৬২৬; মুসতাদরাকে হাকিম, হাদীস : ২০৮০; বাইহাকী শুয়াবুল ঈমান, হাদীস : ১৯৯৪
  • রোজাদারের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।সহীহ বুখারী, হাদীস : ৩৮, ২০১৪; সহীহ মুসলিম ৭৬০(১৬৫); মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৭১৭০; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা
  • রোজা গুনাহের কাফফারা।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫২৫, ১৮৬৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৮৯২-২৬, মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৩২৮০, সুনানে তিরমিযী, হা. ২২৫৮
  • রোজাদারের মুখের গন্ধ মিশকের চেয়েও সুগন্ধিযুক্ত হবে।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৯০৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১৫১ (১৬৩); মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৭১৭৪; সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ২৫২৩; সুনানে ইবনে মাজাহ- ১৬৩৮
  • রোজাদার গণ পরকালে সিদ্দিকিন ও শহীদ গুণের দলভুক্ত থাকবে।মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ২৫, সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২২১২, সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৪২৯
  • রোজাদারের সকল নেক দোয়া আল্লাহ তায়ালা কবুল করবেন।মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৮০৪৩; সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৩৫৯৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৭৫২; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৪২৮
  • রোজা হিংসা ও অহংকার দুর করে দেয়।-মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ১০৫৭; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২৩০৭০; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৬৫২৩
  • রোজা আল্লাহর নৈকট্য লাভের শ্রেষ্ট ইবাদাত।-সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ১৮৯৩; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ২২১৪০; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৪২৫; সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস : ২৫৩৩

কাযা রোজা কখন আদায় করতে হয়

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা রমজানের রোজা যাদের যে কোন কারনে ভঙ্গ হয় বা বাদ পরে যায় তাদের উচিত রোজা গুলো দ্রুত আদায় করা। তবে আপনারা এক রমজানের কাযা রোজাগুলো পরের রমজান পর্যন্ত আদায় করতে পারবেন। কোন কারন না থাকলে কাযা রোযা আদায় করতে বিলম্ব করা মাকরুহ। বন্ধুরা বছরের যে কোন দিন আপনারা কাযা রোজা আদায় করতে পারবেন।

সে ক্ষেত্রে কোন কোন নিষেদ্ধ দিন আছে সেগুলো বাদ দিয়ে রোজা করতে হবে। বিশেষ করে ঈদুর ফিতর এবং ঈদুর আযহার দিন রোজা থাকা যাবে না। কোন ব্যাক্তি যদি মানত করে রোজা রাখার দিন ধার্য করে সেক্ষেত্রে সেই দিন কাযা রোজা রাখা যাবে না। কারন তার জন্য ওই দিন মানতের রোজার জন্য নির্দিষ্ট হয়ে গেছে।

সহজ এবং বাংলা কথা রমজান মাসের কাযা রোজা রমজানে রাখা যাবে না। কারন রমজান মাসে ফরজ রোজা বাদ রেখে কাযা রোজা করার সুযোগ নেই। প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা তাহলে আপনারা বুঝতে পারলেন যে কাযা রোজা কখন আদায় করতে হয়। নির্দিষ্ট দিনগুলো ব্যাতিতি আপনি সামনে রোাজার আগ পর্যন্ত কাযা রোজা করতে পারেন কোন সমস্যা নেই।কাযা রোজা কখন আদায় করতে হয়।

মহিলাদের রোজা সম্পর্কে কিছু মাসয়ালা

আমাদের মুসলিম ধর্মে নারী - পুরুষ সকলের জন্য রোজা ফরজ। যদি শরীর সুস্থ্য থাকে এবং আপনি সফরে না থাকেন বা রোজা রাখতে কোন কষ্ট না হয় তাহলে আপনাকে অবশ্যই রোজা থাকতে হবে। কারন আল্লহর আদেশ প্রত্যেকটি মুসলিম বান্দার উপর রোজা ফরজ করেছেন। এবং এই রোজার প্রতিদান আল্লাহতায়ালা হাশরের ময়দানে নিজে দিবেন।


কিন্তু মহিলাদের রোজা সম্পর্কে কিছু মাসয়ালা আছে যা তাদের জনা অবশ্যক। নিচে মাসয়ালা গুলো বিস্তারিত দেওয়া হলো পড়তে থাকুন-
  • রোজা থাকা অবস্থায় কোন নারীর মাসিক হলে তার রোজা ভেঙ্গে যায়। এ অবস্থায় সে খাওয়া দাওয়া করতে পারবে। তবে লোক চক্ষুর আড়ালে রোজাকে সন্মান দিয়ে খাওয়াটাই উত্তম হবে।(ফাতাওয়া হক্কানিয়া : ৪/১৯০)
  • কোন নারীর যদি ফজরের আগে মাসিক শুরু হয়ে যায় তাহলে ওই নারীর দিনের বেলা খাওয়া দাওয়া করতে পারবে।(আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৪২৮)
  • অনেক মহিলা মাসিক বন্ধ রাখার জন্য বড়ি খান । এতে যদি তাদের শরীরের কোন অসুবিধা না হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই।
  • রোজা রাখা অবস্থায় নবজাতক শিশুকে বুকের দুধ পান করালে রোজা নষ্ট হয় না। রোজা অবস্থায় বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো যাবে। (ফাতাওয়া দারুল উলুম : ৬/৪০৮)
  • রমজানের রাতে গোসল ফরজ হলেও কোন কারনে গোসল করতে না পারলে রোজা রাখা যাবে কোন অসুবিধা হবে না। তবে ফরজ গোসল দ্রুত করাই উত্তম।
  • বাচ্চা জন্ম দেয়ার পর প্রসূতি অথবা রুগ্ন দুর্বল মহিলা, যে রোজা রাখতে পারে না, এমতাবস্থায় তার পক্ষে ফিদইয়া দেয়া যথেষ্ট নয়। যদি ফিদইয়া দিয়ে দেয় এবং পরে সুস্থ হয় এবং রোজা রাখার সক্ষমতা এসে যায়, তাহলে ওই রোজার কাজা করা জরুরি। (ফাতাওয়া দারুল উলুম : ৬/৪৭৮) ফয়জুল আল আমীন
  • গর্ভবর্তী বা স্তন্যদানকারিনী রোজাদার মহিলার যদি রোজা রাখার কারণে বাচ্চার বা তার প্রাণহানি মা মারাত্মক স্বাস্থ্যহানির প্রবল আশঙ্কা হয়, তবে রোজা ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ; অন্যথায় জায়েজ হবে না।
  • হায়েজ, নেফাস অবস্থায় কোরআন শরিফ স্পর্শ করা যেমন জায়েজ নয় অনুরূপভাবে কোরআনের আয়াত কোথাও লেখা থাকলে তাও স্পর্শ করা জায়েজ নয়। তবে যদি এমন কোনো কিতাব হয় যার মধ্যে কোরআনের আয়াত অপেক্ষা অন্য কোনো লেখা বেশি থাকে তাতে হাত লাগানো যাবে, তবে আয়াতের ওপর হাত লাগানো যাবে না।

রোজা অবস্থায় যা বৈধ

আমরা অনেক কিছু জানি না যে রোজা অবস্থায় কি কি বৈধ। রোজা অবস্থায় এমন কিছু কাজ করি যা আমরা জানি অবৈধ। আসলে তা না। আমাদের সঠিক তথ্যটি জানতে হবে রোজা অবস্থায় কি কি কাজ করা বৈধ। নিচে দেওয়া হলো পড়তে থাকুন-
  • রোজা অবস্থায় মেসওয়াক বা দাঁতন করা যাবে ।
  • রোজা অবস্থায় পুকুরে গোসল করা যাবে এবং ডুব দেওয়া যাবে।
  • রোজা অবস্থায় চোখে সুরমা লাগানো যাবে
  • রোজা অবস্থায় শরীরে তেল মহলম এবং ক্রিম ব্যবহার করা যাবে।
  • রোজা অবস্থায় স্বামী স্ত্রী এক বিছানায় শুয়ে থাকা যাবে এবং প্রেমালাপ করা যাবে।
  • দেহে দূষিত রক্ত বহিষ্করণ করা যাবে।
  • রক্ত দান করা যাবে।
  • দাঁত তোলা যাবে।
  • আহারের কাজ দেইনা এমন ইনজেকশন ব্যবহার করা যাবে।
  • মাথা ন্যাড়া করা যাবে।
  • হাত পায়ের নখ কাটা যাবে।
  • সুগন্ধীর শুভ্রাণ নেওয়া যাবে।
  • রোজা অবস্থায় মুখে থুতু গিলে খাওয়া যাবে এবং ফেলে দেওয়া যাবে।
  • রোজা অবস্থায় ঘুমানো যাবে দিনের বেলায়।
  • স্ত্রীলোকের দিকে তাকানোর কারণে কোনো কসরত ছাড়া বীর্যপাত হলে।
  • ঘুমের মাঝে স্বপ্নদোষ হলে।
  • রোজা অবস্থায় সফর করা যাবে।
  • রোজা অবস্থায় কুলি করা যাবে কিন্তু গরগরা সহকারে না এবং নাকে পানি নিয়া যাবে।
  • রোজা অবস্থায় তরকারি বা মিষ্টি জিনিষ চাকা যাবে। কিন্তু চাকার পরে কুলি করবেন।
  • দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা গোশত খেয়ে ফেললে (যদি পরিমাণে কম হয়), পরিমাণ বেশি হলে রোজা ভেঙে যাবে।

যেসব কারনে রোজা নষ্ট বা বাতিল হয়

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা আমরা হয়তো অনেকেই জানি না যে কি কি কারনে রোজা নষ্ট হতে পারে। আজ আমরা সঠিক ভাবে জানবো যে কি কি কারনে রোজাদারের রোজা নষ্ট হয়ে যায়।যেসব কারনে রোজা নষ্ট বা বাতিল হয়।
  • দিনের বেলা স্ত্রী সহবাস করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • বীর্যপাত হলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • পানাহার করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • ইচ্ছা কৃত মুখ ভলে বমি করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • অঙ্গান হলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • মেয়েদের হায়েজ নেফাস হলে মেয়েদের রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • নিয়ত বাতিল করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • ইসলাম ত্যাগ করলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে।
  • কোন কারনে নাক দিয়ে রক্ত মুখে চলে আসলে রোজা ভেঙ্গে যায়।
  • ওজু করার সময় মুখে পানি দিয়ে গরগরা করায় গলার ভিতরে পানি চলে গেলে রোজা নষ্ট হয়।
  • কোন নারীর যদি ইফতারের আগে মাসিক হয় তাহলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে।
  • মুরতাদ্দ হলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়।
  • শরীর থেকে দূষিত রক্ত বের হলে যদি রোজা নষ্ট হয়ে যায়।

শেষ কথা

প্রিয় মুসলিম বোনেরা আপনারা অবশ্যই বুঝতে পারলেন যে মহিলাদের নামাজ রোজার বিধান কি। আসলে আমরা অনেক মুসলিম নামাজ পরি রোজা থাকি কিন্তু হাদিস কোরআনে সেই নামাজ রোজার কিছু বিধান আছে সেগুলো জানি না। আজ আমরা এই পোষ্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে অনিয়মিত মাসিক হলে রোজা হবে কি হবে না তা আমরা জানতে পারলাম। 

আশা করি প্রিয় ভাই ও বোনেরা পবিত্র মাহে রমজানে সকল মুসলিম ভাই ও বোনেরা চেষ্টা করবেন রোজা রাখার এবং নামাজ পড়ার। কারন নামাজ রোজার মাধ্যমে আপনার জীবনের পাহাড় পরিমান গুনাহ গুলো আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দিবেন। 

এবং হাশরের ময়দানে আল্লাহ নিজের হাতে তার রোজাদার বান্দাদের পুরষ্কার দিবেন। আমাদের এই পোষ্টে কোন ধরনের ভুল থাকলে দয়া করে মাফ করে দিবেন এবং ভালো লাগলে পরিচিত বোনদের মধ্যে সেয়ার করে দিবেন।

রোজা নিয়ে কিছু ছোট প্রশ্ন ও উত্তর জেনে নিন

রোজা না রাখলে কি হয়?
আপনার শরীর যদি অসুস্থ্য থাকে এবং রোজা রাখতে যদি আপনার অনেক কষ্ট হয় তাহলে প্রত্যেক রোজার জন্য এক ফিতরা পরিমাণ কাফফারা দেবে। মানে একটা মিসকিন কে দুই বেলা পেট ভরে খাবার দিতে হবে। আর আপনার শরীর ভালো থাকলে তো আপনাকে অবশ্যই রোজা রাখতে হবে। 

কারন রোজা মুসলমানদের উপর ফরজ করেছেন আল্লহ তায়ালা। আর রোজা না রাখলে আপনার জন্য বিশাল গুনাহের কারন হবে। এই জন্য আপনাকে প্রত্যেক টা রোজার জন্য কাফফারা বা ফিদিয়া দিতে হবে।

পিরিয়ড হলে কি রোজা ভাঙ্গে?
হ্যা । পিরিয়ড হলে রোজা ভেঙ্গে যায়।

রোজার মূল উদ্দেশ্য কি?
রোজা রাখার উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা, পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা এবং নিজেদের কামনা-বাসনা নিয়ন্ত্রণের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পরহেজগারি বা তাকওয়া বৃদ্ধি করা।

রোজা কী ও কেন?
সুবহে সাদেক বা ভোরের সূক্ষ আলো থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার,পাপাচার, কামাচার এবং সেই সাথে যাবতীয় ভোগ-বিলাস থেকেও বিরত থাকার নাম রোযা।

শরীর থেকে রক্ত বের হলে কি রোজা ভেঙে যায়?
উত্তর : রোজা অবস্থায় শরীর থেকে রক্ত বের হলে রোজা ভাঙে না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

msta2z.comব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url