মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত- জানুন সত্য হাদিস
মাটি ছারা তায়াম্মুমের নিয়মমহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত কি? আসসালামু আলাইকুম প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধমীয় উৎসব হলো ঈদুল ফিতর এবং আযহা। এই দুই ঈদেই মহিলা ও পুরষরা নামাজ আদায় করতে পারবে। পুষদের ঈদের নমাজ যে রকম ৬ তাকবীরে ২ রাকাত নামাজ পড়তে হয় আর মেয়েদের কিভাবে পড়তে হয় তা আমরা আজ এই আরর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আমাদের যে বোনেরা ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত জানেন না তারা আমাদের এই আরর্টিকেল থেকে জেনে নিন।
প্রতিবছর রমজান মাসের রোজা শেষে পালিত হয় পবিত্র ঈদুল ফিতর। মহান আল্লাহ তায়ালা দীর্ঘ এক মাস রোজার পরে তার বান্দাদের জন্য দিয়েছেন ঈদুল ফিতর এই ঈদকে রোজার ঈদ ও বলা হয়ে থাকে। আজ আমরা মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত সম্পর্কে জানবো। তো প্রিয় ভাই ও বোনেরা দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত এবং আরো বিষয়ে জানতে হলে আমাদের এই আরর্টিকেল টি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো। পড়তে থাকুন-
পেজ সূচিপত্রঃ মহিলা দের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম
ভৃমিকা
রমজানুল মোবারকের চাঁদ শেষ হয়ে শাওয়ালের নতুন চাঁদ উঠার পরদিন ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হয়। সূর্য
উদয়ের পর হতে দুপুরের পূর্ব পর্যন্ত ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের সময়। এই সময়ে ছেলে ও মেয়ে সবাই নামাজ আদায় করতে পারবে। কারন ঈদের নামাজ ছেলে ও মেয়ে সকলেরই উপর ওয়াজিব। ঈদুল ফিতরের ২ রাকাত নামাজ অতিরোক্ত ৬ তাকবীর সহ ( কোন কোন বর্ণনায় ৯ তাকবীর, কোনটিতে ১২ তাকবীর, আবার কোনটিতে ১৬ তাকবীরের কথাও আছে) পড়তে হয়। তো আমরা ৬ তাকবীরের রেওয়ায়েত সহজ হিসাবে গ্রহন করেছি।
ঈদের দিনে সুন্নাত কাজগুলোঃ *খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠা *মিসওয়াক করা *গোসল করা *সামর্থ অনুযায়ী উত্তম পোশাক পরিধান করা *চোখে সুরমা লাগানো *সুগন্ধী ব্যাবহার করা, তবে মেয়েদের না ব্যাবহার করাই উত্তম *নামাজের আগে কিছু মিষ্টি খাবার খাওয়া যেমন, খেজুর, খুরমা, সেমাই বা মিষ্টি ইত্যাদি *যথা শ্রিঘী নামাজের ময়াদানে যাওয়া *নামাাজ পড়তে যাওয়ার সময় তাকবীরে তাশরীক পড়তে পড়তে যাওয়া। উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ্ *নামাজের পূর্বে সদকায়ে ফিতর আদায করা।
মহিলারা কি ঈদের নামাজ ঘরে পড়তে পারবে
মহিলারা কি ঈদের নামাজ ঘরে পড়তে পারবে? ঈদের নামাজ পুরুষের জন্য ওয়াজিব এবং মহিলাদের জন্য সুন্নত। মেয়েরা ঈদের নামাজ আদায় করার জন্য খুৎবা শুনতে পারবে এবং ঈদগাহে যেতে পারবে। আবার মহিলারা ঈদের নামাজ ঘরে পড়তে পারবেন যদি কোন সমস্যা থাকে। তবে ঈদের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা অবশ্যক।কারন রাসুল (সাঃ) নারী ও পুরুষ সকলকে ঈদের নামাজ জামাতের সাথে পড়ার আদেশ দিয়েছেন। এমনকি ঋতুবর্তী নারীকেও ঈদগাহে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে ঋতু বর্তী অবস্থায় মেয়েরা নামাজ পড়তে পারবে না তারা দোয়া দরুদ মুখে মুখে পড়বে এবং খুৎবা শুনতে পারবে।
রাসুল (সাঃ) এর উদ্দেশ্য ছিল, নারী-পুরষ, ছোট বাচ্চা কেউ যেন ঈদ উদযাপনের আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয়। সুতরাং এই হাদিস থেকে বোঝা যাচ্ছে যে নারীদের ঈদের নামাজ আদায় করার জন্য সন্দেহাতীতভাবে জামাতে অংশগ্রহণ করা আবশ্যক। এটি প্রিয় নবীর সুন্নাহ। ঈদের দিন রাসুল (সাঃ) মসজিদের বাইরে খোলা জায়গাতে ঈদের জামাতের আয়োজন করতেন। কারন, নারী-পুরুষ সকলেই ঈদের নামাজ আদায় ও খুৎবা শুনতে পায়। উপরোল্লিখ বিষয় পড়ে জানা যাচ্ছে যে , আপনি যদি ঈদের নামাজ পড়তে চান তাহলে জামাতের সাথ আদায় করতে হবে।
তবে কোন বিশেষ কারন থাকলে বা জামাতে যেতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন সে অবস্থায় আপনি ঈদের নামাজ ঘরে পড়তে পারবেন। আর মেয়েরা ঘরে জামায়াত বদ্ধ ভাবে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন। তবে মহিলাদের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু ঈদের নামাজ আদয় করা সকলের জন্য ওয়াজিব। মহান আল্লাহ পাক আমাদের জন্য ঈদের আনন্দকে কল্যানকর করুন এবং নারী পুরুষ সকলকে ঈদের নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুন। আমিন। মহিলারা কি ঈদের নামাজ ঘরে পড়তে পারবে
ঈদুল ফিতর নামাজের নিয়ত
ঈদুল ফিতর নামাজের নিয়ত? ঈদের নামাজের নিয়ম বা নিয়ত পদ্ধতি অন্য নামাজের মতো না। আমার ঈদের নামাজ পড়ি সেই ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা নামাজের কোন ইকামত বা আজান নেই। আজান ছারাই ঈদের নামাজ পড়তে হয় দুই রাকাত করে । ঈদের নামাজে ৬ তাকবীর রয়েছে। আবার কোন কোন বর্ণনাতে ৯,১২,এবং ১৬ তাকবীরের কথাও বলা হয়েছে। আসলে আমরা ২ রাকাত করে ৬ তাকবীর দিয়ে ঈদের নামাজ পড়ি। তো বন্ধুরা জেনে নেওয়া যাক ঈদুল ফিতর নামাজের নিয়ত। পড়তে থাকুন-
ঈদুল ফিতর নামাজের নিয়ত (বাংলা উচ্চারন): নাও'য়া ইতু আন উসা'ল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাক য়াতা সা লাতি ঈ দিল ফিতর, মায়া ছি ত্তাতি তাকবীরাতি ওয়া'জি বু'ল্লাহি তায়ালা মুতাও''য়াজ্জিহান ইলা জিহা''তিল কাবাতিশ শা''রীফাতি আল্লাহু আকবার।
ঈদুল ফিতর নামাজের নিয়ত ( বাংলা অর্থ): আমি কেবলামুখী হয়ে ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ ছয় তাকবিরের সঙ্গে আদায় করছি।
ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত
ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত? ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা দুই ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। ঈদের নামাজ খোলা স্থানে বা খোলা জায়গাতে আদায় করা সুন্নত। কারন আমাদের রাসুল (সাঃ) খোলা জায়গাতে ঈদের নামাজ আদায় করতেন এবং নির্দেশনা দিয়েছেন।
আর খোলা জায়গার ব্যাবস্থা না থাকে বা ঝর-বৃষ্টি হয় সে রকম সমস্যায় মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করা যাবে কোন সমস্যা হবে না। ঈদের নামাজ যেহেতু দীর্ঘ সময় পর আসে সেজন্য অনেকেই ঈদের নামাজের নিয়ম বা নিয়ত ভুলে যায়। এই জন্য আমাদের এই আরর্টিকেলে আজ ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত, আরবী উচ্চারন সহ বাংলা অর্থ তুলে ধরা হলো- পড়তে থাকুন
ঈদুল আযহা নামাজের নিয়ত (বাংলা উচ্চারন): ‘নাও য়াইতু আন উছাল্লি য়া লি ল্লাহি তা আলা রাকয়া তাই ছালাতি ঈ দিল আযহা মাআ ছিত্তা তি তাকবী রাতি ওয়াজি বুল্লাহি তা আলা মুতাও য়াজ্জিহান ইলা জিহা তিল কাবা তিশ শারী ফাতি আল্লাহু আকবার।
ঈদুল আযহা নামাজের নিয়ত ( বাংলা অর্থ): আমি কেবলা মুখি হয়ে আল্লাহর উদ্দেশে ঈদুল আযহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ পরিতেছি। আল্লাহু আকবার।
মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত
মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত? রাসুল (সাঃ) নারী ও পুরুষ সকলকে জামাতের সাথে পর্দার সহিত নামাজ পড়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। রাসুল (সাঃ) পূর্ণ বয়স্ক নারী ও পুরুষ কে নামাজ পড়ার নির্দেশনা দিয়েছেন এবং ঋতুবর্তী নারীকেও ঈদের জামাতে শরীক হতে বলেছেন। তবে ঋতুবতী নারীদের কে নামাজ পড়া যাবে না কিন্তু দোয়া দরুদ পড়তে পারবে এবং খুৎবা শোনা যাবে। ঋতুবতী নারীরা যেন নামাজের জায়গা থেকে দুরে থাকে।(সহহী বুখারি: ১/৮৪) তো বন্ধুরা আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত সম্পর্কে। পড়তে থাকুন-
মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম
ঈদের নামাজ বছরে দুইবার পড়তে হয়। যার ফলে এই নামাজের নিয়ম কানুন গুলো অনেকই ভুলে যায়। ফলে নামাজের মধ্যেই এদিক সেদিক তাকা তাকি শুরু করেন অনেকেই। যে অন্যরা কিভাবে নামাজ আদায় করছে। এবং অন্যদের দেখে দেখে নামাজ পড়তে থাকেন। যার ফলে তাদের নামাজের প্রতি সে রকম মনোযোগ থাকে না।আর এভাবে অমনোযোগী নামাজ পড়লে নামাজ হবে না। ঈদের নামাজ কয় রাকাত পড়তে হবে, কত তাকবীর দিতে হবে এবং নামাজের নিয়ত কিভাবে পড়তে হবে, ঈদের নামাজ সুন্নত না নফল এরকম একটি চিন্তা ভাবনা সবার মাথায় চলে আসে। আসলে ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম খুবই সহজ। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
নারী ও পুরষ উভয়কে কোন ময়াদানে ( খোলা জায়গাতে) জামাতের সাথে ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে। এই নামাজের জন্য আজান ইক্বামতের প্রয়োজন নেই। এতে খুৎবা পাঠ করতে হয়। তবে খুৎবা নামাজের পড়ে পড়তে হয়। অন্যান্য নামাজের মতো প্রথমে নিয়ত করে তাকবীর তাহরীমা(আল্লাহুআকবার) বলে বুকে হাত বেঁধে ছানা পাঠ করতে হবে। ইমাম উচ্চস্বরে পরপর তিনটি তাকবীর বলবেন এবং মুক্তাদিগণ সহ প্রতি তাকবীরে কান পর্যন্ত হাত উঠাবেন আবার ছেড়ে দিবেন।অবশ্য শেষ তাকবীরের পর যথানিয়মে হাত বেঁধে ইমাম উচ্চস্বরে সূরা, কিরাত পাঠ করবেন।
আরো পড়ুনঃ ঈদুল ফিতরের নামাজের তাকবীর জেনে নিন
অতঃপর অন্যান্য নামাজের মত রুকুর সেজদা আদায় করে দ্বিতীয় রাকাতে দাঁড়িয়ে ইমাম উচ্চস্বরে সুরা, কেরাত পাঠ করবেন। অতঃপর রুকুতে যাওয়ার আগে পূর্বের রাকাতে নিয়মে অতিরিক্ত তিনটি তাকবীর বলবেন। তারপরে রুকুর সেজদা করতে হবে। বসে তাশহুদা, দরুদ পাঠ করবেন। তারপর সালাম ফিরানোর পর ইমাম দাঁড়িয়ে জুম্মার খুৎবার ন্যায় দুটো খুতবা পাঠ করবেন। এ খুৎবা আরম্ভ কালে জুম্মার খুৎবার মত আযান দিতে হয় না। খুৎবা পাঠ শেষে ইমাম হাত উঠিয়ে মুক্তাদিগনসহ মোনাজাত করবেন।
এভাবে ঈদের নামাজ শেষ করতে হয়। আর মহিলা এবং পুরুষ যেহেতু একই জামাতে নামাজ পড়তে পারবেন একই ইমামের পেছনে তাই মহিলা ও পুরুষের ঈদের নামাজের নিয়ম একই রকম।তো নামাজ যেহেতু দুই রাকাত । সে জন্য প্রথম এবং দ্বিতীয় রাকাতে কি সুরু কেরাত পড়তে হয় তা জেনে নিই। পড়তে থাকুন- মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম
ঈদের প্রথম রাকাত নামাজ
- তাকবীর তাহরিমা (আল্লাহু আকবার) একবার
- বুকে হাত বাধে ছানা পড়তে হবে- (সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুক)।
- পর পর তিনটি তাকবীর বলবেন। এবং প্রতি তাকবীরে কান পর্যন্ত হাত উঠাবেন এবং ছেরে দিবেন। শেষ তাকবীরে বুকে হাত বাধতে হবে।
- আউজুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ পড়তে হবে।
- সুরা ফাতিহার সাথে যে কোন ( আপনার যে সুরা জানা আছে) সুরা মিলিয়ে পড়বেন।
- অতঃপর নিয়মিত নামাজের মতো রুকু ও সিজদার মাধ্যমে প্রথম রাকাত শেষ করবেন।
ঈদের দ্বিতীয় রাকাত নামাজ
- বিসমিল্লাহ পড়া
- সুরা ফাতিহার সাথে আবার যে কোন সুুরা মিলিয়ে পড়া।
- সুরা মেলানোর পর অতিরিক্ত তিন তাকবির দেওয়া। প্রথম রাকাতের মতো দুই তাকবিরে উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠিয়ে ছেড়ে দেওয়া; অতঃপর তৃতীয় তাকবির দিয়ে হাত বাঁধা।
- তারপর রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাওয়া।
- সিজদা আদায় করে তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।
- ঈদের নামাজ পড়ার পর ইমাম খুৎবা দেবেন আর মুসল্লিরা খুৎবা মনোযোগের সঙ্গে শুনবেন।
দুই রাকাত ঈদের ওয়াজিব নামাজ ছয়টি অতিরিক্ত ওয়াজিব তাকবিরসহ আদায় করতে হয়। ঈদের নামাজের অতিরিক্ত ওয়াজিব তাকবিরে ভুল হলে অর্থাৎ তাকবির কম বা বেশি হলে অথবা বাদ পড়লে সাহু সিজদা প্রয়োজন নেই।
মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার হুকুম
মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার হুকুম? যখন থেকে মুসলমানদের ঈদের নামাজ পড়ার বিধান নাযিল হয় তখন মুসলমানদের সংখ্যাধিক্য প্রকাশ করার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদগাহে মহিলাদের ও উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। হযরত উম্মে আতিয়াহ (রাঃ) বলেন, ঈদের দিন আমাদেরকে বের হওয়ার আদেশ দেওয়া হতো আমরা কুমারী মেয়েদের এমন কি ঋতুবতি মহিলাদের ঘর থেকে বের করতাম। অতঃপর পুরুষদের পেছনে থেকে তাদের তাকবীরের সাথে সাথে তাকবির পড়তাম
এবং তাদের দোয়ার সাথে সাথে আমরাও ওই দিনের বরকত ও পবিত্রতা লাভের দোয়া করতাম। (বুখারী: ৯৭১) ঈদের জামাতে নারীদের অংশগ্রহন সম্পর্কে প্রিয় নবী (সাঃ) অনুমোদন দেননি বরং নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে তা ওয়াজিব। বাধ্যতামুলক করা হয় নি কিন্তু তাগিদ দেওয়া হয়েছে। রাসুল (সাঃ) এর যুগে মহিলাদের মসজিদে এসে জামাতে নামাজ পড়ার সু ব্যাবস্থা ছিল। তখন নিয়ম ছিল প্রথম কাতারে পুরুষ এবং পরের কাতারে বাচ্চা ছেলেরা এবং তার পরে মহিলারা নামাজ পড়তে দাড়াতেন।কিন্তু মহিলারা উচ্চ শব্দে কথা বলতে নিষেধ ছিল।
পরবর্তিতে মহিলাদের উপর পর্দার হুকুম নাযিল হয় তারপরে মহিলারা আর মসজিদে আসতে নিরুৎসাহিত হয়।রাসুল (সাঃ) বলেছেন, তোমরা আল্লাহর দাসিদের কে মসজিদে আসতে বাধা দিওনা। তবে তাদের জন্য নিজ ঘর বাড়িই উত্তম স্থান। (আবু দাউদ, ৫৬৭) বর্তমানে আমাদের দেশে ঈদগাহ গুলোতে ঈদের দিন নামাজ পড়ার জন্য পর্দার কোন ব্যাবস্থা নেই। যার ফলে মহিলারা নামাজ প ড়তে পারে না। কিন্তু মহিলারা বাড়িতে ই জামাতের সাথে নামাজ আদায় করেন। মহিলাদের নামাজ পড়ার জন্য ঈদগাহে পর্দার ব্যাবস্থা না করলে এতে ফেৎনা - ফ্যাসাদ এর সৃষ্টি হবে।
এই কারনে মহিলাদের ঈদগাহে নামাজ না পড়াই উত্তম। তারা বাড়িতে যেভাবে সকল মহিলারা জামাত মতো নামাজে আদায় করে সেটাই ভালো। তবে নারীদের জন্য ঈদের জামাতে নামাজ পড়ার আলাদা কোন ব্যাবস্থা করে সেক্ষেত্রে নারীরা ও ঈদের জামাতে অংশগ্রহন করতে পারবে। প্রিয় ভাই ও বোনেরা আজ আমরা এই আরর্টিকেল থেকে মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার হুকুম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলাম। আল্লাহ তায়ালা সকল নারীদের কে ঈদের নামাজ পর্দার সাথে এবং জামাতের সাথে পড়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।
মহিলাদের ঈদের নামাজ কত রাকাত
মহিলাদের ঈদের নামাজ কত রাকাত? মহিলাদের উপর ঈদের নামাজ ওযাজিব নায় বরং সুন্নত। কারন মহিলাদের ঈদের নামাজ বাধ্যতামুলক নয়। মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়লে সওয়াব আছে না পড়লে কোন গুনাহ নেই। এই জন্য মহিলাদের জন্য ঈদের নামাজ সুন্নত। মহিলারা ঈদগাহে মুসলমানদের সাথে নামাজ আদায় করতে পারবেন। কারন নবী (সাঃ) তাদের কে সেই নির্দেশ দিয়েছেন। আজ আমরা এই আরর্টিকেলে হাদিস মোতাবেক জানব যে মহিলাদের ঈদের নামাজ মোট কত রাকাত। চলুন জেনে নেওয়া যাক মহিলাদের ঈদের নামাজ কত রাকাত
রমযানুল মোবারকের চাঁদ শেষ হয়ে শাওয়ালের নতুন চাঁদ উঠার পরদিন ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হয়। সূর্য
উদয়ের পড় হতে দুপুরের আগ পর্যন্ত ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করা যাবে। ঈদুল ফিতরের মোট দুই রাকাত নামাজ। অতিরোক্ত ৬ তাকবীর সহ পড়তে হয়। কেউ কেউ আবার ৯, ১২, ১৬ তাকবীর দিয়ে পড়ে। ঈদের নামাজ মহিলা এবং পুরুষের আলাদা আলাদা নেই। মহিলাদের ও দুই রাকাত নামাজ এবং ছেলেদেরও দুই রাকাত নামাজ। তো বন্ধুরা আমাদের এই আরর্টিকেলে আপনারা জানতে পারলেন যে, মহিলাদের ঈদের নামাজ কত রাকাত।
ঈদুল ফিতরের দিন কয়টি কাজ ওয়াজিব
ঈদুল ফিতরের দিন কয়টি কাজ ওয়াজিব? প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ঈদুল ফিতরের দিন ২ টি কাজ করা ওয়াজিব। ১. ঈদের নামাজে যাওয়ার আগেই ফিতরার টাকা পরিশোধ করা এবং ২. ঈদের ২ রাকাত নামাজ ৬ তাকবীরের সাথে আদায় করা। ঈদুল ফিতরের দিনে মুসলমানের জন্য এই কাজ গুলো করা ওয়াজিব।
মহিলাদের ঈদের নামাজ না পড়লে কি গুনাহ হবে
মহিলাদের ঈদের নামাজ না পড়লে কি গুনাহ হবে? পুরুষদের উপর ঈদের নামাজ ওয়াজিব কিন্তু মহিলাদের উপর সুন্নত। এই কারনে মহিলাদের ঈদের নামাজ বাধ্যতামুলক নয়। যেহেতু মহিলাদের উপর ঈদের নামাজ সুন্নত সেহেতু ঈদের নামাজ পড়লে সওয়াব আছে কিন্তু না পড়লে কোন গুনাহ নেই।সব ওলামায়ে কেরামদের ঐকমত্যে ঈদের নামাজে নারীদের অংশগ্রহণ করা ওয়াজিব নয়। সুতরাং যদি তাঁরা অংশগ্রহণ না করেন, গুনাহগার হবেন না।
মহিলাদের ঈদের নামাজ আছে কি
মহিলাদের ঈদের নামাজ আছে কি? মহিলাদের উপর ঈদের নামায ওয়াজিব নয়। না বাড়িতে পড়া ওয়াজিব, না মসজিদ বা ঈদগাহে।জুমআ ও ঈদের নামায শুধুমাত্র পুরুষদের উপর আবশ্যক।তবে যদি তারা পর্দার সাথে ও পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তার সাথে ঈদের নামায আদায় করে ফেলে তবে আদায় হবে।কিন্তু এটা তাদের উপর ওয়াজিব ছিল না।অনাবশ্যকীয় বিষয় আদায়ের জন্য এভাবে বাড়িতে থাকার কুরআনী বিধান লঙ্ঘণ করা কিভাবে গ্রহণযোগ্য হবে।
পাঠকদের জন্য কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
মহিলাদের ঈদের নামাজ কয় তাকবীর?
উত্তরঃ মহিলাদের ঈদের নামাজ ৬ তাকবীর। ছেলে মেয়ে সকলেরই ৬ তাকবিরে ২ রকাত নামাজ আদায় করতে হয়।
ছেলেরা কি বাড়িতে ঈদের নামাজ পড়তে পারবে?
উত্তরঃ যেহেতু ছেলেদের উপর ঈদের নামাজ ওয়াজিব করা হয়েছে এবং নবী (সাঃ) আদেশ দিয়েছেন জামায়াত বদ্ধ হয়ে পড়ার সেজন্যই ছেলেরা ঈদের নামাজ ঘরে বসে পড়তে পারবে না।
ঈদের নামাজ পড়তে না পারলে করণীয় কি?
উত্তরঃ ঈদের নামাজ পড়তে না পারলে পরবর্তী জামাতের তালাশ করতে হবে। আর কোন জামাত না পাওয়া গেলে, তাহলে ঈদের নামাজ পড়ার আর কোনো সুযোগ থাকে না।
ঈদের নামাজে না যাওয়া কি হারাম?
উত্তরঃ ঈদের নামাজে না যাওয়া হারাম না। তবে ছেলেদের উপর ঈদের নামাজ ওয়াজিব এবং মেয়েদের উপর সুন্নত। ছেলেদের জন্য ওয়াজিব হওয়ার কারনে ঈদের নামাজ পড়া বাধ্যতা মুলক এবং মেয়েদের জন্য বাধ্যতামুলক নয়।
ঈদুল ফিতর কত রাকাত?
উত্তরঃ ঈদুল ফিতর নামাজ ২ রাকাত নামজ
ঈদুল ফিতর কতদিন থাকবে?
উত্তরঃ ঈদুল ফিতরের প্রথম দিন মানুষ নতুন পোষাক পরে ঈদের নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে। তারপর তারা তিন দিন ধরে উদযাপন করতে থাকে।
ঈদুল ফিতরের দিন কখন খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ এক মাস রোজা রাখার পরেদিন ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। ঈদের দিন সকালে মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে নামাজ পড়তে যাওয়া সুন্নত।
ঈদের দিন রোজা রাখা যাবে কি?
উত্তরঃ না, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার দিন রোজা রাখা যাবে না।
আরো পড়ুনঃ মেসওয়াকের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস জেনে নিন
রমজানের পর কি আসে?
উত্তরঃ রমজানের পর ঈদুল ফিতর আসে। তারপরে ঈদুল আযহা আসে। মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব।
ঈদের দিন রোজা রাখা কি হারাম?
উত্তরঃ ঈদের দিনে রোজা রাখা প্রকৃতপক্ষে হারাম (নিষিদ্ধ) , যেমনটি নিম্নোক্ত হাদীসে বলা হয়েছে: তিনি [নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ঈদুল ফিতরের দিন রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন। আল-নাহর (কুরবানীর দিন, অর্থাৎ ঈদুল আযহা)।
ঈদের নামাজের ওয়াক্ত কখন শেষ হয়?
উত্তরঃ সূর্য তিন গজ পরিমাণ উপরে উঠা পর্যন্ত সময়টুকুকে তার উদয়কাল বলে গণ্য করা হয়। এ সময়ে কোন নামাজ পড়া জায়েয নেই। ঈদুল ফিতরের নামাজ অপেক্ষাকৃত বিলম্বে এবং ঈদুল আযহার নামাজ আগে আদায় করা উত্তম।
ঈদের নামাজ তাড়াতাড়ি আদায় করা কি?
উত্তরঃ ঈদের নামাজ তাড়াতাড়ি পড়া ওয়াজিব। ঈদের নামাজের আজান বা ইক্বমাত নেই। যাদের ওপর জুমার নামাজ ওয়াজিব তাদের উপর ঈদের নামাজ ও ওয়াজিব। ঈদের নামাজ জামাতে পড়া উত্তম।
ইসলামে ঈদ কি?
উত্তরঃ ঈদ মানে সমগ্য মুসলিম জাতির খুশির দিন এবং বরকত ময় ও রহমতের দিন। এবং এই দিনে ফিতরা ও যাকাত দেওয়ার দিন। কুরআনে বলা হয়েছে, “আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি ঈমান আন এবং আল্লাহ তোমাদেরকে যে সম্পদের উত্তরাধিকারী করেছেন তা থেকে দান কর।
লেখকের শেষ কথা
প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা আপনারা যে প্রশ্নের উত্তর খুজছিলেন আশা করি আমাদের এই আরির্টিকেলে পেয়ে গেছেন। এই আরর্টিকেলে মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত সম্পর্কে
যেভাবে আলোচনা করা হয়েছি তেমনি অন্যাণ্য কিওয়ার্ড গুলো নিয়ে সুন্দর ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা সকলেই বিষয় গুলো ভালো করে বুঝতে পেরেছেন। আমাদের এই আরর্টিকেলে কোথাও কোন ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকলে দয়া করে ক্ষমা করে দিবেন প্লিজ। কারন লেখতে লেখতে অনেক সময় ভুল হয়ে যায়।
আর আমাদের এই আরর্টিকেল টি পড়ে আপনাদের ভালো লেগে থাকলে পরিচিতদের কাছে সেয়ার করবেন কারন তারাও পড়ে উপকৃত হবে। আর ভালো ভালো ইসলামিক পোষ্ট পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইড ভিজিট করুন। ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ
msta2z.comব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url