দাঁতের ব্যথায় করনীয় ঔষধ ঘরোয়া (বিস্তারিত জানুন)
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় ভাই ও বোনেরা। নিশ্চয় আপনারা আল্লাহর রহমতে সকলেই ভালো আছেন। হঠাৎ দাঁতের ব্যাথা হলে, ঘরোয়া ভাবে ব্যাথা কমাতে কি করতে হবে তা অনেকরই জানা নেই। আজ আমরা দাঁতের ব্যথায় করনীয় ঔষধ ঘরোয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো এই আরর্টিকেল। এই আরর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালো করে পরবেন তাহলে দাঁতের ব্যাথায় করনীয় ঔষধ ঘরোয়া বিষয় নিয়ে ভালো করে জানতে পারবেন।
ছোট বাচ্চা থেকে বড় মানুষ মানুষ সকলেই প্রায় দাঁতের ব্যাথায় ভোগেন। দাঁতের যখন অসহ্য ব্যাথা হয় সকলেই তখন এই ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে চায়। দাঁতের ব্যাথা কমানোর ঘরোয় কিছু টিপ্ স জানা থাকে তাহলে আমরা সহজেই দাঁতের ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে পারি। এ ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কোন পেইনকিলার ব্যাবহারের আগে ঘরোয়া টোটকা গুলো ব্যাবহার করতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক দাঁতের ব্যথায় করনীয় ঔষধ ঘরোয়া।
কোন ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়?
কোন ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়? দাঁতের সঠিক যত্ন নেওয়া প্রয়োজন সকলেরই। অনেক সময় ভিটামিনের অভাবে দাঁতে পোকা লাগে, দাঁত মুরমুরে হয়ে ভেঙ্গে যায়, দাঁতের গোড়া ফুলে উঠে প্রচন্ড ব্যাথা করে। এমন কিছু ভিটামিন এবং মিনারেল রয়েছে যা দাঁতকে ভালো রাখে এবং দাঁতের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরে ভিটামিনের অভাবে মারির দাঁতের সমস্যা তৈরী করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়?
কোন ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়? উত্তরঃ ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-সি, ভিটামিন- ডি এবং ভিটামিন-কে। এই জাতীয় ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মারি ফুলে যায় এবং দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যাদের দাঁতের মারি ফুলে যায় এবং দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা হয় তাদেরকে এই জাতীয় ভিটামিন গুলো বেশি করে খেতে হবে। শুধু যে মাছ ও মাংসে এই ভিটামিন থাকে তা নয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন খাবারে এই ভিটামিন গুলো থাকে।
ভিটামিন-এ
ভিটামিন -এ জাতীয় খাবার গুলো খেলে আমাদের দাঁতের মারি সত্যিই ভালো থাকে। ভিটামিন-এ মুখের লালার প্রবাহকে ভালো রাখে। শাকসবজি, গাজর, কুমরা, মিষ্টি আলু, টমেটো, লাল মরিচ, মাছ, দুধ জাতীয় খাবার, কলিজা, আম ইত্যাদিতে ভিটামিন-এ প্রচুর পরিমানে আছে।
ভিটামিন-বি
ভিটামিন-বি মুখের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে। ভিটামিন-বি মুখের ঘা এবং দাঁতের মারির ঘা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। মাংস, সবুজশাক-সবজি, মটরশুটি,কলা, কাজু, মিষ্টি আলু, পালংশাক, বাদামের মাখন, ছোলা, ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমান ভিটামিন-বি পাওয়া যায়।
ভিটামিন-সি
শরীরে ভিটামিন-সি জাতীয় খাবার গুলো খেলে দাঁতের মাড়িকে মজবুত রাখে এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রামন থেকে দাঁতের মাড়িকে মুক্ত রাখে। ভিটামিন- সির অভাবে দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পরে। ভিটামিন-সি জাতীয় খাবার গুলো হলো- কমলা, মাল্টা, আঙ্গুর, পেঁপে, লেবু, আনারস, জাম, পেয়ারা, আমলকি, কাঁচামরিচ ইত্যাদে প্রচুর পরিমান ভিটামিন-সি আছে।
ভিটামিন-ডি
ভিটামিন- ডি শরীরের স্বাস্থ্যকর হাড় এবং দাঁতের জন্য বেশ উপকারি। মাড়ির দাঁত মজবুত রাখার জন্য ভিটামিন-ডির প্রয়োজন। শরীরে ভিটামিন-ডি অভাব হলে মাড়ির বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক ভিটামিন-ডি জাতীয় খাবার গুলো কি কি- সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন-ডি ভালো পাওয়া যায়, প্রত্যেক দিন সকালে ১০-১৫ মিনিট সূর্যের আলোতে বসে থাকলে অনেকটা ভিটামিন ডির অভাব পূরন হয়ে যায়। তাছারাও মাছ, ডিম, দই, পনির, গরুর কলিজা, মাশরুম ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমান ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
ভিটামিন-কে
ভিটামিন কে’য়ের অভাব হলে নানান স্বাস্থ্যঝুঁকি, হাড়ের দুর্বলতা, হাড়ে খনিজের স্বল্পতা, হৃদরোগ, অস্টিয়োপোরোসিস, দাঁতের ক্ষয়, রক্তপাত, রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা ইত্যাদি দেখা দেয়।ভিটামিন-কে জাতীয় খাবার গুলো হলো-সয়াবিন, পালংশাক, ব্রকলি, লেটুস, কপি, শালগম, গাজর, বেদেনার রস, এবং সবুজ-শাকসবজিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-কে পাওয়া যায়।
দাঁতের ব্যথায় করনীয় ঔষধ ঘরোয়া?
দাঁতের ব্যথায় করনীয় ঔষধ ঘরোয়া? দাঁতের ব্যাথা হওয়ার জন্য বেশি বয়স লাগে না। ৪ বছর বয়স থেকে ৭০ বছর বয়সের মানুষের দাঁতের ব্যাথা হতে পারে। দাঁতে পোকা লাগা, দাঁতের গোড়া ক্ষয়ে গেলে, দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে বা স্নয়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে দাঁতের প্রচুর যন্ত্রনা হয় তার সাথে মাথা ব্যাথা, চোখের ভ্রু ব্যাথা, চোখ ব্যাথা শুরু হয়। এই অবস্থায় দ্রুত পেনকিলার ব্যাবহারের চেয়ে এমন কিছু ঘরোয়া টোটকা আছে যা সঠিকভাবে ব্যাবহার করলে দাঁতের ব্যাথা থেকে অনেকটাই আরাম পাবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক দাঁতের ব্যথায় করনীয় ঔষধ ঘরোয়া?
লবণ ও কুসুম গরম পানি
এক গ্লাস পানিতে এক চামুচ লবণ মিশিয়ে কুসুম গরম করে নিন। দিনে তিন বার কুসুম গরম পানি দিয়ে কুলি করবেন তাহলে দেখবেন দাঁতের ব্যাথা অনেকটা কমে গেছে।
লবণ, সরিষারতেল এবং লেবুর রস
সামান্য লবণ হাতের তালুতে নিয়ে তাতে সরিষার তেল কয়েক ফোটা এবং পরিমান মতো লেবুর রস নিয়ে হাতের আঙ্গুলে নিয়ে ব্রাশ করুন। এভাবে ব্রাশ করলে দাঁতের ব্যাকটেরিয়া ধংস হয়ে যাবে এবং ব্যাথা থেকে আরাম পাবেন। এভাবে সকালে এবং সন্ধ্যায় ব্রাশ করবেন।
রসুন ও লবণ
রসুনের রস এন্টিবায়োটিক ঔষধের মতো কাজ করে দাঁতের ব্যাথায়। দাঁতের ব্যাথায় কাঁচা রসুন ব্যাবহার করলে দাঁতের ব্যাকটেরিয়া দ্রুত ধংস করে দেয় এবং ব্যাথা দ্রুত ভালো করে দেয়। এক কোয়া রসুন নিয়ে থেতো করবেন এবং তাতে সামান্য লবণ দিয়ে যেখানে দাঁতের ব্যাথা হচ্ছে সেখানে কয়েকদিন ধরে লাগিয়ে রাখবেন ১-২ মিনিট ধরে। দেখবেন ব্যাথা অনেকটা ভালো হয়ে গেছে।
অ্যালোভেরা জেল
কাঁচা টাটকা অ্যালোভেরা জেল নিয়ে দাঁতের ব্যাথার স্থানে লাগিয়ে রাখুন। যার ফলে দাঁতের জীবাণুকে নষ্ট করে ফেলবে এবং ব্যাথা ভালো করতে সাহায্য করবে।
ফিটকিরি
ফিটকিরি দাঁতের ব্যাথা ভালো করতে বেশ কার্যকরী ভৃমিকা পালন করে। ফিটকিরিতে দাঁত ব্যাথা ভালো করার প্রচুর পরিমান শক্তি আছে। যেখানে দাঁতের ব্যাথা সেখানে সামান্য ফিটকিরি নিয়ে লাগিয়ে রাখবেন দেখবেন ব্যাথা অনেকটা কমে গেছে। এভাবে নিয়মিত ব্যাবহার করবেন।
পেয়ারার পাতা
দাঁতের ব্যাথা কমাতে পেয়ারার পাতার রস বেশ ভালো কাজ করে। ২-৩ তিনটি পেয়ারার পাতা দুই গ্লাস পানিতে নিয়ে ভালো করে সিদ্ধ করবেন। সিদ্ধ হয়ে গেলে দেখবেন পানি হালকা লাল বর্ণের হয়ে গেছে। এই পানি টুকুন ছেকে কুসুম গরম অবস্থায় কুলি করবেন দেখবেন দাঁত ব্যাথায় ভালো ফলাফল পাবেন। তাছারাও কচি পেয়ারা পাতা চিবিয়ে খেলেও ভালো উপকার পাবেন।
ঠান্ডা খাবার খাবেন না
দাঁতের ব্যাথা হলে ফ্রিজের পানি, আইসক্রিম এবং কোমল পানীয় সহ মিষ্টি খাবার গুলো এরিয়ে চলতে হবে। এই খাবার গুলো খাওয়ার সাথে সাথে দাঁতের ব্যাথা দ্রুত বেরে যায়। এই জন্য দাঁতের ব্যাথা হলে এই খাবার গুলো এরিয়ে চলার চেষ্টা করবেন।
উপরের দেয়া ঘরোয়া টোটকা গুলো ব্যাবহার করে ও যদি দাঁতের ব্যাথা না কমে, তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ঔষধ সেবন করবেন। এখন আমরা এই আরর্টিকেল থেকে জানবো দাঁতের মাড়ি ব্যথা কমানোর ঔষধের নাম গুলো কি কি? চলুন জেনে নেওয়া যাক দাঁতের মাড়ি ব্যথা কমানোর ঔষধের নাম?
দাঁতের মাড়ি ব্যথা কমানোর ঔষধের নাম?
দাঁতের মাড়ি ব্যথা কমানোর ঔষধের নাম? প্রিয় ভাই ও বোনেরা মনে রাখবেন দাঁত ব্যাথা হলেই যে, সাথে সাথে ফার্মেসিতে গিয়ে ঔষধ কিনে খেতে হবে তা নয়। আগে ঘরোয়া টোটকা গুলো ব্যাবহার করবেন। তারপর ভালো রেজিষ্ট্রার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দাঁতের মারির ব্যাথার ঔষধ সেবন করবেন। অনেক সময় চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার সময় থাকে না সে অবস্থায় নিচের দেওয়া কয়েকটি ঔষধ দাঁত ব্যাথায় খাওয়া যাবে। দাঁতের পোকার ব্যাথা এবং দাঁতের মাড়ি ব্যথা কমানোর ঔষধের নাম?
- Tory-(টোরি)
- Fabetor-(ফ্যাবেটর)
- Etocox-(ইটোকক্স)
- Etorix -(ইটোরিক্স)
- Fanamic 250-(ফ্যানামিক 250)
উপরের দেওয়া দাঁত ব্যাথার ঔষধ গুলো খেয়ে হয়তো স্বল্প সময়ের জন্য ব্যাথা ভালো হতে পারে। এমন কিছু দাঁত ব্যাথা আছে যে ব্যাথা গুলো উপরের দেওয়া ঔষধ গুলো খেয়ে নাও ভালো হতে পারে। এর জন্য আপনাকে রেজিষ্ট্রার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এবং দাঁত ব্যাথার এন্টিবায়েটিক খেতে হতে পারে। নিচে কয়েকটি দাঁত ব্যাথার এন্টিবায়েটিক ঔষধের নাম দেওয়া হলো।
দাঁত ব্যথার এন্টিবায়োটিক?
দাঁত ব্যথার এন্টিবায়োটিক? এমন কিছু দাঁত ব্যাথা আছে যে গুলো এন্টিবায়েটিক বা নরমাল ঔষধ খেয়েও দাঁত ব্যাথা ক্ষনিকের জন্য ভালো হয়। দাঁতের ব্যাথা বিভিন্ন কারনে হয় যেমন, ক্যাভিটি হলে, দাঁতের গোড়ায় পাথর জমে গেলে, দাঁতের মাড়ি ফুলে গেলে, দাঁতের গোড়ায় এবসেস হলে, মাড়িতে ইনফেকশান হলে এবং দাঁত ভেঙ্গে গেলে দাতের ব্যাথা হয়। মনে রাখবেন. দাঁতের ব্যাথা হলে গায়ে হালকা জ্বর, মাথা ব্যাথা, চোয়াল ফুলে যেতে পারে। দাঁত ব্যথার এন্টিবায়োটিক?
দাঁতে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে দাঁতের ভেতরের অংশ ভেঙ্গে যায় বা নষ্ট হয়ে যায় এবং দাঁতের গোড়ায় ইনফেকশন হয় তখন প্রচুর পরিমান ব্যাথা হয়। এই ব্যাথা নরমাল ট্যাবলেট এবং ঘরোয়া কোন টোটকা দিয়ে ভালো করা যায় না। তখন এই ধরনের ব্যাথা কমানোর জন্য সেফুরক্সিম ৫০০/ ২৫০ মিলিগ্রাম এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেটটি ডাক্তার দিয়ে থাকেন। মনে রাখবেন, যে কোন দাঁত ব্যাথা হোক বা শরীরের অন্য কোন স্থানের ব্যাথা হোক অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেবন করতে হবে।
পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়?
পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়? প্রিয় ভাই ও বোনেরা দাঁতের পোকা বলে কোন জিনিষ হয় না। এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া ডেন্টাল বা দাঁতের ক্ষয় রোগের জন্য দায়ি। বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের দাঁতে এই সমস্যা দেখা দেয়। বড়দের ও এই সমস্যা হয়। এইজন্য মিষ্টি জাতীয় খাবার গুলো যেমন, চিনি, মিষ্টি, চকলেট, চুইনগাম, কান্ডি ইত্যাদি খাবার গুলো খেয়ে পেপসুডেন্ট দিয়ে দাঁত ভালো করে ব্রাশ করে নিতে হবে। এই ধরনের খাবার গুলো খেয়ে দাঁত সাথে সাথে
ব্রাশ করে না নিলে মুখে এক ধরনের অ্যাসিড তৈরী হয় যা দাঁতের উপর ধিরে ধিরে দাঁতের উপর শক্ত এনামেল তৈরী করে এবং দাঁত ক্ষয় হতে থাকে। দাঁত ক্ষয় হতে হতে এক সময় দাঁতের গোড়া গর্ত হয়ে মাংসে ইনফেকশন হয়। যে কোন খাবার খেলে দাঁত শিরশির করে এবং ব্যাথা করে। এরকম অবস্থায় কিভাবে ব্যাথা কমবে তা আমাদের জানা অতি জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়?
পোকা দাঁতের ব্যথা প্রতিরোধ এবং প্রতিকার
দাঁতের এ রকম সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে দাঁতের গোড়ায় কালো গর্ত জায়গাটি ভর্তি বা ফিলিং করে নেওয়া উচিত। তারাতারি ভর্তি বা ফিলিং না করলে ধিরে ধিরে আরো গভির হয়ে যাবে অথবা পাল্প চেম্বার পর্যন্ত চলে যাবে। এতে ব্যাথা আরা তীব্র হতে থাকবে। যার ফলে চিকিৎসা ব্যাবস্থাও দিনে দিনে জটিল হয়ে যাবে। ভাঙ্গা বা গর্ত দাঁত এখন বর্তমানে ফিলিং ম্যাটেরিয়াল বা লাইটকিউর দিয়ে সুন্দর করে ভরাট করা যায়। এতে দাঁত গুলো অবিকল দেখাই।
- পোকা দাঁতের ব্যাথা কমাতে ব্যালেন্সড ফ্লোরাইড টুথপেস্ট দিয়ে প্রতিদিন সকালে এবং রাতে খাওয়ার পরে দাঁত ব্রাশ করতে হবে।
- মিষ্টি জাতীয় খাবার গুলো খেয়ে সাথে সাথে ব্রাশ করতে হবে।
- চকলেট, মিষ্টি খাবার গুলো, চা, কফি, ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার গুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। খাওয়ার পরে ভালো করে ব্রাশ করে কুলি করতে হবে।
- তিন বেলা খাওয়ার পরে সুতা অথবা কাঠি দিয়ে ভালো করে দাঁতের ফাক গুলো পরিষ্কার করতে হবে।
- তাছারাও বছরে দুই বার নিবন্ধিত ডেন্টাল সার্জন দিয়ে দাঁত পরিক্ষা করানোর অভ্যাস গরে তুলতে হবে।
- এবং দাঁতের ব্যাথা হঠাৎ করে বেশি হলে উপরের দেওয়া ঘরোয়া উপায় গুলো ব্যাবহার করলেও ভালো ফলাফল পাবেন।
দাঁতের পোকা বের করার গাছ?
দাঁতের পোকা বের করার গাছ? আসলে দাঁতে কোন পোকা হয় না। আমরা দৈনন্দি যে খাবার গুলো খাই সে গুলো খাবার দাঁতের কোনায় আটকে থাকে বা ভিটামিনের অভাবে দাতের গোড়া ফুলে যায় যার ফলে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া হয়ে ধিরে ধিরে দাঁতের ক্ষয় হতে শুরু হয়। ফলে দাঁতের মাঝখানে কালো গর্ত হয়। এটাকে অনেকেই মনে করেন দাঁতে পোকা হয়েছে। দাঁতে এরকম কালো গর্ত হয়ে গেলে ব্যাথা হলে আকন্দ গাছের কষ দিলে দাঁতের ব্যাথায় ভালো ফলাফল পাবেন। দাঁতের পোকা বের করার গাছ?
আকন্দ গাছটি গ্রামে বা শহরে যে কোন জায়গাতে পাওয়া যায়। এই গাছটি রাস্তার পাশে বা ঘন বন জঙ্গলে হয়ে থাকে। এই গাছ গুলো কোন প্রকার যত্ন ছারাই বড় হয়। আকন্দ গাছের পাতা গুলো সবুজ এবং ফুল গুলো বেগুনি রঙ্গের হয়। এই গাছের পাতা, ফুল, ছাল, শিকর সবই ঔষধ তৈরীর জন্য কাজে লাগে। চলুন জেনে নেওয়া যাক আকন্দ গাছ দিয়ে কি কি উপকার হয়। জানতে হলে পড়তে থাকুন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।
- যখন দাঁতের প্রচন্ড ব্যাথা হবে তখন আকন্দ গাছের কষ তুলোয় নিয়ে দাঁতের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন। দেখবেন ২-৩ মিনিট পরে অনেকটা ব্যাথা কমে যাবে। তবে একটু কুট কুট করে ধরবে।সহ্য করতে হবে।
- শরীরের কোন জায়গাতে ঘা হলে বা ক্ষত হলে আকন্দ পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে পুজ বা ইনফেকশান হবে না।
- শরীরের যে কোন অংশ মচকে যাওয়ার ব্যাথা হলে আকন্দ পাতা গরম করে শেক দিলে ব্যাথা দ্রুত কমে যাবে।
- কোন বিষাক্ত পোকামাকর কামড়ালে আকন্দ পাতা বেটে রস লাগিয়ে দিলে দ্রুত ভালো হয়ে যাবে।
- শরীরে খোসা পচরা হলে আকন্দের আঠার সাথে সরিষার তেল মিশিয়ে গরম করে তার সাথে কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে লাগালে ভালো হয়ে যাবে।
- আকন্দের শিকড় বেটে রস করে খেলে খিদে বেড়ে যাবে তবে ২ গ্রামের বেশি খাওয়া যাবে না।
দাঁত ব্যথার কারণ?
দাঁত ব্যথার কারণ? বিভিন্ন কারনে দাঁত ব্যাথা হয়ে থাকে। আমাদের ভাষায়, আমরা মনে করি শুধু দাঁতে পোকা লাগলে দাঁত ব্যাথা হয় আসলে তা নয়। জানুন এই আরর্টিকেল থেকে কি কি কারনে দাঁত ব্যাথা হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক দাঁত ব্যাথার কারণ গুলো কি কি?
- দাঁত টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙ্গে গেলে, ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিংস হলে দাঁত ব্যাথা করে।
- ক্যাভিটিস এর কারনে দাঁত ব্যাথা করে। যেমন, ক্ষয় এনামেল দাঁতের গোড়া গর্ত হয়ে গেলে দাঁত প্রচুর ব্যাথা করবে।
- দাঁতের চারপাশে প্রদাহ ও পকেট তৈরীর কারনে মারি এবং দাঁতে ব্যাথা হয়। এটাকে বলা হয় মাড়ির রোগ।
- অনেক সময় শক্ত খাবার খাওয়ার সময় দাঁত ভেঙ্গে ফ্রাকচার হয়ে যায় এরকম দাঁত শিরশির করে এবং ব্যাথা করে।
- ক্লাস্টার মাথাব্যাথা হলে দাঁত ব্যাথা হতে পারে।
- হার্ট এ্যাটাক হলে চোয়ালে বিকিরণ তৈরী করে এবং দাঁত ব্যাথা হতে পারে।
- ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রনে রাখলে রক্তে শর্করা বেরে গিয়ে দাঁত ব্যাথা হয়।
- স্নায়ু রোগের কারনে দাঁতের মাড়ি এবং দাঁতের ব্যাথা হয়।
- ভিটামিনের অভাবে দাঁত ব্যাথা করে। বিশেষ করে ভিটামিন বি-১২ এর অভাবে দাঁত ব্যাথা করে।
- অনেকসময় ওষুধের অপব্যাবহারের জন্য ও দাঁত ব্যাথা হতে পারে।
দাঁতের ব্যাথা থেকে বাঁচতে চাইলে করণীয়?
দাঁতের ব্যাথা থেকে বাঁচতে চাইলে করণীয়? যাদের দাঁত ভালো আছে তাদের দাঁতের ব্যাথা যেন না হয় সে জন্য নিচের দেওয়া নিয়ম গুলো এখন থেকে মেনে চলুন দেখবেন কোন দাঁত ব্যাথা হবে না। চলুন জেনে নেওয়া যাক দাঁতের ব্যাথা থেকে বাঁচতে চাইলে করণীয়?
- রাতে খাওয়ার পরে এবং সকালে নাস্তা করার পরে ব্রাশ করবেন। এবং ভালো করে কুলি করবেন যেন দাঁতের ফাকে কোন খাবার না আটকে থাকে।
- রাতে সোয়ার আগে যদি পারেন একবার হলেও ডেন্টাল ফ্লাস ব্যাবহার করবেন। এতে দাঁত জীবাণু মুক্ত থাকবে।
- যখনই কোন মিষ্ট বা আঠালো মিষ্টি জাতীয় খাবার খাবেন সাথে সাথেই বেশি করে পানি পান করবেন এবং ব্রাশ করে ভালো করে কুলি করে নিবেন।
- জর্দ্দা, সাদাপাতা, অ্যালকোহল, ধুমপান করবেন না। এতে দাঁতের আরো বেশি ক্ষতি হয়। এসব থেকে দুরে থাকবেন। মনে রাখবেন এসব খাবারের চেয়ে আপনার দাঁত বেশি মূল্যবান।
- ভাজা পোড়া জাতীয় খাবার গুলো থেকে দুরে থাকতে হবে।
- মাঝে মাঝে সরিষার তেল এবং লবণ দিয়ে দাঁত মাজবেন। এতে দাঁত এবং দাঁতের গোড়া মজবুত থাকবে।
- তাছারাও বছরে দুই বার নিবন্ধিত ডেন্টাল সার্জন দিয়ে দাঁত পরিক্ষা করানোর অভ্যাস গরে তুলতে হবে।
আপনার মূল্যবান দাঁতের যত্ন আপনি নিজেই নিতে পারবেন। এবং দাঁতকে ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন। এতে আপনার দাঁত ও ভালো থাকবে এবং অসহ্য দাঁতের ব্যাথার কষ্ট ও আপনাকে ভোগ করতে হবে না। সকলেই ভালো থাকবেন ধন্যবাদ।
FAQ । দাঁতের ব্যথায় করনীয় ঔষধ ঘরোয়া?
কি করলে দাঁতের রক্ত পড়া বন্ধ হবে?
উত্তরঃ ভিটামিন-কে জাতীয় খাবার গুলো বেশি করে খাবেন তাহলে দাঁতের রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যাবে। রক্ত জমাট বাধতে ভিটামিন-কে দ্রুত কাজ করে।
দাঁত তোলার পর কতটুকু রক্ত যায়?
উত্তরঃ দাঁত তোলার পর সাধরনত দুই দিন রক্ত যেতে পারে। তার পর আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যায়। তবে এ ব্যাপারে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করলে ভালো হবে।
কোন খাবার দাঁতের জন্য ক্ষতিকর?
উত্তরঃ মিষ্টি জাতীয় খাবার এবং অ্যাসিডিক খাবার গুলো আপনার দাঁতের জন্য বেশি ক্ষতিকর। এসব খাবার খেলে সাথে সাথে দাঁত পরিষ্কার করে নিবেন।
মাড়ি ফুলে গেলে কোন ঔষধ ভালো?
উত্তরঃ মাড়ি ফুলে গেলে আপনি আপনি অ্যাসপিরিন, অ্যাসিটামিনোফেন, বা আইবুপ্রোফেনের মতো ব্যথা উপশমক ব্যবহার করতে পারেন। আপনি আপনার স্থানীয় ওষুধের দোকানে এগুলি খুঁজে পেতে পারেন। আরও কার্যকারিতার জন্য, আপনি অন্যান্য ঘরোয়া চিকিত্সার সাথে ব্যথানাশকগুলিকে একত্রিত করতে পারেন।
কোন ঔষধ খেলে মাড়ির সমস্যা হয়?
উত্তরঃ যে ঔষধ গুলো খেলে মাড়ির সমস্যা হয় সেগুলো হলো- মৃগী রোগের ওষুধ, সাইক্লোস্পোরিন (অঙ্গ প্রতিস্থাপন প্রত্যাখ্যানের ওষুধ), কিছু রক্তচাপের ওষুধ এবং ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার। এই ঔষধ গুলো খাওয়ার পরে মুখের স্বাদ ও পরিবর্তন হতে পারে।
লেখকের শেষ কথাঃ দাঁতের ব্যথায় করনীয় ঔষধ ঘরোয়া
প্রিয় পাঠক আজ আমরা এই আরর্টিকেল থেকে জানতে পারলাম, কোন ভিটামিনের অভাবে দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়, দাঁতের ব্যথায় করনীয় ঔষধ ঘরোয়া, দাঁতের মাড়ি ব্যথা কমানোর ঔষধের নাম, দাঁত ব্যথার এন্টিবায়োটিক, পোকা দাঁতের ব্যথা কমানোর উপায়, দাঁতের পোকা বের করার গাছ, দাঁত ব্যথার কারণ?,দাঁতের ব্যাথা থেকে বাঁচতে চাইলে করণীয়?, এবং FAQ ইত্যাদি নিয়ে আমরা বিস্তারিত জানতে পারলাম। ভালো ভালো পোষ্ট পেতে এই ওয়েবসাইডটি ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
msta2z.comব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url